Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

বেহাল রাস্তা, নেতা-মন্ত্রীর গ্রামে ক্ষোভ 

রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য শান্তিরাম মাহাতো গাড়াফুসড় গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামেই থাকেন পুরুলিয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ্মাবতী মাহাতোও।

চাষ সড়ক ছাড়িয়ে চিড়কা মোড়ের কাছে। (ডানদিকে)মন্ত্রীর গ্রাম গাড়াফুসড়য় ঢোকার মুখে। নিজস্ব চিত্র

চাষ সড়ক ছাড়িয়ে চিড়কা মোড়ের কাছে। (ডানদিকে)মন্ত্রীর গ্রাম গাড়াফুসড়য় ঢোকার মুখে। নিজস্ব চিত্র

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৪০
Share: Save:

এ রাস্তা মন্ত্রীর গ্রাম হয়ে গিয়েছে। গ্রামেই থাকেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও। কিন্তু এ রাস্তায় উঠে গিয়েছে পিচের প্রলেপ। বর্ষার পরে খানাখন্দে ভরা পুরো পথ। গর্ত বাড়তে বাড়তে কোথাও যেন ডোবা! এ দিকে, রাস্তাটি এড়িয়ে চলার উপায় নেই। পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাষমোড় থেকে গাড়াফুসড়, সিন্দরি হয়ে কংসাবতী নদীঘাটে যেতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন এলাকার প্রচুর মানুষজন।

রাজ্য মন্ত্রিসভার সদস্য শান্তিরাম মাহাতো গাড়াফুসড় গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামেই থাকেন পুরুলিয়া ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ্মাবতী মাহাতোও। স্থানীয় লোকজনের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, রাস্তার যে এমন হাল কি তাঁদের চোখে পড়ে না? শান্তিরামবাবু বলেন, ‘‘বর্ষার মরসুমে কাজে অসুবিধে হত। এ বার যাতে পুরো রাস্তাটি সংস্কার করা যায়, সেটা দেখা হবে।’’

পুরুলিয়া-রাঁচী সড়কের চাষমোড় এলাকার ব্যবসা বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এক পারে আড়শা। অন্য পারে পুরুলিয়া ১ ব্লক। মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে কংসাবতী নদী। নদী পার হয়ে আড়শার একাধিক গ্রামের মানুষজনকে ওই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চাষমোড়ে আসেন। আড়শার বামুনডিহা গ্রামের শিবু মাহাতো পুরুলিয়া শহরের কলেজে পড়েন। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের গ্রাম থেকে আহাড়রা মোড় হয়ে ঘুরপথে পুরুলিয়া শহরের দূরত্ব প্রায় ৪৮ কিলোমিটার। নদী পার হয়ে চাষমোড়ে গিয়ে বাস ধরলে খুব কম সময়েই শহরে পৌঁছনো যায়।’’ নদীর কাছেই তাঁদের গ্রাম। কিন্তু রাস্তার যা দশা, তাতে নদী পর্যন্ত যাওয়ার আগেই প্রায় সাত সমুদ্র পেরনোর ঝক্কি পোহাতে হয়। শিবু জানাচ্ছেন, সন্ধ্যার পরে অন্ধকারে প্রায়ই অনেকের সাইকেলের চাকা গর্তে পড়ে। টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান আরোহীও।

ওই গ্রামেরই বাসিন্দা দেবীলাল মাহাতোর কথায়, ‘‘চাষমোড় থেকে শহর ১৮ কিলোমিটার। তাই এই রাস্তায় যাতায়াত করলে সময়ও বাঁচে। শুধু আমাদের গ্রামই নয়, আশপাশের একাধিক গ্রামের বাসিন্দারাও জীবিকার তাগিদে নদী পার হয়ে এই রাস্তা ধরেন।’’ তাঁর অভিযোগ, অনেকদিন ধরেই রাস্তাটি সংস্কার হয়নি। তার উপরে বর্ষার পরে কিছু কিছু অংশে কাদা হয়ে এমনই অবস্থা হয়েছে, মোটরবাইকের চাকা পিছলে যায়। ছোটখাট দুর্ঘটনা ঘটছে হামেশাই। জুরাডি গ্রামের বাসিন্দা পেশায় দুধ বিক্রেতা সোনারাম গোপ বলেন, ‘‘সাইকেলে দুধ নিয়ে চলাচল করি। খুব সতর্ক হয়ে চালাতে হয়।’’ কাঁটাবেড়া গ্রামের বাসিন্দা মধুসূদন মাহাতোর দাবি, রাস্তাটির সংস্কারের জন্য তাঁরা প্রথমে গাড়াফুসড় গ্রাম পঞ্চায়েতে আবেদন করেছেন। পরে দ্বারস্থ হয়েছেন প্রশাসনের। কিন্তু কাজ হয়নি। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, রাস্তার যে অংশ এখনও পাকা হয়নি, বর্ষায় ট্রাক্টর চলাচল করে সেই অংশ আরও বিপজ্জনক হয়ে পড়ছে।

গাড়াফুসড় পঞ্চায়েতের প্রধান কবিতা মাহাতো বলেন, ‘‘রাস্তাটি আমাদের পঞ্চায়েত এলাকায় পড়ে। তবে গোটা রাস্তার সংস্কার তো একা পঞ্চায়েতের পক্ষে করা সম্ভব নয়। আমরা ব্লক প্রশাসনকে সমস্যার কথা জানিয়েছি। বর্ষার মরসুম শেষ হল। এ বার যাতে সংস্কারের কাজ শুরু হয় সেই দাবিও জানিয়েছি।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পদ্মাবতী মাহাতো বলেন, ‘‘রাস্তাটি বেহাল, এটা ঘটনা। তবে কিছু অংশে জমি নিয়ে সমস্যা রয়েছে। সংস্কারে উদ্যোগী হব।’’ বিডিও (পুরুলিয়া ১) দিব্যজ্যোতি দাস বলেন, ‘‘রাস্তাটি দেখে এসেছি। যে অংশ খুব খারাপ রয়েছে তা আপাতত পঞ্চায়েতকে মেরামত করতে বলা হবে।’’ সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করে পুরো রাস্তাটির সংস্কারের জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

Garafusra Shantiram Mahato Road
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy