Advertisement
১২ জানুয়ারি ২০২৫
R G Kar Hospital Incident

ক্ষুব্ধ জনতা পথে, লাভ কি বিরোধীদের

মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে সে ভাবে তৃণমূল ছিল না। তাতে শাসকদলের সঙ্গে আমজনতার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন ওঠে।

প্রতিবাদে পুরুলিয়ার জয়পুর কলেজের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

প্রতিবাদে পুরুলিয়ার জয়পুর কলেজের পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২৪ ০৯:৩০
Share: Save:

আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে আমজনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের ঝাঁজ ক্রমশ বাড়ছে। প্রতিদিন মিছিল করছে নতুন সংগঠন। পুরুলিয়া জেলাতেও চিকিৎসকদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশার মানুষ পথে নামছেন। রাজ্য সরকারের দুই জনপ্রিয়তম প্রকল্প কন্যাশ্রী বা লক্ষ্মীর ভান্ডারের উপভোক্তাদের একাংশও মহিলাদের নিরাপত্তার দাবিতে প্রশ্ন তুলছেন।

এতে কি শাসকদল দিশাহারা? এই সুযোগে মিছিলে মিশে বিরোধীরা কি সংগঠন গোছাচ্ছে? চর্চা রাজনৈতিক মহলে। যদিও পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা আদৌ দিশাহারা নয়। বরং দলের নিচুতলার কর্মীরা আমজনতার আন্দোলনে পা মেলাচ্ছেন।

মেয়েদের ‘রাত দখল’ কর্মসূচিতে সে ভাবে তৃণমূল ছিল না। তাতে শাসকদলের সঙ্গে আমজনতার কিছুটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে কি না, সে প্রশ্ন ওঠে। ‘ন্যায়ের দাবিতে’ তৃণমূলের আন্দোলনেও স্বতঃস্ফূর্ততা ‘চোখে পড়েনি’। তবে ‘জাস্টিস ফর আর জি কর’ স্লোগান তুলে নাগরিক প্রতিবাদ থেমে নেই। রোজই জেলার একাধিক জায়গায় মিছিল, জমায়েত হচ্ছে।

জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশ মানছেন, আর জি করের ঘটনার পরে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের তীব্রতা ও সেখান থেকে সরকারি প্রকল্পের বিরোধিতা করে স্লোগানে কিছুটা হলেও বিড়ম্বনায় নিচুতলার নেতা-কর্মীরা। কয়েকটি ব্লকের প্রথম সারির নেতাদের মতে, ‘‘আমজনতার আন্দোলন শেষ পর্যন্ত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে পাল্টা বক্তব্য কী হবে, তার স্পষ্ট রূপরেখা রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের দিচ্ছেন না।

শাককদলের নেতাদের দাবি, এই অবস্থায় স্বভাবতই ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিরোধী শিবির। তাঁরা জানাচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেই দিয়েছেন বিরোধীরা রাজ্য জুড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টায় নেমেছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, আমজনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনকে কোনওমতেই তারা রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জায়গায় নিয়ে যেতে চাইছে না।

সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের কথায়, ‘‘গণআন্দোলনে দলের কতটা লাভ হবে তা নিক্তিতে মাপার পক্ষপাতি নয় বামপন্থীরা। এই আন্দোলন রাজ্য, দেশ ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে পৌঁছেছে। জেলায় ধারাবাহিক প্রতিবাদগুলিকে আমরা সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গেই দেখছি।” তবে ভোট লুটের বিরুদ্ধে আমজনতা আগামী দিনে জেগে উঠতে পারে বলে আশাবাদী বামেদের একাংশ। বিজেপির রাজ্য নেতা বিদ্যাসাগর চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘আমজনতার স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনে আমাদের নৈতিক সমর্থন বরাবরই আছে। কিন্তু তাকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করার পক্ষপাতী আমরা নই। আর জি করের ঘটনা সম্পূর্ণ রাজ্য সরকারের চূড়ান্ত প্রশাসনিক ব্যর্থতা, সেটা আমরা আলাদা দলীয় আন্দোলনে তুলে ধরছি।”

তৃণমূলের পুরুলিয়া জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়াও বলেন, ‘‘যে আন্দোলন হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক। বিরোধীদের ডাকা আন্দোলনে আমজনতা শামিল হচ্ছেন, এমনটা নয়। একটা নৃশংস ঘটনার বিরুদ্ধে ন্যায় চেয়ে রাস্তায় নেমেছেন সাধারণ মানুষ। আমাদের লোকজনও তাতে শামিল হচ্ছেন। আমজনতার আন্দোলন থেকে তৃণমূল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে, তেমনটা কিন্তু নয়।’’

তৃণমূলের একাংশের আবার মত, ঘটনার তদন্তভার এখন সিবিআই-এর হাতে। তাই দ্রুত অপরাধীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আন্দোলন আখেরে চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপরই।

অন্য বিষয়গুলি:

purulia sp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy