স্কুলকে টাকা তুলে দিচ্ছেন রেখাদেবীর পরিবার। নিজস্ব চিত্র।
যে স্কুল ছিল তাঁর ধ্যান জ্ঞান, সেই স্কুলের পড়ুয়াদের জন্য কিছু করা গেলেই হয়ত শিক্ষিকার প্রতি সঠিক সম্মান জানানো হবে।
শুধুমাত্র এই ভাবনা থেকে সিউড়ি ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা রেখা দত্ত (দাস)-এর মৃত্যুর পর তাঁর অবসরকালীন প্রাপ্তি থেকে সাত লক্ষ টাকা স্কুলকে দান করলেন তাঁর পরিজনেরা। শনিবার সিউড়ি কালীগতি নারী শিক্ষানিকেতেনের ঘটনা। আত্মীয়দের ইচ্ছে, ছাত্রীদের পঠনপাঠনে কম্পিউটারের ব্যবহার ও খেলার উন্নতিকল্পে ওই অর্থ ব্যয় করুক স্কুল।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, সিউড়ির ওই স্কুলে দীর্ঘদিন কর্মরত ছিলেন রেখাদেবী। কলকাতার একটি স্কুলে কর্মরত অবস্থায় বিয়ে হয়ে সিউড়ি এসেছিলেন ১৯৮১ সালে। যাঁর সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তিনিও পেশায় শিক্ষক অর্ধেন্দু দাস। সহ-শিক্ষিকার পদে ১৯৮৫ সালে যোগ দেন সিউড়ির ওই স্কুলে। ২০০১ হন প্রধান শিক্ষিকা। ২০০৫ সালের অগস্ট মাসে অবসর নিলেও প্রাত্যহিক জীবনে ছেদ টানতে চাননি তিনি। স্কুলই ছিল তাঁর জীবন। ‘‘নিয়মিত স্কুলে আসা, ছাত্রীদের পাঠদান, পরীক্ষার খাতা দেখা, সহকর্মীদের পাশে দাঁড়ানো, রেখাদি সবই করতেন হাসিমুখে।’’ বলছিলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিক মালবিকা দত্ত। শনিবার প্রয়াত ওই শিক্ষিকার সম্মানে একটি স্মরণসভা আয়োজিত হয়েছিল তাঁর স্কুলে। সেখানেই মালবিকা দত্তের হাতে চেক তুলে দেন রেখাদেবীর জা চিত্রা দাস।
প্রয়াত রেখাদেবীর ভাসুরপো গৌতম দাস বলেন, ‘‘কাকু-কাকিমা অসম্ভব শিক্ষানুরাগী ছিলেন। কাকু আগেই মারা গিয়েছেন। কাকিমা মারা যান এ বছর জানুয়ারিতে। ওঁরা নিঃসন্তান ছিলেন। আমরা মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিই, ওঁদের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য পুড়ুয়াদের ভাল হয় এমন কাজ করা উচিত।’’
স্মরণসভায় এসেছিলেন স্কুলের অন্য শিক্ষিকারা, ছাত্রীরা। ছিলেন প্রয়াত শিক্ষিকার ভাসুরপো শুভঙ্কর দাস, প্রবীর দাস, ভাই বাসুদেব দত্তরাও। প্রত্যেকেই বলছেন, তাঁরা এ কাজ করতে পেরে খুশি। খুশি স্কুলও। স্কুল পরিচালন সমিতির সম্পাদক দেবাশিস পাল বলছেন, ‘‘ওঁকে কর্মজীবনে পাইনি কিন্তু অবসর নেওয়ার পর যেভাবে উনি স্কুলে আসতেন সেটা আমাকে মুগ্ধ করছে। ওঁর পরিবারের তরফে দেওয়া অর্থ অবশ্যই ছাত্রীদের কাজে আসবে।’’ টিআইসি মালবিকাদেবী বলছেন, ‘‘চেষ্টা করব ওঁর দেওয়া টাকা যেন যথাযথভাবে কাজে লাগাতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy