‘নির্মল বাংলা প্রকল্প’-এ শৌচাগার গড়ার উদ্যোগ শুধু গ্রামীণ এলাকায় সীমাবদ্ধ নয়। এ বার ওই একই প্রকল্পে জেলার ছ’টি পুর এলাকাতেও বাড়ি বাড়ি শৌচাগার গড়তে উদ্যোগী হল বীরভূম প্রশাসন। সৌজন্যে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর।
কোন কোন বাড়িতে শৌচাগার নেই— এলাকার বাড়ি বাড়ি ঘুরে, সমীক্ষা করে, তার তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ মাসখানেক আগে জেলার সব ক’টি পুরসভাকে দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। সমীক্ষা শেষ। তালিকাও প্রস্তুত। এ বার কাজে নামার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে পুরসভাগুলিকে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, সিউড়ি পুরসভায় এ ব্যাপারে বৈঠক হয়েছে ২৪ তারিখ। আগামী সোমবার দুবরাজপুর পুরসভার সঙ্গে বৈঠকে থাকেবেন মহকুমাশাসক (সিউড়ি) কৌশিক সিংহ। বাকি চারটি পুরসভা বৈঠক হয়েছে, কিংবা হবে। মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার বুদ্ধদেব পান বলেন, ‘‘প্রাথমিক যে তালিকা প্রস্তুত হয়েছে, তাতে ছ’টি পুর এলাকায় ২০ হাজারের মতো শৌচাগার তৈরি হওয়ার কথা।’’
‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’এর বাংলা সংস্করণ মিশন নির্মল বাংলা প্রকল্পে কাজের নিরিখে বেশ এগিয়ে বীরভূম প্রশাসন। জেলার ১৬৭টি পঞ্চায়েত এলাকার মধ্যে ইতিমধ্যেই নির্মল ঘোষিত ১৪০টি গ্রাম পঞ্চায়েত। জোরকদমে কাজ চলছে বাকি পঞ্চায়েতেও। মাসকয়েকের মধ্যেই জেলা নির্মল হওয়ার পথে। কিন্তু, কাঁটার মতো বিঁধেছিল পুর এলাকায় বহু বাড়িতে শৌচাগার না থাকা।
‘শহরেই বহু বাড়িতে শৌচাগার নেই। তা হলে আর কীসের নির্মল জেলা’—এমন কথা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বহুবার শুনতে হয়েছে। একই প্রকল্পে পুর এলাকাতেও শৌচাগার হবে, শেষ পর্যন্ত পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর এ বিষয়ে সবুজ সঙ্কেত দিতেই পুরসভাগুলিতে তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে বীরভূমের পুরসভাগুলিই নয়। এর আগে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা এলাকায় প্রতি বাড়িতে শৌচাগার তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এক বছর আগেই সেই মতো পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর থেকে নির্দেশ যায় পুরসভাগুলিতে। সেই উদ্যোগের পর নদিয়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, কোচবিহার এবং মুর্শিদাবাদ জেলার ৭৬টি পুরসভাকে মুক্ত শৌচবিহীন পুরসভা বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ বার বাকি ৪৯টি পুরসভাকে মুক্ত শৌচবিহীন করতে উদ্যোগী হয়েছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। সেই তালিকায় রয়েছে এই জেলাও। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শৌচালয় পিছু ব্যয় প্রায় ১০ হাজার টাকা। উপভোক্তা পিছু নগরোন্নয়ন দফতর দেবে ৭৯৯০ টাকা, পুরসভা দেবে ২০০০ টাকা এবং উপভোক্তা নিজে দেবে ১০০০ টাকা।
সিউড়ির পুরপ্রধান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সিউড়ি পুর এলাকার ২৩২৮টি বাড়িতে শৌচাগার নেই। সমীক্ষা থেকেই তা জানা গিয়েছে। পনেরো দিনের মধ্যে কাজে হাত পড়বে।’’ দুবরাজপুরের পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে বলছেন, ‘‘দুবরাজপুরে ১২০০০ পরিবারের মধ্যে ৩০ শতাংশের বাড়িতে শৌচাগার নেই। সে দিক থেকে দেখতে গেলে এই প্রকল্প বেশ ভাল। কী ভাবে এগোতে হবে সোমবারই জানতে পারব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy