Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
West Bengal Development

নতুন পর্যটনকেন্দ্রের ভাবনা

সম্প্রতি মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুশান্তকুমার ভক্ত, বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো, বিডিও (ঝালদা ২) উজ্জ্বলকুমার বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শনে যান।

মুকুটমণিপুর সংলগ্ন খাতড়ার পোড়া পাহাড়ের বাড়তি আকর্ষণ গুহা। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়

মুকুটমণিপুর সংলগ্ন খাতড়ার পোড়া পাহাড়ের বাড়তি আকর্ষণ গুহা। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝালদা শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:১২
Share: Save:

কয়েক বছর আগেও যেখানে সাধারণ মানুষ পা ফেলতে ভয় পেতেন, কোটশিলা থানার সেই জাবর পাহাড়ে এ বার পর্যটকদের টেনে আনার ভাবনা নিয়েছে প্রশাসন। এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকে প্রকৃতিপ্রেমীদের সামনে তুলে ধরতে পর্যটন উন্নয়নের পরিকল্পনা করছে প্রশাসন। সম্প্রতি মহকুমাশাসক (ঝালদা) সুশান্তকুমার ভক্ত, বিধায়ক শক্তিপদ মাহাতো, বিডিও (ঝালদা ২) উজ্জ্বলকুমার বিশ্বাস-সহ প্রশাসনের কয়েকজন আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকা পরিদর্শনে যান।

ঝাড়খণ্ড সীমানা ঘেঁষা ঝালদা ২ ব্লকের মাঝিডি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রত্যন্ত ওই এলাকার রূপ নয়নাভিরাম। দূরে সারি দিয়ে রয়েছে ধূসর পাহাড়। চারদিকে ঘন সবুজ শাল, পিয়াল আর মহুলের জঙ্গল। মেঘ-রোদের আলোর খেলায় মোহ তৈরি হয়। বাসিন্দাদের দাবি, এই জঙ্গল হাতি থেকে হরিণ, নেকড়ে থেকে ময়ূরের মতো বন্যপ্রাণীদের অবাধ বিচরণ ভূমি। দূরে পাহাড়ের গা থেকে নেমে এসেছে কংসাবতী নদী।

এই দুর্গম এলাকায় একসময়ে মাওবাদীদের আনাগোনা ছিল। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেই সময় তাঁরা ওই এলাকা এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতেন। তবে, এখন পরিস্থিতি পাল্টেছে। বাসিন্দাদের দাবি, ‘‘বনপার্টির লোকজনেরা আর আসেন না। এলাকার পরিস্থিতিও শান্ত। পুরুলিয়ার পর্যটন মানচিত্রে জাবর পাহাড় ঠাঁই পেলে পর্যটকদের হাত ধরে এখানকার অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হবে।’’

জাবর গ্রামের রামধন টুডু, জ্যোতিলাল হেমব্রম ও সিমনি গ্রামের নন্দলাল মুর্মুর মতো আদিবাসী কৃষিজীবী মানুষজনের বক্তব্য, ‘‘কংসাবতী নদীর জল বেঁধে একটি জলাধার তৈরি করা গেলে, এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বহুগুণে বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে ওই জলাধারকে ঘিরে এলাকার চাষবাসেরও উন্নতি হবে বলে। চাষের জন্য জলের সমস্যা ঘুচবে।’’ দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী এই দাবি প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু, এতদিন তাতে লাভ হয়নি।

তবে, সেই ব্যাপারে এ বার ভাবনা-চিন্তা শুরু করেছে প্রশাসন। ঝালদা মহকুমা প্রশাসনের একটি সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, শুধু পর্যটনস্থল হিসাবে গড়ে তোলাই নয়, আগে ওই এলাকায় একটি বড় জলাধার তৈরির পরিকল্পনা তাঁদের মাথায় রয়েছে। সম্প্রতি প্রশাসনের আধিকারিক ও জনপ্রতিনিধিদের তাঁদের এলাকায় যেতে দেখে উচ্ছ্বসিত বাসিন্দারা।

তবে, জঙ্গল ঘেরা ওই পাহাড়ি এলাকার পর্যটন সম্ভাবনা কতটা রয়েছে, এ ব্যাপারে কোনও বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দিয়ে আগে সমীক্ষার কাজ সেরে ফেলতে চাইছে মহকুমা প্রশাসন। তারপর পা ফেলতে চাইছে তারা। প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, সমীক্ষার পরেই তাঁরা বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে চাইছেন তারা। তবে, সব কিছুই নির্ভর করছে বিশেষজ্ঞ এজেন্সির সমীক্ষা রিপোর্টের উপর।

মহকুমাশাসক (ঝালদা) বলেন, ‘‘আমরা প্রাথমিক ভাবে এলাকাটি ঘুরে এসেছি। আমাদের মনে হয়েছে, ওই এলাকায় পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনা যথেষ্টই রয়েছে। তবে, আপাতত বাসিন্দাদের দাবি মতো একটা জলাধার ওই এলাকায় কী ভাবে নির্মাণ করা যায়, সে ব্যাপারে চিন্তাভাবনা আমরা শুরু করে দিয়েছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Hills Travel West Bengal Development
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE