উদ্বোধনের আগে। —নিজস্ব চিত্র
এত দিন হাসপাতাল চলছিল গাছের তলায়। কখনও আবার মোবাইল ভ্যানে দেওয়া হচ্ছিল পরিষেবা। এ বার মিলল স্থায়ী ছাদ। কিছুটা অনুদান আর বাকিটা শ্রমজীবী পরিবারের থেকে চাঁদা তুলে কোপাই এলাকার চাঁদপুরে তৈরি হয়েছে শ্রমজীবী হাসপাতালের একতলা ভবন। রবিবার ছিল তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন। সেখানে পরিষেবা পাওয়ার কথা প্রায় হাজার পঞ্চাশেক মানুষের। উদ্বোধনের পরে কৃষিমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু জানান, স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গেই জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকাজ, ফল চাষ, পশুপালনে সহায়তা করা হবে।
উদ্যোগটা শুরু ২০১৫ সালের শেষ দিকে। হাসপাতালের সমর্থনে হয়েছিল মিছিল। ১৫ নভেম্বরের ওই মিছিলে ছিল প্ল্যাকার্ড। লেখা ছিল— ‘আমরা পারি/ আমরা গড়ি’, কেউ লিখেছিলেন ‘মাটি কোপাতে, কোপাই চল’। ডাক বাতাসে মিলিয়ে যায়নি। অনেকেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন কোদাল, বেলচা, ফাওড়া। শয়ে শয়ে পুরুষ, মহিলা এমনকি পড়ুয়ারা হাজির হয়েছিল চাঁদপুরে। কেউ এসেছিলেন কলকাতা থেকে কেউ শহরতলি হতে। শ্রমজীবী হাসপাতাল গড়ার তাগিদ মিলিয়ে দিয়েছিল তাঁদের।
এখানেই প্রথম নয়। বেলুড়, শ্রীরামপুর, সরবেরিয়ায় এমন হাসপাতাল গড়ে উঠেছে আগেই। সাফল্যের সঙ্গে সে সব চলছে দেখে এবং এলাকার মানুষের প্রয়োজনীয়তা থেকে চাঁদপুর মাঠে হাসপাতাল গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। তার বছরখানেকের মধ্যেই তৈরি হয়ে গেল হাসপাতাল ভবন। এ দিনের অনুষ্ঠানে আসা অনেককে তাই বলতে শোনা গেল, ‘‘সদিচ্ছা থাকলে কি না হয়।’’
স্থানীয় সূত্রের খবর, এই হাসপাতাল চালু হওয়ায় চাঁদপুর, সোলেমানপুর-সহ আশেপাশের ২৭টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি কিছু মানুষের কাছে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যাবে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে ফণিভূষণ ভট্টাচার্য, কিশোর ভট্টাচার্যেরা জানান, এলাকায় একটি পরিপূর্ণ হাসপাতাল গড়ে তোলাই ছিল লক্ষ্য। এ দিন ওই অনুষ্ঠানে হাসপাতাল গড়ে তোলার জন্যে অনুদান হিসেবে ২ লক্ষ ৫০ হাজার পেয়েছেন উদ্যোক্তারা। উদ্যোক্তাদের ব্যক্তিগত ভাবে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানান মন্ত্রী পূর্ণেন্দুবাবু।
এ দিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী হাসপাতালের পাশের রাস্তা পাকা করে কোপাই সড়কের সঙ্গে যুক্ত করার আশ্বাস দেন। পেশায় আইনজীবী, সিউড়ির বাসিন্দা স্বপন রুজের দেওয়া জমিতে গড়ে ওঠা এক তলার এই হাসপাতালের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ছিলেন দুবরাজপুরের বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউড়ি, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সোমনাথ সাধু, চিকিৎসক সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়, বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের চিকিৎসক অনিল সাহা প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy