ভার্চুয়াল মাধ্যমে ডিভিসির রঘুনাথপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অডিটোরিয়ামে। ছবি: সঙ্গীত নাগ
বিদ্যুৎ উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গকে স্বনির্ভর করাই কেন্দ্রীয় সরকারের লক্ষ্য। তাতে ডিভিসির রঘুনাথপুরে ডিভিসির তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের (আরটিপিএস) দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস বড় পদক্ষেপ। শনিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে আরটিপিএস-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস করে এমনটাই দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
মোদী বলেন, ‘‘উন্নয়নে বিদ্যুতের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে পশ্চিমবঙ্গ আত্মনির্ভর হয়ে উঠুক। ডিভিসির রঘুনাথপুর থার্মাল পাওয়ার স্টেশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস সেই লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ। এই প্রকল্পে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হয়েছে।” তাঁর সংযোজন, ‘‘এই প্রকল্প শুধু রাজ্যের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে সহায়ক হবে তাই নয়, আশপাশের এলাকার আর্থিক বিকাশও ঘটাবে।”
এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে প্রধানমন্ত্রী যখন আরটিপিএস-এর ওই প্রকল্পের শিলান্যাস করছেন, তখন তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে উপস্থিত ছিলেন পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোর্তিময় সিং মাহাতো, রঘুনাথপুর ও পাড়ার বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউরি, নদীয়রাাচাঁদ বাউরি প্রমুখ। ছিলেন ডিভিসির পদস্থ আধিকারিকেরা।
তবে রঘুনাথপুর দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর রাস্তাটা খুব একটা মসৃন ছিল না। ডিভিসি সূত্রের খবর, এক সময়ে আরটিপিএসকে অন্য সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছিল ডিভিসি। প্রকল্প অধিকর্তা চৈতন্যপ্রকাশ জানাচ্ছেন, ২০০৮ সালে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাণ শুরু হয়। লক্ষ্য ছিল ২০১২ সালের মধ্যে উৎপাদন শুরু করা হবে। কিন্তু তা শুরু হতে আরও চার বছর বাড়তি সময় লেগেছে।
তিনি বলেন, ‘‘লক্ষ্যমাত্রার থেকে আরও চার বছর বাড়তি সময় লাগায় ডিভিসির ক্ষতি হয় প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। ফলে লোকসানে চলা এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে অন্য সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছিল সংস্থার অন্দরে।”
তবে বর্তমানে বাধা বিপত্তি কাটিয়ে দু’টি ইউনিট থেকেই পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ উৎপাদন চলছে। লোকসানের খরা কাটিয়ে আরটিপিএস থেকে লাভ করছে ডিভিসি। সূত্রের খবর, সেই প্রেক্ষিতেই আরটিপিএস-এ দ্বিতীয় পর্যায় শুরুর জন্য সবুজ সঙ্কেত দেয় কেন্দ্রের বিদ্যুৎ মন্ত্রক। প্রকল্প অধিকর্তা জানাচ্ছেন, ২৬ ফেব্রুয়ারি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেয়। তার কয়েক দিনের মধ্যেই শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী।
আরটিপিএস-এর মধ্যে পড়ে থাকা জমিতেই দেড়শো একর জমিতে তৈরি হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের অত্যন্ত আধুনিক প্রযুক্তির দু’টি ‘সুপার ক্রিটিক্যাল ইউনিট’। তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে অতীতের পুনরাবৃত্তি যাতে কোনও ভাবেই না হয়, সেটাই চাইছেন ডিভিসি কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্প অধিকর্তার দাবি, ‘‘প্রথম পর্যায় তৈরির সময়ে স্থানীয় স্তরে প্রচুর বাধা এসেছিল।তাই নির্মাণ কাজে দেরি হয়েছে। আমাদের অনুরোধ, প্রতিটি রাজনৈতিক দল দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণকাজে সাহয্যের হাত বাড়িয়ে দিক। যাতে লক্ষ্যমাত্রার মধ্যেই দ্বিতীয় পর্যায় থেকে উৎপাদন শুরু করা যায়।”
এ দিন অনুষ্ঠানেও একই কথা বলেন পাড়ার বিজেপির বিধায়ক নদীয়ারচাঁদ। তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক রং দেখা উচিত নয়। আশা করব সমস্ত রাজনৈতিক দলই দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণ কাজে ডিভিসিকে সাহায্য করবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া দাবি করেন, ‘‘রাজ্যে পালাবদলের পরেই আরটিপিএস-এর প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ কাজ গতি পায়। শিল্পায়নের মাধ্যমে রঘুনাথপুরের ভোল বদলানোর প্রয়াস শুরু করছেন মুখ্যমন্ত্রীই। প্রচুর বিনিয়োগ আসছে। শিল্পবান্ধব পরিস্থিতি রঘুনাথপুরে আছে বলেই এখানে দ্বিতীয় পর্যায়ে বিনিয়োগ করেছে ডিভিসি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy