সিউড়ির কাছে এমনই অবস্থা বীরভূমের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের। —নিজস্ব চিত্র
ফের চর্চায় বীরভূমের ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। এ বার সেই জাতীয় সড়কের প্রসঙ্গ উঠল লোকসভায়। ওই জাতীয় সড়ক নিয়ে জেলার মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরলেন বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়।
বেহাল জাতীয় সড়ক এবং তার উপরে থাকা সেতুগুলি বীরভূমের মানুষের মাথাব্যথার মস্ত কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বুধবার লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই রাস্তা ও দুর্বল সেতু নিয়েই সরব হন শতাব্দী। নিজের বক্তব্য পেশ করেন বাংলায়। এ দিন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে সম্মান জানিয়ে শতাব্দী বলেন, ‘‘আমার লোকসভা এলাকায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের অবস্থা ভীষণ, ভীষণ, ভীষণ খারাপ। বাস চলাচল করতে পারছে না। সিউড়ি-রামপুরহাট বাস ঘুরে যাচ্ছে কীর্ণাহার বোলপুর হয়ে। মানুষের সমস্যা হচ্ছে। দুর্ঘটনা বেড়েছে। আমি চাই, রাস্তা দ্রুত ঠিক করা হোক।’’ শতাব্দীর প্রশ্ন, ‘‘যখনতখন মানুষের মৃত্যু যাতে না ঘটে, তার জন্য এক দিকে মন্ত্রী বলছেন হেলমেট লাগান, সিট বেল্ট বাঁধুন। অন্যথা হলে চালক-আরোহীকে জরিমানা দিতে হচ্ছে। রাস্তা খারাপের জন্য দুর্ঘটনার মৃত্যু হলে তার দায় কে নেবে?’’
গত মাসে ওই জাতীয় সড়ক ধরেই সস্ত্রীক ফরাক্কার একটি কলেজের অনুষ্ঠানে যোগ যাওয়ার পথে সিউড়িতে থেমে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় দাবি করেছিলেন, জাতীয় সড়ক ঠিকই আছে। বাস্তবে কিন্তু তার ঠিক উল্টোটা। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের দুবরাজপুরের পর থেকে সিউড়ি, মহম্মদবাজার, রামপুরহাট, নলহাটি হয়ে বীরভূম ঘেঁষা মুর্শিদাবাদের মোরগ্রাম—এই প্রায় ১০০ কিমি রাস্তার হাল শোচনীয়। অসংখ্য খানাখন্দে ভরা এই রাস্তা। কোথাও আবার কিলোমিটার জুড়ে পিচের অস্তিত্বই নেই। ধুলো উড়ে মরণফাঁদ তৈরি হচ্ছে। নিত্যযাত্রীরা ভয়ে থাকেন, ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছবেন তো! বেহাল রাস্তায় প্রতি দিনই একাধিক লরি বা ভারী যান খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। যার পরিণতি— যানজট আর পথ দুর্ঘটনা।
মানুষের সেই যন্ত্রণার ছবিটাই বুধবার লোকসভায় তুলে ধরতে চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন শতাব্দী। এখানেই না থেমে ওই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত জাতীয় সড়কে থাকা দুবারজপুর থেকে নলহাটি পর্যন্ত সমস্ত দুর্বল সেতুও সংস্কারের দাবিও তোলেন বীরভূমের তিন বারের সাংসদ। এত দিন ইংরেজি বা হিন্দিতেই নিজের বক্তব্য পেশ করেছেন শতাব্দী। এ বার তা করেছেন বাংলায়।
সন্ধ্যাবেলায় এই নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শতাব্দী দিল্লি থেকে ফোনে বলেন, ‘‘আমি যখন ২০০৯ সালে লোকসভা ভোটে লড়েছিলাম, তখন খুব খারাপ ছিল রাস্তার হাল। ’১৪ সালে অবশ্য রাস্তা ভাল ছিল। কিন্তু, এখন আবার ভয়ঙ্কর খারাপ হয়ে গিয়েছে জাতীয় সড়ক। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে একাধিক বার আর্জি জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিচ্ছু হচ্ছে না দেখে লোকসভায় বিষয়টি তুলতে হল।’’ হঠাৎ কেন বাংলায় বললেন? শতাব্দীর জবাব, ‘‘আমার সংসদীয় এলাকার মানুষ যাতে বোঝেন, তাঁদেরই অসুবিধার কথা সংসদে তুলে ধরা হচ্ছে—সেটা মাথায় রেখেই বাংলায় বলেছি।’’
জাতীয় সড়কের অবস্থা নিয়ে বীরভূমের বাসিন্দারা তিতিবিরক্ত। দিন কয়েক ধরে ওই অবশ্য জাতীয় সড়কে তাপ্পি দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এটুকুই আপাতত সান্ত্বনা জেলার মানুষের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy