আঘরপুরে মহিলাদের সঙ্গে কথা বলছেন সেলিম। ছবি: সুজিত মাহাতো
পুরুলিয়ার জয়পুর ব্লকের আঘরপুরে শিল্পতালুক তৈরির নামে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পুলিশকে দিয়ে বেআইনি কাজ করানোর অভিযোগ তুললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি আঘরপুরে গিয়ে সদ্য জেল থেকে জামিনে মুক্ত মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে সেলিম অভিযোগ করেন, ‘‘ধৃত মহিলাদের থানার লকআপে মারধর করা হয়েছে। তাই পুলিশের বিরুদ্ধে আমরা মামলা করব।’’
তার আগে বিকেলে পুরুলিয়ার ট্যাক্সিস্ট্যান্ডের সভায় সেলিম অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলের নির্দেশে দলদাস পুলিশ ওই গ্রামের ১৩ জন মহিলা ও পুরুষকে বিনা দোষে গ্রেফতার করেছে।”
যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, পুলিশের উপরে হামলার অভিযোগে নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করে ১৩ জন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়। থানার লকআপে তাঁদের মারধরের অভিযোগ তিনি মানেননি।
সন্ধ্যায় দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়, কেন্দ্রীয় নেতা অমিয় পাত্র, সুদীপ সেনগুপ্ত প্রমুখকে নিয়ে সেলিম আঘরপুরে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া মহিলাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে মহিলারা অভিযোগ করেন, থানার লকআপে তাঁদের উপরে অত্যাচার করেছে পুলিশ।এক মহিলা জানান, প্রতিবাদে জেলে তিনি দু’দিন অনশন করেন। ফলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দলগত ভাবে তাঁদের আন্দোলনে পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন সেলিম।
পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘জমি সরকারের নিজস্ব হলেও তার উপরেই রাস্তা, শ্মশান, ডুংরি আছে। পবিত্র স্থান আছে। যাঁর সঙ্গে বাসিন্দাদের ভাবাবেগ জড়িত। সেই জমি সরকার এ ভাবে নিতে পারে না।” তাঁর আরও দাবি, ওই জমিতে কী শিল্প হবে, কত টাকা বরাদ্দ, কোন দফতর কাজ করছে, সেই সম্পর্কিত কোনও লিখিত বোর্ড নেই। এই জমি সরকার নিচ্ছে, না কি কোনও বেসরকারি সংস্থা, না কোনও সিন্ডিকেট নিচ্ছে, সেটাই কেউ বুঝতে পারছে না।
সেলিমের দাবি, ‘‘জমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী সীমানা প্রাচীর দেওয়ার আগে পঞ্চায়েতের অনুমতি নিতে হয়। জনশুনানি করে বাসিন্দাদের প্রকল্প সম্পর্কে বিশদে জানিয়ে তাঁদের মতামত নিতে হবে। এটাই নিয়ম।’’
যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার দাবি, ‘‘রঘুনাথপুরের মতোই আঘরপুরে শিল্পতালুক তৈরি হচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের জানা নেই, সেখানে পাঁচ একর খাস জমি বাসিন্দাদের ব্যবহার করতে ছেড়ে রাখা হয়েছে। জনশুনানির মতোই বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসন প্রকল্প সম্পর্কে বিশদে জানিয়েছে।’’
পুরুলিয়ায় দলের সভায় সেলিম অভিযোগ করেন, কয়লা পাচার থেকে শুরু করে শিক্ষা, রেশন দুর্নীতি সব মিলিয়ে সাড়ে বারো বছরে রাজ্যে দুর্নীতি-তন্ত্র তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। একশো দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্যের বরাদ্দ আটকে দেওয়া প্রসঙ্গে বিজেপি ও তৃণমূল দু’পক্ষকেই তিনি দায়ী করেছেন।
সেলিমের দাবি, ‘‘বাম আমলে রাজ্যে যা কলকারখানা হয়েছিল, শিল্পায়ন এখনও সেখানেই থমকে আছে।” তবে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া আঘরপুরের প্রসঙ্গ টেনে দাবি করেন, ‘‘পুরুলিয়া জেলায় শিল্প-বান্ধব পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক স্বার্থে তাতে বাধা সৃষ্টি করছে সিপিএম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy