আবর্জনায় ঘোলাটে জল হয়ে গিয়েছে। রামপুরহাটে। নিজস্ব চিত্র
দশমী, দ্বাদশী ও ত্রয়োদশী এই তিনদিন প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব মিটলেও রামপুরহাট শহরে এখনও নিরঞ্জন ঘাট থেকে প্রতিমার কাঠামোগুলি তোলা হয়নি। এতে নিরঞ্জনের সাত দিন পরেও নিরঞ্জন ঘাটগুলি খড়, সুতলি, বাঁশ এ স্তুপীকৃত জঞ্জালে পরিণত হয়েছে। প্রতিমার রঙ, মাটি পুকুরের জলে মিশছে। পচন ধরছে খড়, সুতলি, বাঁশে। জলে ভাসছে শোলা, থার্মোকল, নানা সরঞ্জাম। রামপুরহাট পুরসভার পুরপ্রধান অশ্বিনী তিওয়ারি বলেন, ‘‘লক্ষ্মীপুজো পর্যন্ত লেবার পাওয়া যাচ্ছে না। এর ফলে পুকুরঘাট থেকে কাঠামো তোলা যাচ্ছে না। রবিবার থেকে পুকুর ঘাটগুলি পরিস্কার করা হবে।’’
রামপুরহাট শহর পুজো সমন্বয় কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরে রামপুরহাট পুর এলাকায় পারিবারিক ও সর্বজনীন পুজো মিলিয়ে ৬৮টি দুর্গাপুজা হয়েছিল। শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকায় ৫টি সর্বজনীন পুজো ধরে মোট রামপুরহাট ৭৩টি পুজো সমন্বয় কমিটির আওতাধীন ছিল। তাঁদের মধ্যে দশমীর দিন পারিবারিক পুজো এবং কয়েকটি সর্বজনীন পুজোর বিসর্জন হয়েছে। বাকিগুলি বিসর্জন হয়েছে দ্বাদশী এবং ত্রয়োদশীর দিন। রামপুরহাট শহরে বেশির ভাগ বিসর্জন যে পুকুরগুলিতে হয় তার মধ্যে গাঁধী পুকুর, তাঁতপুকুর, হরিসভা পুকুর— এই তিনটি পুকুরে হয়ে থাকে। শনিবার রামপুরহাট শহরের প্রতিমা নিরঞ্জনের সেই ঘাটগুলি ঘুরে দেখা গেল। তিনটি পুকুরেই প্রতিমা নিরঞ্জনের কাঠামো সমেত খড় পচছে।
অথচ রামপুরহাট পুরসভা এই সমস্ত পুকুরগুলিকে গ্রিন সিটি প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করার উদ্যোগ নিয়েছে। যার জন্য পুরসভা থেকে ৬ কোটি টাকা বরাদ্দ ধরা হয়েছে। ইতিমধ্যে ওই প্রকল্পে পুজোর আগেই গাঁধী পুকুরের জল শুকিয়ে মাটি তোলা এবং পুকুর পাড় বাঁধানোর কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার গাঁধী পুকুরের দক্ষিন পূর্ব কোণের ঘাট এবং পূর্ব প্রান্তের ঘাট ঘুরে দেখা গেল পুকুরের জলে ভাসছে সাত আটটি কাঠামো এবং খড় সহ অন্যান্য সরঞ্জাম। তাঁত পুকুর ঘুরে দেখা গেল সেখানে বাঁধানো ঘাট এবং আশপাশে প্রতিমা নিরঞ্জনের কাঠামো-সহ খড় ডাঁই হয়ে আছে। সেই সঙ্গে রয়েছে কচুরি পানা। এলাকার বাসিন্দারা জানালেন, পুকুরের জল তারা গৃহস্থালি কাজে ব্যবহার করতেন। কিন্তু প্রতিমা নিরঞ্জনের পর তাঁরা আর ঘাটে নামতে পারছেন না।
হরিসভাপুকুরে অবস্থাটা আরো খারাপ সেখানে পুকুরের মধ্যে চারপাশেই ভাসছে প্রতিমার কাঠামো। জলে পচছে খড় এবং প্রতিমার অন্যান্য সামগ্রী। অন্যদিকে রামপুরহাট ডাক্তারপাড়ার দুটি পুকুরে দেখা গেল সেখানে প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে পুকুর থেকে প্রতিমার কাঠামো তোলা হলেও পুকুর পাড়ে স্তুপীকৃত হয়ে আছে খড় এবং অন্যান্য সামগ্রী।
রামপুরহাট মুরারী দত্ত পারিবারিক পুজো কমিটি অন্যতম উদ্যোক্তা তথা রামপুরহাট শহর পুজা সমণ্বয় কমিটির সহ সভাপতি চন্দ্রনাথ দত্ত বলেন, ‘‘প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী ৬ নম্বর ওয়ার্ডে শিবসাগর পুকুরে আমাদের পারিবারিক পুজোর প্রতিমা নিরঞ্জন দশমীতে হয়ে থাকে। এবং প্রতিমা নিরঞ্জনের পরের দিন কাঠামো পুকুর থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’’
অন্যান্য পারিবারিক পুজোর উদ্যোক্তারাও একই কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে রামপুরহাট পুরসভার প্রাক্তন উপপুরপ্রধান এবং রামপুরহাট ব্যাঙ্ক রোড যুবক বৃন্দ সর্বজনীন পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা অনিন্দ্য কুমার সাহা বলেন, ‘‘তাঁত পুকুর থেকে কাঠমো তুলে নেওয়ার দায়িত্ব পুরসভার।’’
একই বক্তব্য রামপুরহাট মহাজনপট্টি সর্বজনীন পুজো কমিটির অন্যতম উদ্যোক্তা সুজিত কুমার গুপ্তারও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy