উদযাপন:বিষ্ণুপুরের মড়ার গ্রামের ২ নম্বর ক্যাম্পে। নিজস্ব চিত্র
দুই জেলায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে পালিত হল হুল দিবস।
জেলার সাঁওতালি সাহিত্যিক ও গবেষকেরা জানান, ১৮৫৫ সালের ৩০ জুন বিহারের ভগনাডি মাঠে সাঁওতাল জানজাতি ও অন্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষেরা সিধু ও কানু মুর্মুর নেতৃত্বে ইংরেজ শাসকদের দেশছাড়া করার শপথ নেন। ইংরাজ শাসকদের বিরুদ্ধে প্রত্যক্ষ সংগ্রাম শুরু করেন তাঁরা।
বাম আমলে ৮০-র দশকের গোড়া থেকে রাজ্য সরকার হুল দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সরকারি ও বেসরকারি ভাবে হুল দিবস পালন করা হয়ে থাকে।
শুক্রবার পুরুলিয়ায় অযোধ্যা পাহাড়ের হিলটপে হুল দিবসের সরকারি অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টির মাহাতো, জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়, জেলার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস প্রমুখ। মন্ত্রী এবং সভাধিপতি অনুষ্ঠানে পাহাড়ের গাছ বাঁচানোর কথা বলেন তাঁদের বক্তৃতায়।
মানবাজার মহকুমা স্তরের হুল দিবস পালিত হয়েছে বান্দোয়ানে। শুক্রবার মানবাজার ১ ও ২, বান্দোয়ান, বরাবাজার এবং পুঞ্চা ব্লক থেকে কয়েকশো শিল্পী হুল দিবসের ওই অনুষ্ঠানে সামিল হন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মানবাজারের বিধায়ক তথা অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী সন্ধ্যারানি টুডু। তিনি বলেন, ‘‘হুল মানে হল বিদ্রোহ বা সংগ্রাম। ব্রিটিশ শাসকদের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাঁরা শহিদ হয়েছেন আমরা আজ অনুষ্ঠানের তাঁদের সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছি।’’
বান্দোয়ানের শঙ্করডুংরি গ্রামে হুল দিবসের অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র
এ দিন বান্দোয়ান ব্লক অফিসের মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বৃক্ষ রোপণ, হুল দিবস কেন্দ্রিক একাঙ্ক নাটক, তিরন্দাজি প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে। শুক্রবার মহকুমা স্তরের হুল দিবসে রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো, জেলাশাসক অলকেশপ্রসাদ রায়, বান্দোয়ানের বিধায়ক রাজীব সোরেন, মহকুমাশাসক (মানবাজার) সঞ্জয় পাল, পাঁচ জন বিডিও ও অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আদিবাসী অধিকার রক্ষা মঞ্চ ও সিপিএমের কৃষকসভার উদ্যোগে হুল দিবস পালিত হয়েছে পুরুলিয়ার কাশীপুরে। শুক্রবার সকালে কাশীপুরে হাটের মোড়ে পথসভা হয়।
তার আগে কাশীপুরে সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের পাশের মাঠে সাঁওতাল বিদ্রোহের শহীদদের স্মৃতিতে বেদিতে মাল্যদান করা হয়। উপস্থিত ছিলেন দেওয়ান হাঁসদা, নন্দ হাঁসদা, সত্যনারায়ণ বাউড়ি প্রমুখ। পথসভার আগে দুই সংগঠনের সদস্যরা কাশীপুরের বিভিন্ন এলাকা মিছিল করেন। হাটের মোড়ে পথসভায় অলচিকি ভাষায় পঠনপাঠনের পরিকাঠামো তৈরির দাবি ওঠে।
এ ছাড়াও পুুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সংস্থা এবং ক্লাব বেসরকারি ভাবে এ দিন হুল দিবস উদযাপন করেছে।
বাঁকুড়ায় বিষ্ণুপুরের ২ নম্বর ক্যাম্পের মড়ার মল্লভূম জিয়ৌড় গাঁওতার সদস্যরা শুক্রবার মড়ার পঞ্চায়েতের পাশে ফুটবল মাঠে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন। সংস্থার সম্পাদক সোমলাল মান্ডি বলেন, ‘‘সকালে সাঁওতাল বিদ্রোহের সেনানী সিধু কানু ও বীরসার প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে আমাদের নিজস্ব আচার পদ্ধতি মেনে সম্মান জানানো হয়েছে।
মল্লভূম জিয়ৌড় গাঁওতার পতাকা উত্তোলন করেন সভাপতি গোরাচাঁদ মান্ডি। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এসডিপিও (বিষ্ণুপুর) লাল্টু হালদার ও ডেপুটি এক্সসাইজ কালেক্টর (বিষ্ণুপুর) শুভঙ্কর মণ্ডল প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy