বাঁকুড়ায় প্রশাসনিক সভা থেকে বিজেপিকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। ছবি ফেসবুক থেকে।
বাঁকুড়ায় অধিকাংশ বিধায়ক বিজেপির। দুই সাংসদও বিজেপির। তার পরও এই জেলায় কেন উন্নয়ন হয়নি? বাঁকুড়ার সভা থেকে এই প্রশ্ন তুলেই পদ্মশিবিরকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বাঁকুড়ায় সরকারি পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দু’জন সাংসদ রয়েছেন। অধিকাংশ বিধায়কও তো বিজেপির। কিন্তু কী করেছে বাঁকুড়ার জন্য? আজ পর্যন্ত উন্নয়ন হয়নি। ভোটের সময় আসে। আর ভোট নিয়ে পালিয়ে যায়।’’ পাল্টা সরব হয়েছে বিজেপি।
বাঁকুড়ায় মোট ১২টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে বাঁকুড়া, শালতোড়া, ছাতনা, ওন্দা, বিষ্ণপুর, কোতুলপুর, ইন্দাস, সোনামুখী— এই ৮ কেন্দ্রে বিজেপির বিধায়ক রয়েছেন। বাঁকুড়া এবং বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পদ্ম প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছেন বিজেপির সুভাষ সরকার এবং সৌমিত্র খাঁ। দোরগোড়ায় পঞ্চায়েত ভোট। তার পর বছর ঘুরলেই রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। এই আবহে ভোট দেওয়ার পরও বিজেপি উন্নয়নমূলক কাজ করেনি বলে যে অভিযোগ জানিয়ে সরব হলেন মমতা, তা উল্লেখযোগ্য। এই প্রসঙ্গে তাঁর সংযোজন, ‘‘ভোটের সময় বলে উজালা দেব, আর তার পর উজালা হাওয়া। শুধু জিনিসের দাম বাড়ায়।’’
বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানা বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আজ স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন বাঁকুড়া জেলায় তাঁদের ফলাফল খারাপ হয়েছে। আসলে তাঁদের দলের প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, সাংগঠনিক দুর্বলতা আর তৃণমূলের উপর মানুষের ভরসা হারানোর কারণেই এমন ফলাফল হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বিজেপির সাংসদ-বিধায়করা কাজ করেননি। আমি মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই আপনি খোঁজ নিয়ে দেখুন আমাদের কোনও কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। সমস্ত কাজ আটকে দিচ্ছেন জেলাশাসক। আমার ধারণা আপনার নির্দেশেই এমনটা হচ্ছে।’’
রাজ্য সরকারি কর্মীদের মহার্ঘ ভাতা বা ডিএ নিয়ে আন্দোলনের মধ্যেই শুক্রবার সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন মমতা। বলেছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও ৩ শতাংশ ডিএ দিয়েছি।’’ গত বুধবার রাজ্য বাজেটে ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তাতে ক্ষোভ মেটেনি সরকারি কর্মচারীদের একটা বড় অংশের। বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে তাঁরা আন্দোলনে নেমেছেন। অনশন করতে গিয়ে অসুস্থ হয়েছেন কয়েক জন। বকেয়া ডিএ না মেটালে পঞ্চায়েত ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তাঁরা। এই আবহে বাঁকুড়ার সভায় ডিএ প্রসঙ্গ টানলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারের মতো শুক্রবারও মমতা বলেছেন, ‘‘আমি জাদুকর নই। টাকা জোগাড় করতে হয়।’’
গত কয়েক দিন ধরেই একাধিক সভা থেকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বার বার গর্জে উঠতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে। শুক্রবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। বাঁকুড়ার সভায় মমতা বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকা দিচ্ছে না। বলছে রাস্তা হবে না। যেন পকেটের টাকা দিচ্ছে! আমাদের টাকা আমাদের দিচ্ছে না। বলছে বাংলাকে ভাতে মারো। এত সহজ নয়। বাংলার মানুষ ভিক্ষা চায় না। সম্মান চায়।’’ ১০০ দিনের কাজে টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে এর আগেও মুখ খুলেছিলেন মমতা। বৃহস্পতিবার জঙ্গলমহলের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকার বলেছে আধার কার্ড লিঙ্ক না করালে টাকা পাওয়া যাবে না। কিন্তু লিঙ্কটা করাবে কোথায়? গ্রামের মানুষ অনলাইনে লিঙ্ক করাবে? কত গ্রামে ব্যাঙ্কই নেই। অনলাইনটা করবে কোথা থেকে? মাথা থেকে? মুণ্ডু থেকে? (প্রধানমন্ত্রী) সেটা একবার দেখবেন না।’’ ১০০ দিনের কাজের টাকা না দিলে দুর্বার আন্দোলন করা হবে বলে এর আগে বর্ধমানের সভায় হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy