Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Jhalda Municipality

ফের নবান্নে ব্রাত্য ঝালদা, উচ্ছ্বসিত সুরেশ-বিরোধীরা

মুখ্যমন্ত্রী সোমবার জানিয়েছিলেন, ওই দু’টি পুরসভা অন্য দলের বলে সেখানকার পুর প্রতিনিধিদের বকাঝকা করার অধিকার তাঁর নেই।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৮:০০
Share: Save:

সোমবারের পরে বৃহস্পতিবার। ফের রাজ্যের তৃণমূল পরিচালিত পুরসভাগুলিকে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে ডাক পেল না তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভা। এই ঘটনার জেরে পুরসভার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী অস্বস্তিতে পড়লেও বিরুদ্ধ গোষ্ঠী উচ্ছ্বসিত। আর সেই ঘটনাকে ঘিরে শহরে দলের অনৈক্যের ছবি ফের প্রকট হল।

সোমবার নবান্নে পুরপ্রধান ও মেয়রদের বৈঠকে ডাকলেও এ দিন ভার্চুয়াল বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের নির্দেশিকায় এ বারও ঝালদা ও নদিয়ার বাম পরিচালিত তাহেরপুর নোটিফায়েড এরিয়াকে বাদ দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঝালদাবাসীর কাছে অসম্মানের বলে কটাক্ষ করেছেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো।

মুখ্যমন্ত্রী সোমবার জানিয়েছিলেন, ওই দু’টি পুরসভা অন্য দলের বলে সেখানকার পুর প্রতিনিধিদের বকাঝকা করার অধিকার তাঁর নেই। তাই ওই দুই পুরসভাকে বৈঠকে ডাকা হয়নি। ঝালদার তৃণমূল কর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, কংগ্রেসের এক পুর প্রতিনিধির সমর্থনে বোর্ড গড়া হলেও পুরসভায় ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূলই। পুরপ্রধান ও উপপুরপ্রধান— দু’টি পদই তৃণমূলের দখলে। সেই তথ্য কি মুখ্যমন্ত্রীর গোচরে কেউ আনেননি? তাহলে কেন এ বারও বৈঠকে ডাক পেল না ঝালদা? না কি দলের হুইপ অগ্রাহ্য করে দলীয় পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কংগ্রেসকে নিয়ে অনাস্থা এনে সুরেশ আগরওয়ালের পুরপ্রধান হওয়ার বিষয়টি এখনও দলনেত্রী মানতে পারছেন না?

ঝালদার বর্তমান পুরপ্রধান সুরেশ আগরওয়াল এ দিন বলেন, ‘‘আগের দিন যাঁদের বৈঠকে ডাকা হয়েছিল, এ দিনের পর্যালোচনা বৈঠকে তাঁরাই ডাক পেয়েছেন। এ নিয়ে আমার আর কিছু বলার নেই।’’ যাঁকে সরিয়ে সুরেশ পুরপ্রধান হয়েছেন, সেই শীলা চট্টোপাধ্যায় এ দিন মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন। তিনি শুধু বলেন, ‘‘বিষয়টি জানি। তবে যেহেতু এটা পুরোপুরি সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়, তাই এ নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না।’’

তবে ঝালদা শহর তৃণমূল সভাপতি চিরঞ্জীব চন্দ্র মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের এই পদক্ষেপকে কার্যত সমর্থনই জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঝালদার ক্ষমতাসীন এই পুরবোর্ডের প্রতি যে দলনেত্রীর সমর্থন নেই, সেই বিষয়টি এ দিনের পরে দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই উপলব্ধিকে আমরা শহর তৃণমূলের তরফে সাধুবাদ জানাচ্ছি।’’

কংগ্রেসের যে পুর প্রতিনিধির সমর্থনে ঝালদায় তৃণমূল ক্ষমতায়, সেই বিপ্লব কয়াল বলেন, ‘‘ঝালদায় মাঝখানে কংগ্রেসের পুরপ্রধান ছিলেন। সোমবারের বৈঠকে ঝালদা ডাক না পাওয়ায় ভেবেছিলাম, এখানে যে তৃণমূল ক্ষমতায় ফিরেছে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে হয়তো সেই বার্তা নেই। ভেবেছিলাম, পরে কেউ আসল তথ্য তাঁকে দিয়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় বৈঠকেও ঝালদা ডাক না পাওয়ায় আমরা অবাক হয়ে গেলাম। সর্বোপরি, প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ‘আমরা-ওরা’-র অবস্থান দেখে তাজ্জব হয়ে যাচ্ছি। ঝালদার কিছু মানুষ বিরোধীদের ভোট দিয়ে কি অন্যায় করেছেন?’’ জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতোর দাবি, ‘‘অন্য পুরসভাগুলির মতো ঝালদা পুরসভাও গণতান্ত্রিক ভাবেই নির্বাচিত। কেন প্রশাসনিক বৈঠকে ঝালদাকে বাদ দেওয়া হল, সেই প্রশ্নের উত্তর চাইছেন এখানকার মানুষ।’’

লোকসভা ভোটের নিরিখে ঝালদা পুরসভায় এগিয়ে রয়েছে গেরুয়া শিবির। পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় বলেন, ‘‘সাংবিধানিক চেয়ারে থেকে মুখ্যমন্ত্রী প্রতিশোধের রাজনীতির উদাহরণ তৈরি করছেন। এটা ঝালদার মানুষকে অসম্মান করা। এর জবাব তিনি পাবেন।’’

ঝালদাবাসীর চিন্তা অন্য। তাঁদের প্রশ্ন, সুবর্ণরেখা পানীয় জল প্রকল্প-সহ ঝালদার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলির সমাধানের প্রয়োজন রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঝালদাকে বৈঠকে ব্রাত্য রাখায় সেই সব কাজে কোপ পড়বে না তো? যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার আশ্বাস, ‘‘ঝালদা পুরসভায় উন্নয়নের কাজ থমকে নেই। তবে বৈঠকের বিষয়টি পুরোটাই প্রশাসনের।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Nabanna
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy