কাশীপুরের পলাশকোলায় দেওয়ালে ব্যঙ্গচিত্র। —নিজস্ব চিত্র
ছবি সঙ্গত করলে কথা আরও সহজ হয়ে যায়। পুরুলিয়া একটা সময়ে চলতে ফিরতে দেওয়ালে দেখেছে বামেদের ভোট প্রচারের কার্টুন। বিগত কয়েক বছরে সেই চল একটু একটু করে কমে আসছিল বলে মেনে নিচ্ছেন সিপিএমের জেলা সভাপতি প্রদীপ রায়ও। এ বারে সেই চল আবার ফিরছে। পুরুলিয়ার নানা জায়গায় দেওয়াল লিখনে দেখা যাচ্ছে ব্যঙ্গচিত্র। নেতাদের একাংশের দাবি, ইন্টারনেটে কার্টুন জনপ্রিয় হয়ে ওঠার পরে নতুন প্রজন্মের কর্মীরা রসিকতার পুরনো পদ্ধতিতে নতুন করে মজেছেন।
প্রদীপবাবু অল্প বয়সে রঙ-তুলি হাতে দেওয়ালে বিস্তর কার্টুন এঁকেছেন। তিনি বলছিলেন, ‘‘যুব কর্মীরা প্রচারে আবার পুরুলিয়ায় ব্যঙ্গচিত্র ফিরিয়ে আনছেন, এটা ভাল দিক।’’ দলের পুরনো নেতাদের কেউ কেউ মনে করছেন, পুরুলিয়ায় কার্টুনের চল গত বছর দশেকে একটু একটু করে কমেছিল। স্লোগান লেখার গতানুগতিকতাতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন নেতার্কমীরা। উৎসাহে খামতি কেন? দলের জেলা নেতারা জানাচ্ছেন, ব্যাঙ্গচিত্র আঁকার লোকই ইদানীং পাওয়া যাচ্ছিল না। সম্প্রতি মানবাজারে এসেছিলেন রাজ্য বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু। অল্প কিছু দেওয়াল লিখন চোখে পড়েছিল। স্থানীয় নেতৃত্ব তাঁকে জানিয়েছিলেন, ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রতীক বাঘ। সেটা আঁকতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হতে হচ্ছে।
রেলশহর আদ্রার পাশেই কাশীপুর ব্লকের বেকো পঞ্চায়েতের পলাশকোলা। ওই এলাকায় বেশ কিছু দেওয়ালে কার্টুন আঁকতে নেমেছে সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ। কোথাও উর্দি পরা একটি লোক। মুখে চাপদাড়ি। হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে লাঠি ও লন্ঠন। নীচে লেখা, ‘পাড়ায় পাড়ায় আওয়াজ তোলো, চৌকিদার বদলে ফেল’।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
কোথাও একরাশ মড়ার মাথার খুলি। মাঝে দাঁড়িয়ে এক মহিলা। পরণে সাদা শাড়ি। নীচে লেখা, ‘উঃ চারদিকে শুধু শান্তি আর উন্নয়ন’। রাজ্যের নিরিখে দেখলে এই কার্টুন অবশ্য নতুন কিছু নয়। বিভিন্ন জায়গার দেওয়ালে দেওয়ালে দেখা যাচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে ইন্টারনেটেও। সিপিএমের এক জেলা নেতার দাবি, ইন্টারনেটে কার্টুন প্রচুর ছড়িয়ে পড়ায় পুরুলিয়ার নতুন প্রজন্মের কর্মী সমর্থকেরা তাতে মজেছেন।
দল সূত্রের খবর, ডিওয়াইএফ-এর জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিশ্বরূপ চক্রবর্তীর নেতৃত্বেই এ বার ব্যঙ্গচিত্র আঁকতে নেমেছেন এক দল যুব কর্মী। বিশ্বরূপ বলেন, ‘‘তুলির টানে কয়েকটা রেখায় সহজ করে বোঝাতে পারলেই হল। আঁকতে গিয়ে নতুন ছেলেমেয়েরা উৎসাহও পাচ্ছে খুব।’’ প্রদীপবাবুর দাবি, ব্যাঙ্গচিত্র যেন কোনও ভাবেই ব্যাক্তিগত আক্রমণের দিকে না গড়ায় বা শালীনতার সীমা না ছাড়ায়— সেই ব্যাপারে যুব কর্মীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy