প্রতীকী ছবি।
ইভিএমের সঙ্গে গণনাকেন্দ্রে রাখতে হবে ভিভিপ্যাট। ফলে জায়গা অনেক বেশি দরকার। অন্যদিকে, কিছু গণনাকেন্দ্রে (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) আবার ক্লাসঘরের পরিবর্তনের জন্য গণনা করার মতো জায়গাও গিয়েছে কমে। সব মিলিয়ে এ বার দুই জেলাতেই লোকসভা ভোটের গণনাকেন্দ্র বাড়ানোর প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। পুরুলিয়া জেলায় ইতিমধ্যেই গণনাকেন্দ্র বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে। বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনও গণনাকেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব পাঠাতে চলেছে।
এতদিন পুরুলিয়া লোকসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা হত পুরুলিয়া ২ ব্লকের বোঙাবাড়িতে পুরুলিয়া পলিটেকনিক কলেজে। এ বার পলিটেকনিক কলেজের সঙ্গে ওই এলাকার সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষণ কেন্দ্রের (ডায়েট) ট্রেনিং হলেও গণনাকেন্দ্র করা হচ্ছে। সেখানে কাশীপুর ও পাড়া বিধানসভার গণনা হবে। পলিটেকনিক কলেজে হবে বলরামপুর, বাঘমুণ্ডি, জয়পুর, পুরুলিয়া ও মানবাজার বিধানসভার গণনা।
পুরুলিয়ার জেলা নির্বাচন আধিকারিক সিদ্ধার্থ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বর্তমানে ইভিএম ছাড়াও ভিভিপ্যাট রাখতে হবে স্ট্রংরুমে। সে জন্য বেশি জায়গার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। সে কারণে গণনাকেন্দ্র বাড়ানো হচ্ছে।’’
বাঁকুড়া জেলায় দু’টি লোকসভা কেন্দ্র রয়েছে। বাঁকুড়া কেন্দ্রের জন্য খ্রিস্টান কলেজ এবং বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের জন্য কেজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সাধারণত লোকসভার গণনা করা হয়। এ বার বাঁকুড়া কেন্দ্রের জন্য তিনটি ও বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের জন্য দু’টি গণনা কেন্দ্র তৈরির ভাবনাচিন্তা করছে জেলা প্রশাসন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, বাঁকুড়া কেন্দ্রের জন্য খ্রিস্টান কলেজের পাশাপাশি বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজিয়েট স্কুল ও মিশন গার্লস হাইস্কুলকেও গণনাকেন্দ্র হিসাবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে খ্রিস্টান কলেজ কেন্দ্রে শালতোড়া ও রঘুনাথপুর বিধানসভার ভোট গণনা করা হবে। খ্রিস্টান কলেজিয়েট স্কুলে ছাতনা ও বাঁকুড়া বিধানসভা কেন্দ্র এবং মিশন গার্লস হাইস্কুলে রানিবাঁধ, রাইপুর ও তালড্যাংরা বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা করার ভাবনা রয়েছে।
অন্যদিকে, বিষ্ণুপুর কেন্দ্রে কেজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের পুরনো বিল্ডিংয়ের পাশাপাশি কম্পিউটার বিল্ডিং-কেও গণনাকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এই ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বিষ্ণুপুর, কোতুলপুর, ইন্দাস ও সোনামুখী বিধানসভা কেন্দ্রের এবং কম্পিউটার বিল্ডিংয়ে বড়জোড়া, ওন্দা, পূর্ব বর্ধমান জেলার খণ্ডঘোষ বিধানসভা কেন্দ্রের ভোট গণনা করা হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।
ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের তরফে গণনাকেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “কলেজ ভবনগুলির পরিকাঠামোয় অনেক পরিবর্তন হয়েছে। বহু ক্লাসরুমে গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে। কোথাও আবার ল্যাবরেটরি হয়েছে। ফলে সেগুলি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। জায়গার অভাবের জন্যই গণনাকেন্দ্র বাড়ানো প্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছে।”
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের দাবি, জেলার রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গেও এ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলিরও বিশেষ আপত্তি নেই। তবে, বিজেপির বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিবেকানন্দ পাত্র বলেন, ‘‘কোনওরকম কারচুপি না হলে গণনাকেন্দ্র বাড়াতে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক অজিত পতির প্রতিক্রিয়া, ‘‘ভোটকর্মীদের সুবিধা হলে আমরা মানতে রাজি আছি।’’ তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক জয়দীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের যাতে সুবিধা হয়, আমাদের তাতেই সায় রয়েছে।’’
নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা বাঁকুড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সব্যসাচী সরকার বলেন, ‘‘শীঘ্রই আমরা গণনাকেন্দ্র বাড়ানোর প্রস্তাব নির্বাচন কমিশনের কাছে পাঠাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy