কটলুই গ্রামে কুমোর পাড়ায় মাটির প্রদীপ তৈরির কাজে ব্যস্ত মৃতশিল্পীরা। ছবি-সুজিত মাহাতো।
রামমন্দির উদ্বোধনের দিন সোমবার সন্ধ্যায় এক লক্ষ মাটির প্রদীপে উদ্ভাসিত হবে পুরুলিয়ার গোশালা হনুমান মন্দির প্রাঙ্গণ। অকাল দীপাবলির এই আয়োজনে অকালে এক লক্ষ প্রদীপ তৈরির বরাত পেয়ে খুশি পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে কোটলুইয়ের কুমোরপাড়া।
পুরুলিয়া হনুমান চালিশা কমিটির মুখপাত্র তথা বজরং দলের জেলা সংযোজক সুরজ শর্মার মতে, ‘‘রামমন্দিরের উদ্বোধন দেশবাসীর কাছে স্মরণীয় দিন। সে দিন সন্ধ্যায় প্রদীপ জ্বালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে আবেদন রেখেছেন। মানুষজন বাড়ি ও মন্দিরে প্রদীপ জ্বালাবেন। আমরাও এই দিনে পুরুলিয়া গোশালা হনুমান মন্দির চত্বরে এক লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপমহোৎসব উদ্যাপন করব।’’
মকর সংক্রান্তির ঠিক আগেই এই বরাত পেয়ে এখন যেন নাওয়াখাওয়ার সময় নেই কোটলুইয়ের কুমোরপাড়ার মৃৎশিল্পীদের। ১২-১৫টি পরিবার হাতে হাতে দ্রুত প্রদীপ তৈরি করে চলেছেন।
কোটলুইয়ের প্রবীণ মৃৎশিল্পী ভাদরি কুমার বলেন, ‘‘আগে এই বরাত পেলে কবেই লক্ষাধিক মাটির প্রদীপ পৌঁছে দিয়ে আসতাম। কিন্তু বরাত এল সপ্তাহ খানেক আগে। এর মধ্যে মকরপরবও ছিল। তবুও আমরা চ্যালেঞ্জটা নিয়েছি। প্রভু রামের মন্দিরের দরজা খুলবে, আর সেদিনই পুরুলিয়ার বজরংবলী মন্দির প্রাঙ্গণে লক্ষ প্রদীপ জ্বলবে! সাত-পাঁচ না ভেবেই তাই কাজটা নিয়েছি।’’
তবে কাজ যে কঠিন, তা মানছেন প্রবীণ শিল্পী ভাদরি। তাঁর কথায়, ‘‘বরাত আমি নিলেও গ্রামে এসে অন্যদের জানালাম, কাজটা সবাই মিলেই করব। এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ।’’
কংসাবতী নদীর ধার থেকে মাটি আনা, ভেজানো, চাকা ঘুরিয়ে এক একটি প্রদীপ গড়ে শুকোতে দেওয়া, ভাটার আগুনে পোড়ানো— হাতে হাতে চলছে। ভাদরির ছেলে বলরাম বলেন, ‘‘একে বেজায় ঠান্ডা, তার উপরে কাজ ধরার পর থেকেই রোদের তেজ নেই। প্রদীপ না শুকোলে পোড়ানোও যাবে না। যে ভাবেই হোক কাজ শেষ করাই আমাদের লক্ষ্য।’’
মৃৎশিল্পীরা জানান, প্রদীপ মূলত বিক্রি হয় দীপাবলির সময়েই। কিন্তু কয়েক বছর ধরে প্রদীপের বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। একসঙ্গে এত প্রদীপ গড়ার বরাতশেষ কবে পেয়েছেন, তাঁরা মনে করতে পারছেন না। মৃৎশিল্পী বিশ্বনাথ কুমার, রূপচাঁদ কুমার বলেন, ‘‘প্রদীপ বিক্রি করে আমাদের মতো দরিদ্র মানুষের ঘরে দু’টো টাকা আসবে ঠিকই। কিন্তু আমাদের তৈরি লক্ষ প্রদীপ একসঙ্গে জ্বলবে, এটাও আমাদের কাছে কম বড় পাওনা নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy