স্থানীয়দের প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন প্রধান। (ডান দিকে) এলাকার কদমখণ্ডী গ্রামে নিকাশি নালায় আগাছা। বৃহস্পতিবার ছবি দুটি তুলেছেন অনির্বাণ সেন।
•এলাকার অধিকাংশ গ্রামে নিকাশি ব্যবস্থা নেই। যার কারণে মশা মাছির উপদ্রব বাড়তেই আছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা কবে নেওয়া হবে?
প্রার্থনা চক্রবর্তী, গোড়লা
প্রধান: দীর্ঘ কয়েক দশক পর গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথম এই পঞ্চায়েত বাম বিরোধী শক্তি তৃণমূল দখল্ করে।তার আগে এলাকায় নিকাশি সহ কার্যত কোনো কাজ হয়নি।আমরা ক্ষমতায় আসার পর নিকাশির কাজ শুরু হয়েছে।সর্বত্র এখনও করে ওঠা সম্ভব হয়নি।নিকাশি কাজ চলছে, তারজন্য আরও কিছু সময় প্রয়োজন। তবে মশা মাছির উপদ্রব থেকে বাঁচতে মাঝে মধ্যে ব্লিচিং পাউডার দেওয়া হয়।
• সাঁইথিয়া মহম্মদবাজার রাস্তার ভবানীপুর মোড় থেকে কদমখন্ডী পর্যন্ত এলাকার প্রধান বড় রাস্তাটি দৈর্ঘে প্রায় আট কিলোমিটার। অনেকদিন থেকেই মোড়ামের ওই রাস্তাটির অবস্থা বেহাল। বর্ষায় চলা যায় না। রাস্তার উপর মণিকর্নিকা খালের সেতু দিয়েও বর্ষায় যাতায়াত করা যায় না। অথচ ওই রাস্তা দিয়ে হরিশাড়া এলাকা ছাড়াও আরও দুটি পঞ্চায়েত এলাকার কয়েকটি গ্রামের লোকজন যাতায়াত করেন। রাস্তাটি অবিলম্বে পীচ ও সেতুটি চলাচলের উপযুক্ত করার দাবি জানাচ্ছি।
সুব্রত ঘটক, ভবানীপুর
প্রধান: এলাকার সব থেকে ব্যস্ত রাস্তা হিসাবে সত্যিই রাস্তাটি পীচের হওয়া প্রয়োজন। সেই কথা ভেবে প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনা প্রকল্পে রাস্তাটি অনেক আগেই পীচ করার আবেদন জানানো হয়েছে পরিষদের কাছে। সংস্কারের সঙ্গে সেতুটি যাতায়াতের উপযোগী করা হবে।
• নির্মল বাংলা প্রকল্পে অধিকাংশ বাড়িতেই শৌচাগার নির্মাণ হয়েছে। কিন্তু জলের অভাবে তা ঠিকমতো ব্যবহার হচ্ছে না। জলের ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন। প্রধান সাহেব কী বলেন?
লক্ষীকান্ত বায়েন, তকিপুর
প্রধান: সব তো একসঙ্গে করা সম্ভব না। সরকার মানুষ ও সামাজিক স্বার্থে নানা রকম প্রকল্প হাতে নিয়েছে। নির্মল বাংলা প্রকল্পে শৌচাগার যখন করেছে তখন ভবিষ্যতে জলের ব্যবস্থাও হয়ত করবে। কিন্তু তার আগে সমস্ত মানুষজনের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তাই সকলের কাছে অনুরোধ ও আবেদন, জলের অজুহাত না দেখিয়ে নিজেদের ও এলাকার লোকজনের স্বার্থে শৌচাগার ব্যবহার করুন।
• এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জল ও ট্যাপকল দরকার। গরমের সময় তীব্র জলকষ্টে ভুগতে হয় এলাকাবাসীকে।
শম্পা চক্রবর্তী, গোড়লা
প্রধান: সজলধারা প্রকল্প না হওয়া পর্যন্ত ট্যাপকলের ব্যবস্থা করা যাবে না। ক্ষমতায় আসার পরই ২০১৩ সালে সজলধারা প্রকল্পের জন্য পঞ্চায়েত সমিতির কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। সমিতির থেকে আশ্বাস মিলেছে। টিউবওয়েলের জলে কোনও দুষণের খোঁজ পেলে পঞ্চায়েত থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
• ট্রাক্টর যাতায়াতের কারণে যশোদা গ্রামের রাস্তার মোড়াম উঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। হাল খুব খারাপ। বর্ষায় চলাই যায় না। আর মোড়াম নয়। এ বারে কংক্রীটের রাস্তার দাবি জানাচ্ছি।
স্বরুপ মণ্ডল, যশোদা
প্রধান: গ্রামের ভিতরের অধিকাংশ রাস্তাই কংক্রীটের। অর্থের কারণে প্রধান রাস্তাটি এখনও করা সম্ভব হয়নি। এনআরজিএ ফান্ড এলে ওই রাস্তাটিও কংক্রীটের করা হবে।
• পঞ্চায়েতের মধ্যে থাকা স্বাস্থকেন্দ্রে সপ্তাহে একদিন চিকিৎসক বসার কথা, তাও ঠিকমতো আসেন না। এলাকার স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের ভাবনা চিন্তা করা প্রয়োজন।
রবীন দাস, কদমখন্ডী
প্রধান: মাঝে মাঝে চিকিৎসকের না আসার অভিযোগ সত্য। এ ব্যাপারে বিএমওএইচকে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা নিয়মিত আসেন।
• হরিশাড়া এলাকায় কোনও হাইস্কুল নেই। দুটো জুনিয়র স্কুলের একটিতে ক্লাস ঘর নেই। এলাকার ছোটো ছোটো ছেলে মেয়েদের সাত আট কিমি দূরের সাঁইথিয়া বা আশপাশ এলাকার স্কুলে যেতে হয়। যাতায়াতের ধকলেই নাস্তানাবুদ পড়ুয়াদের অনেকেই পড়াশুনা ছেড়ে দেয়। এলাকার পড়ুয়াদের স্বার্থে গোড়লার জুনিয়ার স্কুলটিকে অবিলম্বে উচ্চমাধ্যমিক করা হোক।
অশোক চক্রবর্তী, গোড়লা
প্রধান: সঙ্গত দাবি। এ ব্যাপারে অনেক আগেই শিক্ষা দফতরের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। গোড়লা স্কুলের যা পরিকাঠামো বা জায়গা আছে, তাতে উচ্চ বিদ্যালয় না হওয়ার কোনো কারণ নেই। ঘটনা হল, শিক্ষা দফতর এখনও কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় জেলা পরিষদের কাছেও আবেদন জানানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সেটা করা হবে।
• পঞ্চায়েতের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক নিয়মিত আসেন। এলাকার লোকজন পরিষেবাও পায়। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামোর অভাবে রোগীদের দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ যদি একটু বড় ঘর ও রোগীদের বসার ব্যবস্থা করেন, তাহলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়।
চায়না চক্রবর্তী, কদমখন্ডী
প্রধান: ঠিকই বলেছেন, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের ঘরটি তুলনায় সত্যিই ছোটো। খুব শীঘ্রই উপযুক্ত ঘর ও রোগীদের বসার ব্যবস্থা করা হবে।
• কিষান মান্ডির মতো যদি ছোটো আকারে অঞ্চল অফিসে বা কাছাকাছি কোথাও একটা মান্ডি করা হয় তাহলে চাষিরা উপকৃত হতেন।
কমলাকান্তি বায়েন, রাঢ়কেন্দ
প্রধান: প্রস্তাব ভাল, কিন্তু পঞ্চায়েতের পক্ষে করা সম্ভব না। পঞ্চায়েত সমিতির কাছে প্রস্তাব আকারে রাখা হবে।
• তালতলা থেকে বাগডাঙা মোড় পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ। ওই রাস্তার উপর একটি প্রাইমারি স্কুল আছে। রাস্তার কারণে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে। আর সেতুর নীচের অংশটুকু আরও বিপজ্জনক। পঞ্চায়েতের কিছু করার আছে?
মহম্মদ রওশন আলি, রুদ্রনগর
প্রধান: পঞ্চায়েত এলাকাতে হলেও ওই রাস্তাটি পূর্ত দফতরের অধীন। এবং সেতুটির নীচের অংশ রেলের অধীন। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের রাস্তা সারানোর ব্যাপারে বহুবার আবেদন জানানো হয়েছে। রাস্তা সারানোর আশ্বাসও মিলেছে। কিন্তু বাস্তবে এখনও কিছুই হয়নি। রাস্তা সারানোর ব্যাপারে এ বার জেলা শাসককে চিঠি করা হবে।
• রুদ্রনগরে কোনও প্রাইমারি স্কুল নেই। কচিকাঁচা পড়ুয়াদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরের প্রাইমারি স্কুল যেতে হয়। পঞ্চায়েতের উদ্যোগে একটা প্রাইমারি স্কুল করা যায় না?
শিবনাথ রায়, বেলেমাঠ
প্রধান: রুদ্রনগরে কাছাকাছি প্রাইমারি স্কুল না থাকাটা সত্যিই ভয়ানক সমস্যা। ক্ষমতায় আসার পরেই এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সমিতি ও বিডিওকে জানিয়েছি। স্কুলের জন্য জায়গার খোঁজ চলছে।
• এলাকায় অনেকগুলি পুকুর রয়েছে। তার বেশ কয়েকটি কাজের। গ্রামের ব্যবহৃত পুকুরগুলিতে একটি করে বাঁধানো ঘাট ও মহিলাদের কাপড় ছাড়ার জন্য ঘাট লাগোয়া ছাউনি দেওয়া ঘেরা জায়গার ব্যবস্থা কি পঞ্চায়েত থেকে করা যায়?
অর্চনা বাগদি, সরলা
প্রধান: সাধু ও মূল্যবান প্রস্তাব। তবে এনআরজিএ প্রকল্পে ঘাট করা বন্ধ হয়ে গেছে। এবং ২০১৭-১৮ এ্যাকশন প্ল্যানে প্রস্তাব আকারে রাখা হবে। জেলা পরিষদের কাছেও আবেদন জানাব। তবে সব পুকুরে নয়। আপাতত প্রতিটি গ্রামের সব থেকে বেশি ব্যবহৃত পুকুরের জন্য এই প্রস্তাব রাখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy