আদালত কর্মীদের কর্মবিরতি। বাঁকুড়া। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
নির্দিষ্ট সময়ে আদালতে এসে হাজিরা খাতায় সই করলেও কাজে যোগ দিলেন না কর্মীরা। বকেয়া মহার্ঘ্যভাতা প্রদান ও স্বচ্ছ ভাবে শূন্যপদে নিয়োগের দাবিতে ডাকা দু’দিনের কর্মবিরতির প্রথম দিন সোমবার কার্যত অচল থাকল বাঁকুড়া, খাতড়া ও বিষ্ণুপুর আদালত। সরকারি অফিসের কর্মী ও স্কুলশিক্ষকদের একাংশও শামিল হন কর্মসূচিতে।
এ দিন সকাল থেকে বাঁকুড়া আদালতের সামনে ছিল সাধারণের ভিড়। বিচারক, আইনজীবী থেকে আদালতের কর্মী, সকলে নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হলেও কাজে যোগ দেননি। বাঁকুড়া আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর রথীন দে বলেন, “সব ক’টি আদালত কার্যত অচল ছিল। বিচারকের বিশেষ উদ্যোগে কেবল দু’টি জামিনের শুনানি হয়েছে। বাকি কোনও মামলার বিচার হয়নি।”
আদালতে বিভিন্ন মামলায় সাক্ষী দিতে আসা বাঁকুড়া সদর থানার লাপুড়িয়ার পতিত বাউরি, বড়জোড়ার হাটআশুড়িয়ার জানেআলম মণ্ডল, গঙ্গাজলঘাটির অমরকাননের উত্তম ঘোষেরা বলেন, “কাজকর্ম বন্ধ রেখে আদালতে এসেছিলাম। কাজ হল না। আবার এক দিন আসতে হবে। কর্মবিরতির কথা আগাম জানালে হয়রানি হত না।”
পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারী সমিতির জেলা সম্পাদক স্বরূপ সুশীল দাসের তবে দাবি, শুক্রবারই বিচারক, আইনজীবী ও মুহুরিদের দু’দিনের কর্মবিরতির কথা জানানো হয়েছিল। খাতড়া ও বিষ্ণুপুর আদালতেও এ দিন কাজ হয়নি।
কর্মবিরতির প্রভাব দেখা গিয়েছে জেলাশাসকের দফতরেও। নির্দিষ্ট সময়ে হাজিরা দিলেও অনেকে কাজে যোগ দেননি। দুপুরে জেলাশাসকের দফতর প্রাঙ্গণে মিছিল-বিক্ষোভ করেন কর্মীদের একাংশ। কর্মবিরতির ডাক দেওয়া ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “প্রশাসনিক দফতরের বেশির ভাগ কর্মী কর্মবিরতিতে যোগ দেন। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ দফতরের সচিব। আমরা সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়েছি।” প্রশাসনের এক কর্তার তবে দাবি, “কর্মীদের হাজিরা অন্য দিনের মতোই ছিল। কর্মবিরতির প্রভাব তেমন পড়েনি।”
জেলার বহু স্কুলেও শিক্ষকদের একাংশকে কর্মবিরতি পালন করতে দেখা যায়। আন্দোলনের দাবিদাওয়া লেখা পোস্টার হাতে স্কুল চত্বরে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন অনেকে। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) পীযূষকান্তি বেরা বলেন, “দফতরের কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করেননি। বিক্ষিপ্ত ভাবে কয়েকটি স্কুলে কর্মবিরতির খবর পেয়েছি।” প্রাথমিক স্কুলগুলিতে কর্মবিরতির খবর নেই, দাবি জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) জগবন্ধু বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
পুরুলিয়ার অনেক স্কুলে কর্মবিরতি পালিত হয়েছে, দাবি ‘সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ’-এর পুরুলিয়ার যুগ্ম আহ্বায়ক কৃপাসিন্ধু গরাঁইয়ের। তিনি জানান, অনেক স্কুলে শিক্ষকেরা উপস্থিত হলেও দাবির সমর্থনে ক্লাস নেননি। যে সব স্কুলে মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্র রয়েছে, সেখানে কর্মবিরতি পালিত হয়নি জানিয়ে কৃপাসিন্ধু বলেন, “পরীক্ষাকেন্দ্রগুলিতে প্রস্তুতির অনেক কাজ থাকে। ফলে ওখানে কর্মবিরতি পালন করলে নানা সমস্যা হতে পারে। তা ভেবে ওই স্কুলগুলিকে কর্মবিরতির বাইরে রাখা হয়েছিল।”
পুরুলিয়া ও রঘুনাথপুর আদালতেও এ দিন কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। সেখানে পশ্চিমবঙ্গ আদালত কর্মচারী সমিতির তরফে মিছিল ও অবস্থান-বিক্ষোভ হয়েছে। ঝালদা ১ ব্লক অফিস এবং ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার অফিসের কর্মীরা এ দিন কিছুক্ষণের জন্য কলম নামিয়ে রেখে প্রতীকী কর্মবিরতি পালন করেন। পুরুলিয়া মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে কর্মবিরতি হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy