বাড়ির সামনে পড়ে পোড়া সামগ্রী। ছবি: তারাশঙ্কর গুপ্ত
একে একে পাঁচ আহতেরই মৃত্যু হল। সপ্তাহ দু’য়েক আগে, বাঁকুড়ার বড়জোড়ার পখন্নার আদপপাড়ার বাসিন্দা রাখহরি ধাড়ার বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পাঁচ জন গুরুতর আহত হন। আহতদের মধ্যে ছিলেন রাখহরিবাবুর মা ছবি ধাড়া (৫৭), স্ত্রী কবিতা ধাড়া (৩০), বোন সুমিত্রা চট্টোপাধ্যায় (৩০), দুই নাবালিকা ভাগ্নী পিউ (১০) ও পায়েল (১৪) এবং এক প্রতিবেশী নন্দরানী দাস (৮৫)। বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অন্যদের আগেই মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে মারা যান সুমিত্রাদেবীও।
এ দিন বোনের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন রাখহরিবাবু। বলেন, “পুরো পরিবার শেষ হয়ে গেল! প্রতিদিন একটা একটা করে মৃত্যুর খবর পেয়ে যেন পাথর হয়ে গিয়েছি। কেউ ফিরল না। সব শেষ হয়ে গেল।”
বাড়ির উঠোনে এখনও ডাঁই হয়ে পড়ে পোড়া জামাকাপড়, গৃহস্থালি জিনিসপত্রের অবশেষ। বিস্ফোরণে মাটির দেওয়াল ফেটে চৌচির। কোথাও কোথাও মাটি ঝরছে। দুর্ঘটনার সময়ে বাড়ির উঠোনে খেলছিল রাখহরিবাবুর ছেলে শুভ ও মেয়ে শুভশ্রী। কপালজোরে বেঁচে যায় তারা। ঘরের দুর্দশায় বাধ্য হয়ে দুই সন্তানকে নিয়ে আপাতত এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত কাটাচ্ছেন তিনি।
রাখহরিবাবু জানান, পখন্নার বাজারে চপ-ঘুগনির ঠেলাগাড়ি ছিল। বাড়িতে একটি ছোট মুদিখানার দোকানও ছিল। পরিবারের পাঁচ সদস্যকে হারানোর পাশাপাশি, রোজগারও বন্ধ। তাঁর ছোট বোন শ্রাবণী দে বলেন, “পরিবারে অভাব ছিল। তবে তাতেও সবাইকে নিয়ে খুশি ছিল দাদা। পাঁচটা তাজা প্রাণ চলে গেল!” রাখহরিবাবুর এক প্রতিবেশী সৌমেন নায়েকের কথায়, “একেবারেই নির্বিবাদী পরিবার। পাড়ার বেশির ভাগ বাচ্চা ওই বাড়িতে খেলতে যেত। এক নিমেষে সব শেষ হয়ে গেল। বাড়িটার দিকে তাকানো যায় না।” শোকে কাতর রাখহরিবাবু আপাতত দুই সন্তানকে আগলে বাঁচার পথ খুঁজছেন।
বড়জোড়ার বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, “খুব মর্মান্তিক ঘটনা। পরিবারটির পাশে আছি। ব্লক ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে কী ভাবে আরও সাহায্য করা যায়, চেষ্টা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy