অনাহুত: মোবাইল ফোনে ‘মোমো’র হানা। সোমবার পাড়ুইয়ে। নিজস্ব চিত্র
উত্তরবঙ্গ, দুই মেদিনীপুরের পরে এ বার পাড়ুই থানার কেন্দ্রডাঙাল গ্রামে ‘মোমো’ মারণ-গেমের আতঙ্ক ছড়াল। সোমবার বিকেলে এ নিয়ে পাড়ুই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্থানীয় মোবাইল ব্যবসায়ী মহম্মদ আবদুল কুদ্দুস।
পুলিশের কাছে তিনি অভিযোগ করেছেন, অজানা নম্বর থেকে আসা হোয়াটস্অ্যাপ মেসেজে প্রথমে ‘মোমো’ খেলতে বলার অনুরোধ, কথা মতো কাজ না করায় প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে এলাকায় কৌতূহল তৈরি হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। এর পিছনে মারণ-গেম নাকি, অন্য কোনও রহস্য আছে দেখা হচ্ছে।
আবদুল জানান, কেন্দ্রডাঙাল গ্রামে তাঁর মোবাইলের দোকান রয়েছে। গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রেরও দেখভাল করেন। রবিবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে একটি লিঙ্ক আসে তাঁর মোবাইলে। লিঙ্ক খুলতেই ভাইরাল হওয়া মোমোর ছবি তাঁর মোবাইলে ভেসে ওঠে। আবদুলের কথায়, ‘‘প্রথমে ভেবেছিলাম কোনও বন্ধু মজা করছে। এর মাঝে একটি মেসেজ আসে ‘আমি মোমো’ বলে। আরও জানায়, সে বাংলা জানে না। সবটাই ইংরেজিতে বলতে হবে। তার পরই আসে মোমো খেলার কথা।’’
সাইবার বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ‘মোমো’ একটি মেয়ের ছবি। যার দু’টি চোখ কোটর থেকে ঠেলে বেরিয়ে আসছে। তার পা দু’টি পাখির মতো। পায়ের আঙুল ও নখগুলি বড় বড়। মুখটা অসম্ভব রকমের চওড়া। মাথাটা লম্বা। চুলগুলি খুব কালো। দু’টি কানের পাশ দিয়ে তা অনেকটা পর্যন্ত নেমেছে। মাথার ওপরের দিকটা দেখলে মনে হবে, টাক আছে। তারই মাঝে কিছুটা জায়গা ছেড়ে ছেড়ে রয়েছে চুল। পুলিশকে আবদুল জানিয়েছেন, তিনি সেই অজানা ব্যক্তিকে জানান মোমো খেলেন না। খেলতেও চান না। এটি শোনার পরেই হোয়াটস্অ্যাপ নম্বরে ফোন আসে বলে আবদুলের দাবি। প্রথম দু’বার না ধরলেও তৃতীয়বার ফোন ধরেন। বীভৎস চিৎকার এবং অন্য একটি ভাষায় কিছু সময় কথা বলার পরে ফোন কেটে যায়। আবদুলের দাবি, ‘‘এর পরে আমার নাম, ঠিকানা, দোকানের নাম, ভাইয়ের নাম, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিবরণ সব কিছুই নিখুঁত ভাবে বলতে থাকলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের টাকা অন্যত্র সরিয়ে নেন।’’
প্রশ্নোত্তর পর্ব এর পরেও চলতে থাকে বলে ওই ব্যবসায়ীর দাবি। এর মধ্যেই ওই নম্বর নাকি জানায়, আসলে মোমো বা এই জাতীয় কোনও ব্যাপার নেই, তারা ‘গ্যাং-হ্যাকার’।
আবদুলের ফোন, ফেসবুক, হোয়াটস্অ্যাপ সব কিছুই হ্যাক করা হয়েছে বলে জানায়। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে টাকা চাওয়া হয়েছে বলেও আবদুলের দাবি। ওই ব্যবসায়ীর কথায়, ‘‘কথা মতো কাজ না করলে খুন করার হুমকি দেয়। সোমবার সকালেও ১০টা ৫৩ মিনিটে আবারও মেসেজ আসে। কিন্তু, উত্তর দিইনি। সবই পুলিশকে জানিয়েছি।’’
এখানেই ধন্দে রয়েছে পুলিশ। এটা মোমো নাকি মারণ-গেমের নাম করে টাকা হাতানোর ছক, ভাবাচ্ছে পুলিশকে। আবদুলের অবশ্য দাবি, স্থানীয়দের কারও সঙ্গে তাঁর শত্রুতা নেই। কাউকে সন্দেহও করছেন না। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। সব সম্ভবনাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy