দোলের পর দিন শান্তিনিকেতনে সোনাঝুরি খোয়াই বনে পড়ে আছে প্লাস্টিকের স্তুপ। মঙ্গলবার এই ছবি ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে।
বিশ্বভারতী বসন্ত উৎসব না করলেও বসন্ত উৎসবের নামে তাণ্ডব, প্রকৃতির ধ্বংস সবই চলল সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটে। তা নিয়ে সমাজমাধ্যমে সরব হয়েছেন প্রকৃতিপ্রেমী মানুষজন। এ ভাবে উৎসবের নামে প্রকৃতি নিধন চলতে থাকলে আগামী দিনে আর প্রকৃতি বলে কিছু থাকবে না বলেও মত প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে অনেককেই।
গত বছরের মতো এ বারও বিশ্বভারতী বসন্ত উৎসব করেনি। তাতেও দোলের দিন শান্তিনিকেতনে পর্যটকে আসার কোনও ভাঁটা পড়তে দেখা যায়নি। বরং অন্য বছরের মতোই ভিড় উপচে পড়েছিল বোলপুর শান্তিনিকেতন। সোনাঝুরির হাট, কোপাই নদীর পাড়, সৃজনী শিল্প গ্রাম থেকে শুরু করে শান্তিনিকেতনের সর্বত্রই সোমবার দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে জমজমাট ছিল। অসংখ্য লোকের ভিড় ছিল। সোনাঝুরির পাশাপাশি বোলপুর শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিশ্বভারতীর আদলে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করা হয়েছিল। তবে পর্যটকদের একটি বড় অংশ সকাল থেকেই ভিড় জমিয়েছিলেন শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটে। সেখানেই নিজেদের মতো করে নাচ, গান, আড্ডার মাধ্যমে রং খেলায় শামিল হয়েছিলেন তাঁরা।
দেদার আবির খেলা, খাওয়া-দাওয়া আড্ডার সঙ্গে চলে পরিবেশ দূষণও। এর ফলে হাটের বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টিক, শালপাতার বাটি কাগজের ঠোঙা, চিপসের প্যাকেট, জলের বোতল, আবিরের প্যাকেট সহ বিভিন্ন আবর্জনায় ভরে ওঠে সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটের বিভিন্ন অংশ। সোনাঝুরির ভিতরে থাকা রিসোর্ট এর পিছন দিকের অংশগুলিও আবর্জনায় ভরে ওঠে। শহরবাসীর অভিযোগ, উৎসব শেষ হলেও পূর্বের অবস্থায় এখনও ফিরিয়ে আনা যায়নি সোনাঝুরিকে।
এর আগেও একইভাবে বর্ষশেষ এবং বর্ষবরণের সময় আনন্দ উপভোগ করতে গিয়ে প্রকৃতি নিধন চলেছে সোনাঝুরিতে। অনেকেই বলছেন, ঠিক মতো নজরদারি ও শাস্তির বিধান না থাকার কারণে বারবার এ ভাবে পরিবেশ নিধন হয়ে চলেছে। পরিবেশপ্রেমী সুমিত্রা খান বলেন, “সোনাঝুরির প্রকৃতি ও পরিবেশ দিন দিন বিপন্ন হয়ে পড়ছে। এখনও যদি মানুষ না সচেতন হন তাহলে আগামীদিনে সোনাঝুরির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য চিরতরে বিনষ্ট হবে।” একই কথা শোনা গিয়েছে আরেক পরিবেশ প্রেমী উর্মিলা গঙ্গোপাধ্যায়ের মুখেও। তিনি বলেন, “দিনের পর দিন যেভাবে সোনাঝুরিতে প্রকৃতি নিধন চলছে, তা সত্যিই উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দোল উৎসব উপলক্ষে সোমবার সেখানে প্রকৃতির উপর যে তাণ্ডব চলেছে তা মেনে নেওয়া যায় না। অবিলম্বে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা উচিত।”
হাট কমিটির সম্পাদক তন্ময় মিত্র বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। এ বিষয়ে আমরা দ্রুত পুরসভার সহযোগিতা নিয়ে সাফাই অভিযানে নামব।” পুরপ্রধান পর্ণা ঘোষ বলেন, “হাটকে যাতে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় তার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা চালাব।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy