কুলদেবীর মন্দিরে। নিজস্ব চিত্র
রাবণ বধের জন্য সমুদ্র তীরে রামচন্দ্র যে দিন অকাল বোধন করেছিলেন, তিথি-নক্ষত্র মিলিয়ে সেই ক্ষণে পুজো শুরু হল পঞ্চকোটে। সেই রাজা নেই। রাজত্বও নেই। এমনকী সাবেক মানভূমও আজ ইতিহাসের পাতায়। শুধু প্রতি শরত যেন বিনিসুতোয় গেঁথে দিয়ে যায় গল্পটা।
পঞ্চকোট রাজবাড়ির বর্তমান সদস্যরা জানাচ্ছেন, কাশীপুর ওই রাজবংশের শেষ রাজধানী। ১৮৩২ সালে কেশরগড় থেকে কাশীপুরে স্থানান্তরিত হয়েছিল পঞ্চকোটের সদর। সেই থেকে বংশের প্রথা মেনে কাশীপুরের দেবীবাড়িতে পুজো হয়ে আসছে। রাজবংশের উত্তরপুরুষ সোমেশ্বরলাল সিংহদেও বলেন, ‘‘রামচন্দ্র রাবণ বধের জন্য এই দিন থেকেই ষোলো কল্পের পুজো শুরু করেছিলেন। আজও সেই প্রথা মেনে আমরাও রামচন্দ্রের বংশধর হিসেবে পঞ্চকোটে দেবীর আরাধনা করি।’’
তিনি জানাচ্ছেন, সেই সময় পঞ্চকোটের সদর ছিল গড়পঞ্চকোটে। এখন সবাই জায়গাটা চেনেন পঞ্চকোট পাহাড় বলে। পঞ্চকোটের মহারাজা কল্যাণশেখরের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল রাজা বল্লাল সেনের পালিতা কন্যা সাধনার। কথিত আছে, বিয়ের পর সাধনা তাঁর আরাধ্য দেবী শ্যামারূপাকে নিয়ে পঞ্চকোটে আসছিলেন। পথে ক্লান্ত হয়ে একটা জায়গায় দেবীকে নামিয়ে রাখেন। তার পরে হাজার চেষ্টাতেও আর তুলতে পারেন না! সাধনা কেঁদে আকুল। স্বপ্নের ঘোরে যেন এলেন দেবী। জানালেন, তিনি সেখানেই থাকবেন। সাধনার স্বামীর নাম অনুসারে তাঁর হবে কল্যাণেশ্বরী। কথিত আছে, দেবীর নির্দেশেই পঞ্চকোটে তাঁর চতুর্ভূজা রূপের নাম হয় রাজরাজেশ্বরী।
পঞ্চকোট রাজবংশের এই মন্দিরের পূজারি গৌতম চক্রবর্তী বলছিলেন, ‘‘অন্য পুজোর থেকে এই পুজোর পদ্ধতি খানিকটা আলাদা। এখানে গুপ্তমন্ত্রে মায়ের পুজো হয়।’’ সোমেশ্বরলাল সিংহ দেওয়ের কথায়, ‘‘স্বপ্নাদেশে পাওয়া শ্রীনাদ মন্ত্রে মায়ের পুজো হয়। ভূর্জপত্রে সেই মন্ত্র লেখা আছে।’’
বংশের প্রাচীন প্রথা মেনে, আগমনী গানের সুরে বুধবার রাজবংশের ঠাকুর দালান দেবী বাড়িতে পুজো শুরু হয়েছে। বংশের অন্য এক উত্তর পুরুষ ভগবতীপ্রসাদ সিংহ দেও বলেন, ‘‘জিতাষ্টমীর পরের দিন থেকেই এখানে দুর্গাপুজো শুরু হয়ে গেল। চলবে ষোলো দিন ধরে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy