Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
উত্তপ্ত শালবাদরা

পুড়ল ডাম্পার, বৈঠকে প্রশাসন

এ বার ডাম্পারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আদিবাসী গাঁওতার বিরুদ্ধে। গাঁওতা অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শালবাদরা বাইপাস রাস্তার উপর শুলুঙ্গা এলাকায়।

আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকল কর্মীরা। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।

আগুন নেভাতে ব্যস্ত দমকল কর্মীরা। সোমবারের নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রামপুরহাট ও সিউড়ি শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:১৯
Share: Save:

এ বার ডাম্পারে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল আদিবাসী গাঁওতার বিরুদ্ধে। গাঁওতা অবশ্য এমন অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটে শালবাদরা বাইপাস রাস্তার উপর শুলুঙ্গা এলাকায়। রামপুরহাট মহকুমা শাসক সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’

পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সদস্য সফিউল আলম জানান, সরকারী অনুমোদন প্রাপ্ত পাথর খাদান থেকে পাথর কারখানায় নিয়ে আসা হচ্ছিল। পথে চালককে মারধর করে ডাম্পার থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়। চালকের কাছে থাকা মোবাইলও কেড়ে নেওয়া হয়। পরে খবর পাই পাথর ভর্তি ডাম্পারটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, এ দিনই পাথর শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক ভাবে কাজ চালানোর দাবিতে শ্রমিকরা এলাকায় জমায়েত করেছিলেন। দুপুরে পাথর ভর্তি ডাম্পারে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনার পরে শ্রমিক অসন্তোষ আরো তীব্র আকার ধারণ করে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।

প্রসঙ্গত, জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশের পরে জেলায় অবৈধ পাথর খাদান বন্ধ। প্রশাসনের হিসাবে শালবাদরা এলাকার মোট ৪৭টি পাথর খাদানের মধ্যে বন্ধ ৪৬টি। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দা এবং গাঁওতা নেতৃত্বের দাবি, কাগজেকলমে বন্ধ থাকলেও পাথর খাদানগুলি চালু রয়েছে। গাঁওতা নেতা সুনীল সরেন বলেন, ‘‘যেখানে সরকারি ভাবে পাথর খাদান বন্ধ থাকার কথা, সেটা বন্ধ নেই। তা নিয়েই দু’পক্ষের বিরোধ। সেখানে গাড়িতে আগুন লাগানো হয়ে থাকতে পারে।’’ গাঁওতা নেতৃত্বের দাবি, পাথর খাদান মালিকদের উস্কানিতে কিছু লোক খাদান খোলার পক্ষে রয়েছে। বিরোধ তাঁদের সঙ্গেই।

যদিও শালবাদরা পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সম্পাদক সুখেন্দু রায়ের দাবি, সরকারী নিষেধাজ্ঞা মেনে এলাকায় পাথর খাদান বন্ধ আছে। যে সমস্ত পাথর ভাঙা কারখানার মালিকের কাছে পুরনো পাথর মজুত আছে তাঁদের কারখানা চালু আছে। আবার কেউ কেউ সরকারি অনুমোদন প্রাপ্ত পাথর খাদান থেকে পাথর নিয়ে এসে কারখানা চালু রেখেছেন। এক্ষেত্রেও ডাম্পারে পাথর নিয়ে আসার সময় আদিবাসী গাঁওতার সদস্যরা আগুন ধরিয়ে দেন। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘সম্প্রতি পাথর ভর্তি লরির কাঁচ ভেঙে দেওয়ার পরে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে অভিযোগ হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’

এ দিকে ঘটনার পরে সোমবার জেলা প্রশাসন সঙ্গে পাথর শিল্পাঞ্চলের সমস্যা নিয়ে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে আদিবাসী গাঁওতা নেতা রবিন সোরেন-সহ পাঁচামি এলাকার পাথর ব্যবসায়ী মালিক সমিতি উপস্থিত ছিলেন। সেখানে শালবাদরা বা অন্যান্য এলাকার পাথর শিল্পাঞ্চলের মালিকদের ডাকা হয়নি বলে অন্যান্য পাথর ব্যবসায়ীরা জানান। বৈঠক চলাকালীন শালবাদরা প্রসঙ্গে রবিনকে প্রশ্ন করা হয়। তিনি বলেন, ‘‘আমি ঘণ্টাখানেক ধরে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে আছি। শালবাদরা এলাকায় কী হয়েছে, আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।’’

এ দিন ঘটনার দু’ঘণ্টা পরে এলাকায় দমকল পৌঁছায়। ততক্ষণে ডাম্পারটির সামনের অংশ সম্পূর্ণ পুড়ে গিয়েছে। এলাকায় পুলিশ পৌঁছলেও কেউ গ্রেফতার হয়নি। পুলিশে লিখিত অভিযোগও হয়নি।

এ দিকে, এলাকার বিধায়ক তথা মন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘শালবাদরায় মালিক পক্ষ কেউ খাদান চালাচ্ছেন না। কিন্তু জীবিকার দাবিতে কিছু লোক আন্দোলন করছেন বলে জানি।’’ সেই রেশ ধরেই জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল বলেন, ‘‘ওখানে পাথর খাদান অফিসিয়ালি বন্ধ আছে। একপক্ষ, যারা জীবিকার তাগিদে কাজ করছেন। আর যারা বন্‌ধের পক্ষে বিবাদ তাদের মধ্যে। আজ কি হয়েছে, খোঁজ নিয়ে বলতে হবে। তবে, পরিস্থিতি সামলে নেবে প্রশাসন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Salbadra Dumper Fired
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE