ক্যাম্প থেকে দেওয়া হচ্ছে রেশন সামগ্রী। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারে তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাজ্যে তৃণমূলের সরকারের ফিরলে ‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচি চালু করা হবে। ভোটে জিতে মমতা তৃতীয় বারের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পরেই শুরু হয়েছিল সেই কর্মসূচি রূপায়ণের তোড়জোড়। সেই কর্মসূচির পরীক্ষামূলক সূচনা হল বৃহস্পতিবার। বীরভূম জেলার সিউড়ির হাটজানবাজারে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসাবে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হল।
‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচি শুরু করা নিয়ে রাজ্যের খাদ্য প্রতিমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি গত মঙ্গলবার রাজ্য খাদ্যভবনে খাদ্য সচিব পারভেজ সিদ্দিকি-সহ অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দ্রুত এই কর্মসূচি চালু করার। প্রথমে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে এই কর্মসূচি রাজ্যের ২৮টি জায়গায় শুরু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই তালিকাতেই ছিল সিউড়ির হাটজানবাজারের নাম।
‘দুয়ারে রেশন’ কর্মসূচির মাধ্যমে নির্দিষ্ট এলাকার রেশন ডিলারের কাছ থেকে রেশন সামগ্রী গাড়ি করে নিয়ে গিয়ে পূর্বনির্দিষ্ট একটি জায়গায় ক্যাম্প করে বিতরণ করা হচ্ছে। যেখানে ক্যাম্প করা হচ্ছে, তার নিকটবর্তী এলাকার গ্রাহকেরা আসছেন এবং লাইনে দাঁড়িয়ে রেশন সামগ্রী বাড়ি নিয়ে যাচ্ছেন। অর্থাৎ, একেবারে বাড়ির দরজায় রেশন সামগ্রী পৌঁছাবে না, পাড়ার ক্যাম্প থেকেই রেশন সামগ্রী সংগ্রহ করতে হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে দূরে রেশন দোকান যাওয়া থেকে কিছুটা সুরাহা হচ্ছে গ্রাহকদের। স্থানীয় বাসিন্দা বৃহদবালা ভক্ত বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে দু’জায়গায় ঘুরতে হয়েছে বলে কিছুটা অসুবিধা হয়েছে। তবে নতুন ব্যবস্থায় পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের সুবিধা হবে।’’
অন্যদিকে, রেশন ডিলারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ক্যাম্প করে রেশন সামগ্রী বিতরণ করা হলেও যদি দেখা যায় কারও বাড়িতে রেশন সামগ্রী বয়ে করে নিয়ে যাওয়ার মতো কেউ নেই, সে ক্ষেত্রে ডিলারের কর্মচারীরাই সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের বাড়িতে রেশন পৌঁছে দেবেন। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের স্থানীয় এরিয়া ইনস্পেক্টর সৃজিন মণ্ডল বলেন, ‘‘ক্যাম্প নয়। আমরা বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই কাজে নেমেছি। প্রাথমিক পর্যায়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিভিন্ন ধরনের চাল, গম এবং আটা বিতরণের কাজ শুরু হয়েছে।’’
বীরভূমের মতো বৃহস্পতিবার থেকে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প শুরু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতেও। বারাসতের বিবেকানন্দ আদর্শ বিদ্যাপীঠে প্রায় ২৫ জন স্থানীয় বাসিন্দাকে নিয়ে প্রকল্পের পরীক্ষামূলক সূচনা করেন পুর প্রশাসক সুনীল মুখোপাধ্যায়। এমন উদ্যোগে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি মতো ঝাড়গ্রামেও বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প। বৃহস্পতিবার বিনপুর ২ নম্বর ব্লকের সাতবাঁকি গ্রামের ৩৫ টি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয় রেশন সামগ্রী। সাতবাঁকি গ্রামের বাসিন্দাদের ৮ কিলোমিটার দূরে রতনপুর থেকে রেশন আনতে হত। নয়া প্রকল্পের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি রেশন পৌঁছে যাওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা।
দক্ষিণবঙ্গের মতো ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের দক্ষিণ দিনাজপুরেও। বৃহস্পতিবার ওই জেলার হিলির সালাশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই প্রকল্পের সূচনা হয়। হাতের কাশে রেশন পেয়ে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। সত্যেন মাহাতো নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বললেন, ‘‘বাড়ির কাছে রেশন পাচ্ছি। নির্বাচনের আগে দিদি বলেছিলেন দুয়ারে পৌঁছে দেবে। উনি কথা রেখেছেন। আমরা এতে খুশি।’’
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত কুমার রায় বলেন, ‘‘দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নির্দেশে পরীক্ষামূলক ভাবে হিলির সালাশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গণবণ্টনের মাধ্যমে মানুষের হাতে রেশন তুলে দেওয়া হচ্ছে। পরিমাপ এবং গুণগত মান বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী বিলি করা হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy