তালড্যাংরার বিবড়দা হাটতলা ময়দানে। ছবি: শুভেন্দু তন্তুবায়।
রাজ্য সরকারের সাফল্যের ‘মাইলফলক’ হিসেবে তৃণমূলের নেত্রী-নেতারা জঙ্গলমহলের উন্নয়নের প্রসঙ্গ তোলেন। বিধানসভা ভোটের মুখে, বাঁকুড়ার তালড্যাংরায় সভা করতে গিয়ে জঙ্গলমহলের উন্নয়নকেই চ্যালেঞ্জ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বৃহস্পতিবার বিবড়দায় এলাকার ওই সভা থেকে তিনি কাঁচা রাস্তা থেকে শুরু করে কর্মসংস্থানের প্রশ্নে সরব হলেন তৃণমূলের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উড়িয়ে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়েছে তৃণমূল শিবিরও।
দিনভর বাঁকুড়া জেলার নানা জায়গায় একাধিক কর্মসূচি ছিল দিলীপবাবুর। সকালে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা মোড়ে চা-চক্রের পরে, ছাতনার কমলপুরে গিয়ে ছাতনা বিধানসভার কর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেন। দুপুরে বিবড়দার সভায় দিলীপবাবু দাবি করেন, ‘‘তৃণমূলের আক্রমণে আমাদের অনেক কর্মী মারা গিয়েছেন। তাঁদের চক্রান্তে আমাদের বাড়িছাড়া হতে হয়েছে, জেলে যেতে হয়েছে। তাই এই ভাইরাসকে বিজেপি-ভ্যাকসিন জঙ্গলমহল ছাড়া করবেই। আপনারা পঞ্চায়েত নির্বাচনে খানিকটা করেছিলেন, লোকসভা ভোটে বাকিটা করেছেন। এক-দু’মাসের মধ্যে ঘাসফুল শুকিয়ে যাবে। বিধানসভা ভোট পর্যন্ত আর দেখতে পাবেন না।”
তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক সমীর চক্রবর্তী বলেন, “দিলীপবাবু এ দিন যে ল্যাম্পপোস্টের নীচে দাঁড়িয়ে সভা করে গেলেন, সেটা আমি বিধায়ক তহবিল থেকে লাগিয়েছি। যে ঝাঁ চকচকে রাস্তা দিয়ে সভাস্থলে আসা-যাওয়া করলেন, সেটাও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বানিয়েছে। জঙ্গলমহলে জল থেকে রাস্তাঘাট— সর্বত্র আমূল বদলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
যদিও দিলীপবাবুর অভিযোগ, জঙ্গলমহলে এখনও বহু রাস্তা লালমাটির। বহু নদীতে সেতু নেই। জঙ্গলমহলের ছেলেমেয়েদের চাকরি নেই, পড়াশোনা নেই। তাঁর প্রশ্ন, কেন জঙ্গলমহলের মানুষকে কেন্দুপাতা, শাল পাতা সংগ্রহ করে বেঁচে থাকতে হবে! কেন এখানকার ছেলেমেয়েদের চাকরির জন্য ভিন্ রাজ্যে যেতে হবে! তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখানকার মানুষ যখন চাকরি না পাওয়ার জন্য আন্দোলন করেছেন, তখন তাঁদের হয় মাওবাদী বলে হয় গুলি করা হয়েছে, নয়তো জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকে আবার তাদের বার করে চাকরির নামে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে।”
তালড্যাংরার তৃণমূল বিধায়ক সমীরবাবু দাবি করেন, ‘‘দিলীপবাবুর সাহস থাকলে তালড্যাংরা মোড়ে আসুন। সেখানে প্রকাশ্যে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের রিপোর্ট কার্ড মানুষকে দেখানো হোক। কে কাজ করেছে, সেটা জনতাই বিচার করবেন।” তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপির বাঁকুড়ার সাংসদ সুভাষ সরকার এখনও একটি খুঁটি জঙ্গলমহলে পোঁতেননি।’’
সুভাষবাবুর পাল্টা টিপ্পনী, ‘‘সমীরবাবু থাকেন কলকাতায়। এখানে কী কাজ করছি, তিনি জানবেন কী করে? জঙ্গলমহলে কেন্দ্রীয় সরকার কী করছে তা জানতে গেলে, তাঁকে মাঝেমাঝে ‘পরিযায়ী পাখি’র মতো জঙ্গলমহলে আসতে হবে।’’
তবে এ দিনের সভার ভিড়ে উজ্জীবিত বিজেপি কর্মীরা। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের দাবি, কেবল তালত্যাংরা বিধানসভাভিত্তিক সভা হলেও, ভিড় হয়েছিল ১৫ হাজার মানুষের। যদিও পুলিশের দাবি, হাজার পাঁচেক মানুষ ভিড় করেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy