দেওয়ানগঞ্জে সভা। —নিজস্ব চিত্র।
ডেউচা-পাঁচামিতে প্রস্তাবিত কয়লাখনির বিরুদ্ধে আদিবাসী জনজাতি ও ভূমিরক্ষা কমিটির পাশে দাঁড়াল সেভ ডেমেক্র্যাসি। শনিবার দেওয়ানগঞ্জে সভা ছিল ওই আদিবাসী সংগঠনের। তাতে সেভ ডেমোক্র্যাসির পক্ষে অংশ নেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান। বিকাশের বক্তব্য নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। পাশাপাশি পুলিশি অনুমতি না নিয়ে সভা আয়োজন করায় অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
শনিবার দেওয়ানগঞ্জের ওই সভায় অবশ্য আদিবাসীদের উপস্থিতির সংখ্যা কম ছিল। ওই সভার সমর্থনে সেভ ডেমোক্রাসি ফোরামের উপস্থিত ছিলেন বিকাশরঞ্জন, মান্নান-সহ অনেকে। সেখানে বিকাশ হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘পুলিশকর্তারা আইন মেনে চলুন। আইনের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমরা সমস্ত নথি জোগাড় করছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘আদানির সঙ্গে মমতার যোগাযোগ করার উদ্দেশ্যই এই কয়লাখনি। এই লোকগুলিকে উচ্ছেদ করে কুলি বানানো হবে। এদের কাজ দেওয়া হবে না। কারণ বিনিয়োগকারীরা দক্ষ শ্রমিক আনবেন। এটা আদিবাসীদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত। তৃণমূল ভয় দেখাচ্ছে এঁদের। তাঁদের উপর আক্রমণ হতে পারে। আমরা অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি, তৃণমূল নিজেদের মুনাফার জন্য এই কাজ করতে পারে। ছোটখাটো ধর্ষণের ঘটনা ঘটিয়ে আতঙ্কও ছড়ানো তাঁদের পরিকল্পনা। বিভিন্ন ঘটনা আছে। তাই আত্মরক্ষার দায়িত্ব লাঠি হাতেই তাঁদের নিজেদেরই নিতে হবে।’’
অন্য দিকে মান্নানের অভিযোগ, ‘‘সরকার কয়লাখনি তৈরি করার জন্য আদিবাসীদের উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র করছে। আমরা মনে করি এটা ন্যায্য লড়াই, অধিকার আদায়ের লড়াই। মুখ্যমন্ত্রী এক সময় সিঙ্গুর নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন। অথচ এখন দ্বিচারিতা করছেন। আমরা আদিবাসীদের উচ্ছেদ করে শিল্পের পরোক্ষে নই। এটা শিল্প করার নাম করে কিছু লোককে পাইয়ে দেওয়া।’’
বিকাশ-মান্নানের বক্তব্য নিয়ে কটাক্ষের সুরে অনুব্রত বলেন, ‘‘সিপিএম ৩৪ বছরে একটাও শিল্প করেছে? তাদের বন্ধ করা ছাড়া আর কোনও ভাষণ থাকতে পারে? মান্নান কোনও উপকার করেছে? বিকাশবাবু যে সুরে কথা বলবেন মান্নানবাবুও সেই সুরে কথা বলবেন। কংগ্রেস দলটাকে বিক্রি করে দিয়েছেন মান্নানবাবুরা। আর বিকাশবাবু তো গোল হয়ে বাড়ি চলে গেলেন। এর পরেও লজ্জা নেই?’’ বিকাশের ‘ডান্ডা ধরা’র বার্তা নিয়ে অনুব্রতর কটাক্ষ, ‘‘লাঠি ধরবেন তো প্রস্তাবিত কয়লা খনি এলাকার লোক। কিন্তু যেখানে কয়লা খনি হবে সেখানকার লোক কোথায়? সকলেই তো বাইরের। শূন্য হয়ে যাওয়ার পর আর ডান্ডা ধরার লোক আছে? একটা বিধানসভায় জিততে পেরেছে? লোকে হাসছে না? এ নিশ্চয়ই মানসিক কোনও রোগ হয়েছে। পাগল হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।’’
শনিবারের সভা নিয়ে বীরভূমের পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘এই সভার জন্য পুলিশের কাছ থেকে কোনও রকম অনুমতি নেওয়া হয়নি। সে কারণে অংশগ্রহণকারীদের নামে মামলা রুজু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত কোভিড বিধিকে সামনে রেখে জমায়েত করার অভিযোগে মামলা রুজুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy