Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

জেলাশাসক বোঝানোয় টিকায় আগ্রহ

স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছতে যানবাহনের কোনও ব্যবস্থা নেই।

অযোধ্যা পাহাড়ে ধানচাটানি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে শিবির।

অযোধ্যা পাহাড়ে ধানচাটানি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে শিবির। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২১ ০৭:০৮
Share: Save:

প্রত্যন্ত গ্রামের বয়স্ক ও বিশেষ ভাবে সক্ষম মানুষদের টিকা দিতে জেলা প্রশাসনের তরফে শুরু হয়েছে ‘সহজে টিকা’ কর্মসূচি। সে কর্মসূচিতে রবিবার অযোধ্যা পাহাড়ের ধানচাটানি গ্রামে টিকাকরণ শিবির আয়োজিত হয়। তবে শুরুতে গ্রামের কেউই টিকা নিতে আসেননি। পরে অবশ্য জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের হস্তক্ষেপে গ্রামের কয়েকজন টিকা নিয়েছেন। এমন ঘটনা এড়াতে টিকাকরণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রচারে জোর দেওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আড়শা ব্লক সদর শিরকাবাদের ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে কম-বেশি ২৫ কিলোমিটার দূরে থাকা ধানচাটানিতে পৌঁছতে যানবাহনের কোনও ব্যবস্থা নেই। নিজস্ব গাড়ি অথবা হেঁটেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যেতে হয়। তাই গ্রামের বেশির ভাগ বয়স্ক মানুষজন টিকা নিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্রমুখী হননি বলে প্রশাসন সূত্রে খবর।

এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ প্রতিষেধক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীরা ধানচাটানি গ্রামে পৌঁছন। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক-সহ প্রশাসনের আধিকারিকেরাও। শিবির করা হয় স্থানীয় প্রাথমিক স্কুলে। তবে শিবির শুরুর পরে অনেকটা সময় কাটলেও কেউ টিকা নিতে শিবিরে আসেননি। দু-তিন জনকে অনুরোধ জানানো হলেও কাজ হয়নি।

শেষমেষ জেলাশাসক স্কুলের অদূরে মাটিতে ত্রিপল পেতে গ্রামের মানুষজনের সঙ্গে আলোচনায় বসেন। উঠে আসে গ্রামের নানা সমস্যার প্রসঙ্গ। আলোচনা চলাকালীনই টিকার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। কেন টিকা নেওয়া জরুরি, তা-ও বোঝান। এর পরেই বেশ কয়েকজন টিকা নিতে রাজি হন।

গ্রামের বাসিন্দা রাজীবলোচন মান্ডি বলেন, ‘‘গ্রামে করোনার টিকা দেওয়া হবে, এটা আমাদের ভাবনাতেও ছিল না। গ্রাম থেকে শিরকাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র অনেকটা দূরে। যানবাহনের ব্যবস্থা নেই। হয় সাইকেল না হয় হেঁটে যেতে হয়। তিন ঘণ্টা হেঁটে যাওয়া অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। আর সাইকেলও তো সবাই চালাতে পারবে না। এত অসুবিধার মধ্যে শিরকাবাদে গিয়ে কী ভাবে টিকা নেওয়া সম্ভব?’’

তাঁর সংযোজন, ‘‘এর পাশাপাশি, টিকা নিয়ে গ্রামের মানুষজনের মধ্যে একটা ভয়ও কাজ করছে। তবে এ দিন জেলাশাসকের কথা শুনে অনেকেরই ভয় কেটেছে। কেউ এগোচ্ছিল না দেখে আমিই বাবাকে প্রথম টিকা দিতে নিয়ে গিয়েছি।’’ টিকা নেওয়ার পরে ষাট ছুঁইছুঁই মনোহর মান্ডি বলেন, ‘‘গ্রামে কারও করোনা না হলেও টিকা নিলাম। এত মানুষ তো নিচ্ছেন। জেলাশাসকের কথা শুনেও মনে হল, টিকা নেওয়া দরকার।’’ টিকা নিয়ে খুশি, জানান ষাটোর্ধ্ব রামেশ্বর মুর্মু, গোপেশ্বর মুর্মুরাও।

পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘গ্রামের সমস্যা নিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলাম। সেখানে জীবিকার কথার মাঝেই জীবনের কথা এসে পড়ে। মহামারি রুখতে হলে টিকা তো নিতে হবে। যে কোনও কারণে হোক, এ দিন প্রথমে কেউ টিকা নিতে তেমন আগ্রহ দেখাননি। পরে নিজেরাই টিকা নিতে এগিয়ে এসেছেন। এটা ভাল লক্ষণ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus COVID19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy