বড় ম্যাচে বল দখলের লড়াই। ছবি: এক্স (টুইটার)।
কলকাতা ডার্বি মানেই সমর্থকদের গর্জন। বাক্যুদ্ধ। ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের হাজার হাজার সদস্য, সমর্থক ভিড় করেন গ্যালারিতে। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন বা শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম, যেখানেই দু’দল মুখোমুখি হোক গ্যালারি ফাঁকা থাকে না কখনও। অথচ শনিবার গুয়াহাটির ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে দেখা গেল ঠিক উল্টো ছবি। গ্যালারির প্রায় সবটাই ফাঁকা থাকল ৯০ মিনিট ধরে। বড় ম্যাচের গ্যালারির এমন ম্যারম্যারে ছবি অচেনাই শুধু নয়, অপ্রত্যাশিতও। ২৩ হাজার দর্শকাসনের পাঁচ শতাংশও ভরল না!
১৯৯৭ সালের ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালের কথা মনে রয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের। তৎকালীন ইস্টবেঙ্গল কোচ প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মোহনবাগান কোচ অমল দত্তর বাক্যুদ্ধ আগে থেকেই উত্তাপ বাড়িয়ে দিয়েছিল সেই ডার্বির। ডায়মন্ড ম্যাচে যুবভারতীর গ্যালারি ভরিয়ে ছিলেন দু’দলের ১ লাখ ৩১ হাজার ৭৮১ জন সমর্থক। ২৭ বছর ধরে সেই রেকর্ড অক্ষত থাকলেও সাধারণ ভাবে দু’দল মিলিয়ে অন্তত হাজার ৩৫-৪০ দর্শক মাঠে উপস্থিত থাকেন সব সময়। ভিন রাজ্যে খেলা হলেও ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচে সাত-আট হাজার দর্শক থাকেন। শনিবার গুয়াহাটিতে সেই ছবিও দেখা গেল না। খেলা শুরুর সময় গ্যালারিতে দর্শক সংখ্যা ছিল মেরেকেটে ২০০ থেকে ২৫০। পরেও সেই সংখ্যা খুব একটা বাড়েনি। ম্যাচের প্রকৃত দর্শক সংখ্যা অবশ্য জানা যায়নি।
ভারতীয় ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান লড়াইয়ের সমান জনপ্রিয় কোনও ম্যাচ নেই। অথচ আইএসএলের সেই ম্যাচেরই এমন দশা। শনিবার বড় ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল যুবভারতীতে। গঙ্গাসাগর মেলার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা সম্ভব নয় জানিয়ে বিধাননগর পুলিশের পক্ষ থেকে ম্যাচ পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আইএসএল কর্তৃপক্ষ ম্যাচের দিন পরিবর্তন না করে মাঠ পরিবর্তন করেছেন গত ৮ জানুয়ারি। অর্থাৎ ম্যাচের মাত্র তিন দিন আগে কলকাতা থেকে ম্যাচ সরিয়ে দেওয়া হয় গুয়াহাটিতে। ফলে নতুন বছরের প্রথম ডার্বির উত্তাপ নিতে পারলেন না দু’ক্লাবের সমর্থকেরা। চেষ্টা করেও শেষ মুহূর্তে ট্রেন বা বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করতে পারেনি বহু আগ্রহী সমর্থক। অনেকেই প্রিয় দলের খেলা দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যান। তাঁদের মতো সমর্থকেরাও পারেননি গুয়াহাটি যাওয়ার ব্যবস্থা করতে। আইএসএলের বড় ম্যাচ গ্যালারিতে বসে দেখলেন সাকূল্যে কয়েক শো ফুটবলপ্রেমী। যাঁদের অধিকাংশই গুয়াহাটির বাসিন্দা বা বিভিন্ন কারণে উত্তর-পূর্বের শহরটিতে রয়েছেন।
শনিবার ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ দেখতে যত মানুষ এসেছিলেন, তার থেকে বেশি দর্শক হয় টেস্ট ম্যাচেও। যা প্রতিযোগিতার ভাল বিজ্ঞাপন নয়। স্বভাবতই আইএসএল কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সমর্থকদের বঞ্চিত করে ভারতীয় ফুটবলের জনপ্রিয়তম ম্যাচের আবহ নেতিয়ে দেওয়ার দায় কর্তৃপক্ষ কি এড়াতে পারেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy