Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

তোলা চেয়ে কারখানায় বেড়া, নালিশ

জেলায় এসে বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পের পথে যাতে কোনও বাধা না আসে পুলিশ ও প্রশাসনকে তা নিয়ে সতর্ক করেন। তোলাবাজি চলবে না বলেও তিনি বারবার হুঁশিয়ারী দেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন কী করেছে? 

পথ আটকে। নিজস্ব চিত্র

পথ আটকে। নিজস্ব চিত্র

রাজদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:০১
Share: Save:

মোটা অঙ্কের টাকা তোলা চেয়ে কারখানার দরজার সামনে বাঁশের বেড়া দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে। কারখানা মালিকের অভিযোগ, সেই বেড়া সরাতে গেলে তাঁকে মারধরও করা হয়। এর জেরে গত ছ’দিন ধরে ওই কারখানায় মাল সরবরাহ বন্ধ। ব্যাহত উৎপাদন। পুরো ঘটনাটি জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানালেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই বেড়া সরানো হয়নি বলে অভিযোগ কারখানা কর্তৃপক্ষের। ওই কারখানা মালিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’। তারা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছে।

জেলায় এসে বারবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শিল্পের পথে যাতে কোনও বাধা না আসে পুলিশ ও প্রশাসনকে তা নিয়ে সতর্ক করেন। তোলাবাজি চলবে না বলেও তিনি বারবার হুঁশিয়ারী দেন। এ ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন কী করেছে?

বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস এ দিন বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিষ্ণুপুরের মহকুমাশাসককে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম। মহকুমা প্রশাসন এ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে।” আর মহকুমাশাসক (বিষ্ণুপুর) মানস মণ্ডলের দাবি, ‘‘পুলিশকে জানিয়েছি।’’ পুলিশ কী করেছে? বাঁকুড়ার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও বলেন, “ঠিক কী ঘটনা ঘটেছে, খোঁজ নিয়ে দেখছি। কেউ কারখানার রাস্তা বন্ধ করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

পাত্রসায়রের কুশব্দীপ পঞ্চায়েতের কিয়াডহরি গ্রামে ২০১৮ সাল থেকে ডিমের ‘ট্রে’ তৈরির কারখানা চালাচ্ছেন বিষ্ণুপুরের মাড়ুইবাজারের বাসিন্দা শিবু মণ্ডল। তিনি জানান, সেখানে ১২১ জন শ্রমিক কাজ করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘শনিবার কিছু লোকজন কারখানায় ঢোকার রাস্তা বাঁশের বেড়া দিয়ে আটকে লক্ষাধিক টাকা দাবি করে। বুধবার রাতে গাড়ি ঢোকানোর জন্য আমি বেড়া ভাঙতে গিয়েছিলাম। ওরা এসে মারধর করে। কোনওরকমে কারখানায় ঢুকে আত্মরক্ষা করি। সেই দিন থেকেই কারখানায় মাল সরবরাহ করার গাড়ি ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। উৎপাদনও মার খাচ্ছে।’’

তাঁর দাবি, ইতিমধ্যে তিনি পাত্রসায়র থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সে দিন তা গ্রহণ করা হয়নি। শেষে অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীরা কাজে বাধা দিচ্ছেন বলে সোমবার জেলাশাসকের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান। তারপরেও কাজ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার ফের পাত্রসায়র থানায় যান। তবে এ বার তাঁর লিখিত অভিযোগ জমা নেওয়া হয়েছে। শিবুবাবুর অভিযোগ, ‘‘অভিযোগপত্র নিলেও কোনও মামলা রুজু করা হয়েছে কি না স্পষ্ট নয়। তবে পাত্রসায়র থানার ওসি আমাকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। এখন পুলিশ কী পদক্ষেপ করে সে দিকেই তাকিয়ে আছি।”

পাত্রসায়র পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা ব্লক তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতীম সিংহ বলেন, ‘‘এই ধরনের ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে গোটা বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিচ্ছি। প্রশাসনিক ভাবেও কী করা যায়, দেখছি।’’

কিন্তু এত দিনেও সমস্যা না মেটায় পুলিশ ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ‘বাঁকুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ’-এর (শিল্প) যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর সরকার। তিনি বলেন, “শনিবার থেকে অত্যাচার চলছে। সোমবার প্রশাসনের নজরে বিষয়টি আনা হলেও শিল্পপতিকে মার খেতে হল। এ দিকে পুলিশ এফআইআর নিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পরেও এমনটা কেন হবে?” তাঁর দাবি, এই ধরনের ঘটনা ঘটলে যুবপ্রজন্ম শিল্প গড়তে কতটা এগিয়ে আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Factory extortion
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy