লোকসভার মতো রাজ্যসভাতেও দুপুরে শুরু হয়ে ভোররাত পর্যন্ত চলল ওয়াকফ বিল নিয়ে আলোচনা। ভোটাভুটির সম্ভাবনা থাকায় উপস্থিত প্রায় সব দলের সাংসদ। অধিকাংশই বয়স্ক। রাত হতেই তাঁদের খাবারের ব্যবস্থা নিয়ে উদ্যোগী হতে দেখা গেল তৃণমূলের সাংসদ দোলা সেন, কংগ্রেসের রঞ্জিতা রঞ্জনকে। যাঁরা টোস্ট, কফি ভালবাসেন তাঁদের জন্য সংসদ ভবন থেকেই ব্যবস্থা হল। যাঁরা অন্য কিছু খেতে চান তাঁদের জন্য তৃণমূল সাংসদের গাড়িতে বাইরে থেকে খাবার এল। দল নির্বিশেষে খাবার পরিবেশন করলেন দোলা সেন ও তৃণমূলের অন্য সাংসদেরা। হাসতে হাসতে বললেন, “রাজ্যসভায় এর আগেও রাত কাটিয়েছি। তবে ধর্না দিতে।” অতএব, বাইরে থেকে খাবার আনিয়ে সাংসদদের নৈশভোজের ব্যবস্থা করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তৃণমূল সাংসদদের। দোলাদের আনা খাবার খেতে দেখা যায় রাজনীতিতে বিরোধী সাংসদদেরও। রঞ্জিতা রঞ্জন রাত বারোটা নাগাদ প্রথম বেঞ্চে উপবিষ্ট দলের নেত্রী সনিয়া গান্ধীর কানে কানে কিছু বলে হাতে কিছু গুঁজে দেন। ওয়াকফ নিয়ে বিতর্ক চলাকালীন সেই খাবার খেয়েও নেন সনিয়া।

আলোচনা: ওয়াকফ বিল নিয়ে মুখরিত লোকসভা।
সম্প্রীতির সুর
সমাজবাদী পার্টির প্রেসিডেন্ট অখিলেশ সিংহ যাদব লখনউতে আয়োজন করলেন ‘হোলি-ইদ মিলন সদ্ভাব সমারোহ’। থিম, ‘আও গলে মিলে’। দলের সদর কার্যালয়েই সম্পন্ন হল এই সাম্প্রদায়িক প্রীতি সম্মেলন। উপস্থিত ছিলেন হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মেরই ধর্মগুরুরা, দলের বিভিন্ন প্রান্তের গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। সম্মেলনে মনোরঞ্জন করলেন পিয়ানোবাদক ব্রায়ান সিলাস। উত্তরপ্রদেশে নির্বাচনের আগে উভয় সম্প্রদায়ের কাছেই ইতিবাচক বার্তা পৌঁছে দিয়ে বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতিকে ঠেকাতে চাইছে এসপি, জানাচ্ছেন দলীয় নেতৃত্ব।
গরমে কাবু চিদম্বরম
আমদাবাদে কংগ্রেসের জাতীয় অধিবেশনে এসে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পালনিয়াপ্পন চিদম্বরম প্রবল গ্রীষ্মে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। সাবরমতী গান্ধী আশ্রম থেকে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডাকে সক্রিয় হতে বলেন। খবর যায় গুজরাতের বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র পটেল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হৃষীকেশ পটেলের কাছে। হৃষীকেশ নিজে হাসপাতালে চিদম্বরমকে দেখতে যান। সুস্থ হয়ে পরের দিন চিদম্বরম ফের কংগ্রেসের অধিবেশনে যোগ দেন।
বিহার সফর
ভোটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে বিহার, অতএব নেতাদের মধ্যে এখন সে রাজ্যে যাওয়ার ঢল নেমেছে। কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দর যাদব সফর করলেন মিথিলাঞ্চলে। দারভাঙায় তাঁকে স্বাগত জানানো হল ঐতিহ্যবাহী শির-বস্ত্র পাগ দিয়ে। এই পাগ বিভিন্ন রঙের স্কার্ফ দিয়ে তৈরি, মৈথিলি অলঙ্করণের মোটিফ থাকে। দারভাঙার রাজপরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সঙ্গেও দেখা করেন মন্ত্রী।
রাহুলের জিবলি
জিবলি নিয়ে মেতেছে সবাই। রাজনীতি আর বাইরে থাকে কী করে! আমদাবাদে কংগ্রেসের জাতীয় অধিবেশনে দেখা গেল কংগ্রেসের ব্যানারে রাহুল গান্ধীর জিবলি অবতার। হাতে সেই লাল মলাটের সংবিধান। গত লোকসভা নির্বাচনে এই সংবিধান হাতেই প্রচার করেছিলেন। জাতীয় অধিবেশনে পশ্চিমবঙ্গের প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকারের প্রস্তাব, রাহুল বেকারত্ব নিয়ে সরব হয়ে ভারত বাঁচাও ট্রেন যাত্রা করুন। রাহুল অবশ্য আমদাবাদে এসে জিবলি প্রজন্মের প্রতিনিধি, কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া সেলের তরুণ-তরুণীদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কংগ্রেসের আর কোন নেতাকে জিবলি অবতারে দেখা যাবে?

যুগোপযোগী: ব্যানারে রাহুলের জিবলি।
নিহত গোলাপ
সুপ্রিম কোর্টের বাগানে শেষ বসন্তের গোলাপ ফুটেছে। এক ভদ্রমহিলা এত মুগ্ধ যে, একখানি ফুল না ছিঁড়ে পারলেন না। কর্মীরা ছুটে এলেন। ফুল ছেঁড়া নিষেধ। ভদ্রমহিলা খেপে গিয়ে গোলাপের মতোই লাল। চিৎকার করে উঠলেন, সুপ্রিম কোর্ট এত মামলায় সিদ্ধান্ত না নিয়ে বসে আছে। লোকে খুন করছে। বিচার মিলছে না। সে নিয়ে কেউ কিছুই বলছে না। একটা ফুল তুললেই দোষ! তোপের মুখে সুপ্রিম কোর্টের কর্মীরাও স্তম্ভিত! উত্তর দিতে পারলেন না।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)