বিষ্ণুপুর হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র
শিশুদের জন্য ওয়ার্ড সাজিয়ে তুলছেন বিষ্ণুপুর হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা। সোমবার হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল, শিশু ওয়ার্ডের দেওয়ালে কার্টুন আঁকছেন তাঁরা। তুলির টানে হাজির হচ্ছে ‘ছোটা ভীম’, ‘টম’ আর ‘জেরি’, ‘ডোরেমন’। ওই কর্মীদের মধ্যে সন্দীপ সিংহ, চঞ্চল চন্দ, অরূপ বাউড়ি ও হারাধন ভট্টাচার্য জানান, কাজের ফাঁকে শিশুদের একটু আনন্দ দেওয়ার এই আয়োজন চলছে।
দীর্ঘদিন ধরেই বিষ্ণুপুর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড বেহাল হয়ে ছিল। বৃষ্টি হলেই জলের ঝাপটা ঢুকত ভিতরে। শয্যায় থাকা শিশু ও তাদের চিকিৎসার জিনসপত্র ভিজে যেত। বার বার অভিযোগ উঠেছে। তার পরে সম্প্রতি কাচের পাল্লা বসেছে জানালায়।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার তড়িৎকান্তি পাল বলেন, ‘‘বাচ্চাদের শরীর সুস্থ করতে ওষুধের সঙ্গে দরকার হাসিখুশি পরিবেশ। দেওয়ালের চেনা কার্টুন দেখলে ওদের ভাল লাগতে পারে। হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মীরা তাঁদের ইচ্ছার কথা জানালে আমরা রঙ-তুলির ব্যবস্থা করে দিই।’’
সন্দীপ, হারাধন, অরূপরা কেউ হাসপাতালের ‘স্টোর রুম’ থেকে যথাস্থানে ওষুধ পৌঁছে দেন। কেউ খাতায় হিসেব লেখেন। তাঁরাই এখন শিল্পীর ভূমিকায়। তাঁরা জানান, করোনা-পরিস্থিতিতে এখন হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেশ কিছুটা কমেছে। সেই সুযোগেই দেওয়ালগুলি সাজিয়ে তোলার কথা মাথায় আসে। আঁকতে তাঁদের অনেকেই জানতেন। তবে চাকরি করতে গিয়ে চর্চায় ছেদ পড়েছিল। এই ক’দিনে সেটাই ঝালিয়ে নিয়ে কাজে নেমে পড়েছেন।
হারাধনবাবু বলেন, “আজকাল কম-বেশি সব বাচ্চাই টিভিতে কার্টুন দেখতে ভালবাসে। বাড়ি ছেড়ে অসুস্থ শরীরে এই হাসপাতালের একঘেয়ে পরিবেশে থাকতে হয়। সেই সব ভেবেই আমরা শিশু ওয়ার্ডের দেওয়ালগুলিতে বিভিন্ন কার্টুন আঁকার প্রস্তাব দিয়েছিলাম।’’
সোমবার বিষ্ণুপুরের মড়ার থেকে অসুস্থ শিশুদের নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন বিপাশা ঘোষ, পিয়ারডোবা থেকে এসেছিলেন মুনমুন চট্টোপাধ্যায়, গড়বেতা থেকে সোমা মণ্ডল। তাঁরা বলেন, “দেওয়ালে ছবি দেখে বাচ্চারা খুব খুশি। সময় পেলেই তো বাড়িতে টিভি খুলে কার্টুন দেখতে বসে যায়। এখানে টিভি না পেলেও ছবিতেই ওদের মন অনেকটা ভাল হয়ে গিয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy