ফের ইলামবাজারের তৃণমূল দফতরে সিবিআই। নিজস্ব চিত্র
ইলামবাজারে বিজেপি কর্মী গৌরব সরকারের খুনের ঘটনায় এ বার এক তৃণমূল নেতা তথা ইলামবাজার পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষকে দুর্গাপুরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করল সিবিআই। পাশাপাশি মঙ্গলবারের পর বুধবারও ইলামবাজারের তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন সিবিআই আধিকারিকেরা।
সোমবার রাতেই ইলামবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে ঢুকে বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পাশাপাশি দলের ব্লক সভাপতি, সহ ব্লক সভাপতি ও পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষের নাম ফোন নম্বর নথিভূক্ত করেন সিবিআইয়ের কর্তারা। বুধবার পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ রবি মুর্মুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুর্গাপুরে থাকা সিবিআইয়ের অস্থায়ী কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। সূত্রের খবর, এ দিন ওই তৃণমূল নেতাকে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোপালনগরে বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সেই দিন ঠিক কী ঘটেছিল, ঘটনার সময় তিনি কোথায় ছিলেন, কখন জানতে পারেন সব কিছুই জানতে চাওয়া হয়।
মঙ্গলবারের পর এ দিনও সিবিআইয়ের ১০-১২ জনের একটি প্রতিনিধি দল ইলামবাজারে তৃণমূলের দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছয়। সেখানে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি-সহ বেশ কয়েকজন দলীয় কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করার সঙ্গে সঙ্গে গোপালনগরে তৃণমূলের বুথ কমিটির একটি তালিকাও এ দিন সংগ্রহ করেন সিবিআই আধিকারিকেরা। বারবার এ ভাবে সিবিআই দলীয় কার্যালয় আসায় এ দিন ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ফজলুর রহমানকে। সিবিআইয়ের আধিকারিকদের উদ্দেশ্য করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘তদন্তের প্রয়োজন থাকলে আমাদের ডেকে পাঠান। আমরা গিয়ে দেখা করব। কিন্তু এ ভাবে বারেবারে দলীয় কার্যালয়ে আসবেন না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’’
পরে তিনি বলেন, “এই নিয়ে পরপর তিন দিন দলীয় কার্যালয়ে কাউকে না জানিয়ে সিবিআই এল। আমাদের মনে হচ্ছে এর পিছনে কোনও চক্রান্ত রয়েছে। এখানে বিজেপির কোনও সংগঠন নেই। তাই তারা সিবিআইকে কাজে লাগিয়ে আমাদের হেনস্থা করার চেষ্টা করছে। তবে আগামী দিনে মানুষ এর জবাব দেবেন।” ইলামবাজারে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি চিত্তরঞ্জন সিংহ বলেন, “সিবিআই আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে। তাই তদন্ত সাপেক্ষে তাদের যে কোনও জায়গায় প্রবেশের অধিকার রয়েছে। এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয় বিরোধিতা না করে তদন্তে সিবিআইকে সকলের সহযোগিতা করা দরকার।”
এ দিকে রামপুরহাট আদালতে এ দিন পিছিয়ে গেল শুনানির দিন। মনোজ জয়সওয়াল খুনের ঘটনায় সিবিআই যে চার্জশিট জমা দিয়েছিল তার বিরোধিতা করেছিল অভিযুক্ত পক্ষ। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, অভিযুক্ত যে দু’জন জেল হাজতে আছেন তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই চার্জশিট জমা দিয়েছিল কিন্তু মামলায় আরেক অভিযুক্ত আজিমুদ্দিন শেখ, যিনি ৬৫ দিন জেল হাজতে থাকার পরে জামিনে আছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের কোনও চার্জশিট জমা পড়েনি। অতিরিক্ত জেলা দায়রা আদালতে এ ব্যাপারে চ্যালেঞ্জ জানানো হয় বলে অভিষেক জানান। অন্য দিকে, জেল হাজতে থাকা অভিযুক্তদের জেরা করতে চেয়েও সিবিআই আবেদন জানিয়েছিল। চার্জশিটের বিষয় নিয়ে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীর বিরোধিতার পরে সিবিআইয়ের আইনজীবীরা শুনানির দিন পিছিয়ে দেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন জানান। আদালতে পরবর্তী শুনানির দিন ১৮ সেপ্টেম্বর ধার্য হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy