বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় তৃণমূল নেতার। — নিজস্ব চিত্র।
ভোটের ফল ঘোষণা হতেই তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছিল বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের মুখে। বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মুখও খুলেছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছিল সৌমিত্রের আবার দলবদলের জল্পনা। এ বার সেই জল্পনা আরও উস্কে দিলেন সৌমিত্র নিজেই। বাঁকুড়ার রতনপুরে এক তৃণমূল নেতার পা ছুঁয়ে প্রণাম করতে দেখা গেল বিজেপি সাংসদকে।
লোকসভা নির্বাচনের পর থেকেই রাজনৈতিক জল্পনার কেন্দ্রে রয়েছেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র। প্রকাশ্যে কখনও তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের ভোট কৌশলের প্রশংসা করেছেন, আবার কখনও রাজ্যে বিজেপির খারাপ ফলের জন্য কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বকে। সূত্রের খবর, পর পর তিন বার সাংসদ হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় পর এ বার কেন্দ্রে মন্ত্রী হতে চেয়েছিলেন সৌমিত্র। ঘনিষ্ঠদের দাবি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত মন্ত্রিত্ব না মেলায় কিছুটা হলেও ‘ক্ষুব্ধ’ সুজাতা মণ্ডলের প্রাক্তন স্বামী। এই পরিস্থিতিতে সৌমিত্রকে নিয়ে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে যে, তিনি কি আবারও দলবদলের কথা ভাবছেন? সেই জল্পনা তিনি নিজেই উস্কে দিলেন, পুরনো দলের নেতাকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে।
বাঁকুড়ার ওন্দা ব্লকের রতনপুরে সাংসদ উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজে গিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ। ফেরার পথে রতনপুর বাজারে ওন্দার প্রাক্তন ব্লক সভাপতি তথা এলাকার দাপুটে তৃণমূল নেতা ভবতারণ চক্রবর্তীকে দেখতে পান সৌমিত্র। তৎক্ষণাৎ গাড়ি থেকে নেমে ভবতারণের পা ছুঁয়ে প্রণাম করেন বিজেপি সাংসদ। ভবতারণ আশীর্বাদ করেন সৌমিত্রকে। দু’জনের মধ্যে কুশল বিনিময় চলে কিছু ক্ষণ। তার পর যে যাঁর গন্তব্যে রওনা দেন। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই সৌমিত্রের রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে।
সৌমিত্র অবশ্য এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি করেছেন। সৌমিত্র বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দল আলাদা হতে পারে, কিন্তু আমি সব সময় রাজনৈতিক সৌজন্যে বিশ্বাসী। আমি তৃণমূলে থাকাকালীন ভবতারণ চক্রবর্তী আমার নেতা ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আমার দেখা হল। তাই পা ছুঁয়ে তাঁর আশীর্বাদ নিলাম। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই।’’ তৃণমূল নেতা ভবতারণ বলেন, ‘‘আমি এক সময় ওন্দায় তৃণমূলের ব্লক সভাপতি ছিলাম। বাঁকুড়া জেলা এবং রাজ্যের দায়িত্বপূর্ণ পদেও ছিলাম। সে সময় সৌমিত্র আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ কর্মী এবং সাংসদ ছিলেন। সেই সূত্রেই আমাকে প্রণাম করেছেন। আমিও তাঁকে আশীর্বাদ করেছি।’’
তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যন তথা বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সৌমিত্র খাঁ অনেক ভেলকি জানেন। ভোটের আগে তৃণমূলকে বাপবাপান্ত করে এখন তিনি তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে ঢলাঢলি শুরু করেছেন। আমার ধারণা, কেন্দ্রের মন্ত্রিত্ব না পেয়ে নিজের দলকে বার্তা দিতেই এই কাণ্ড করছেন। সৌমিত্র ফের তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন কি না, তা সময় এলে জানা যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy