শীতের অতিথি। নিজস্ব চিত্র
শীতকালে পরিয়ায়ী পাখিরা জেলার যে জলাশয়গুলিতে তাদের আস্তানা তৈরি করে সেই তালিকায় রয়েছে বক্রেশ্বর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের নীলনির্জন জলাধার। শীতের শুরুতে এ বারও তারা হাজির। তবে সংখ্যায় খুব কম। পাখি আসা শুরু হলে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থার করারও দাবি তুলেছেন পাখিপ্রেমীরা।
পাখি কম আসার অন্যতম কারণ কি শীত এখনও সেভাবে না পড়া? বন দফতরের কর্তা ও পাখিপ্রেমীরা তেমনটাই মনে করছেন। তাঁদের মত, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ চলছে। কিন্তু এ বারে এখনও তেমন শীত অনুভূত হচ্ছে না। তাঁদের আশা, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে শীতের অতিথি পরিযায়ী পাখিদের সংখ্যাও।
বস্তুত নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীত অনুভূত হতে শুরু করেছিল। মাঝে একদিন সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছিল। মনে করা হয়েছিল শীত যথাসময়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু তার পর থেকেই সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করেছে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বা তার থেকে বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা গড়ে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পাখিপ্রেমী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়, সুবীর দাস, সঞ্জীব দাস পাখির সন্ধানে এবং ছবির খোঁজে প্রায়শই নীলনির্জন সহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়ান। তাঁরা বলছেন, ‘‘ডিসেম্বর চলে এলেও এই তাপমাত্রাকে শীত পড়েছে বলা শক্ত। এই শীতে পরিযায়ীরা আসবে কী ভাবে?’’ পাখিপ্রেমীরা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত কিছু বড়ি হাঁস (বারহেডেড গুজ), কমন কুট, গ্রিব, দু-একটি গ্রে ল্যাগ গুজ বা রেড ক্রাস্টেড পোচার্ডের মতো বেশ কিছু প্রজাতি ছাড়া তেমন কিছু নজরে পড়ছে না।
তবে শীত জাঁকিয়ে পড়বে, পাখি আসবে ধরে নিলেও তাদের জলাশয়ে নিরাপদে থাকতে পারা নিয়ে চিন্তা রয়েছে। পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র না হওয়া সত্ত্বেও গোটা শীতকাল জুড়ে শান্ত জলাধার ঘিরে পিকনিক পার্টির ভিড়, ফাঁসজাল ফেলে মাছ ধরা, চোরাশিকার-সহ নানা কারণে গত কয়েক বছরধরে ক্রমশ কমছিল পাখির সংখ্যা। তারপরই তৎপর হয় বন দফতর ও তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
জলাশয়ের ধারে নানা সতর্কতামূলক বোর্ড লাগিয়েছিল তাপবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ। জেলার বিভিন্ন জলাশয়ে আসা পাখিদের যাতে উত্যক্ত করা না হয়, চোরাশিকার করা না হয় সেটা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই প্রচার চালাচ্ছে বন দফতর। তবে তাদের অভিজ্ঞতা বলছে, উপদ্রব কমলেও সেটা পুরোপুরি বন্ধ হয়নি।
যাতে শীতের অতিথি পাখিদের মেরে ফেলা বা কোনও অনিষ্ট করা না হয় সে জন্য এখন থেকে প্রচার চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বন দফতরের তরফে। দুবরাজপুরের রেঞ্জার কেশব চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘জলাশয় লাগোয়া গ্রামগুলিতে পাখিদের বিরক্ত বা শিকার না করার জন্য প্রচার চালানো হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘সামনে বড়দিনের আগে থেকে পিকনিক পার্টিরা যাতে জলাশয়ের কাছে ডিজে বক্স না বাজায় সে ব্যাপারেও প্রচার চলানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy