ঘরে ঢুকে সিন্দুকের পাশে হাড়গোড়, মাথার খুলি পেল পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র।
কয়েক দিন ধরেই আতঙ্কে ভুগছিলেন স্থানীয়রা। রাত হলেই পরিত্যক্ত প্রাসাদোপম বাড়ি থেকে ভেসে আসে নানা অদ্ভুত শব্দ। কারা যেন রাতের অন্ধকারে যাতায়াত করে। সেই রহস্য ভেদ করতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া হল সকলের। চমকে গেল পুলিশও। বাঁকুড়া সদর থানা এলাকার ঘটনা।
এক সময় বাঁকুড়ার কালীতলা এলাকার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের বাড়ি দেখতে আসতেন অনেকে। বিশাল তিনতলা ওই বাড়িটি স্থানীয়দের কাছে ‘রাজবাড়ি’ নামেই পরিচিতি। বাড়ির নাম ‘প্রসন্ন ভবন’। সেই নামকরণ নাকি করেছিলেন সাংবাদিক রামানন্দ চট্টোপাধ্যায়। ওই পরিবারের সদস্যরা এখন কর্মসূত্রে নানা জায়গায় রয়েছেন। বিশাল বাড়িটি এখন পরিত্যক্ত। দিন কয়েক ধরেই প্রতিবেশীরা প্রতি রাতেই শুনতে পেতেন কেউ বা কারা যেন ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করছে। বাড়ির বিভিন্ন অংশে ভাঙচুরের আওয়াজও শুনেছেন কেউ কেউ। কিন্তু তালাবন্ধ বাড়িতে রাতের অন্ধকারে কে যাতায়াত করছে? উদ্দেশ্যই বা কী? কৌতূহল নিরসন করতে সোমবার সকালে কয়েক জন প্রতিবেশী বাড়ির সদর দরজার তালা খুলে ভিতরে ঢোকেন। কিন্তু বাড়িতে ঢুকেই ঝটকা। তাঁরা দেখেন বাড়ির উঠোনে কাত হয়ে পড়ে আছে একটি পুরনো সিন্দুক। ভাঙা দরজার ভেতর দিয়ে বাড়ির একতলার একটি কক্ষে চোখ যেতেই শিউরে ওঠেন সবাই। দেখা যায় একটি তক্তার উপর পড়ে হাড়গোড়। ওগুলো কি মানুষের? আতঙ্ক এবং আশঙ্কায় স্থানীয়রা খবর দেন বাঁকুড়া সদর থানায়। পুলিশ এসে উদ্ধার করে হাড়গোড় এবং মাথার খুলি। সেগুলো ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “১০ বছর ধরে ওই বাড়িতে কোনও লোকজন থাকেন না। ৩ বছর ওই বাড়িতে কেউ ঢোকেননি। মাঝেমধ্যেই দুষ্কৃতীরা ওই বাড়ির পাঁচিল ডিঙিয়ে ঢোকে। বাড়ির দরজা-জানালা থেকে শুরু করে রড সমস্ত কিছুই প্রায় চুরি হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবার বাড়ির ভিতরে ঢুকে দেখলাম খাটের উপর কঙ্কাল রয়েছে। আমরা চাই, অসামাজিক কাজকর্ম বন্ধ হোক।” ববিতা বন্দ্যোপাধ্যায় নামে আর এক প্রতিবেশী বলেন, “এই বাড়িটি বহু ঐতিহ্যের সাক্ষী। এই বাড়ির মধ্যে এমন অসামাজিক কাজকর্ম চলুক, তা আমরা কেউ চাই না। আমরা প্রত্যেকেই এখন আতঙ্কিত।”
হাড়গোড় উদ্ধার নিয়ে বাঁকুড়া জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, “হাড়গোড়গুলি মানুষের কি না তা জানতে ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে ফরেন্সিক পরীক্ষাও করানো হতে পারে। ওই বাড়ির উপর বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy