নির্বাচনী আচরণ বিধি চালুর পরেও ঢাকা হয়নি এই ফলক। বাঁকুড়ার সার্কিট হাউসের দরজায়। —নিজস্ব চিত্র।
নির্বাচনী আচরণ বিধি অমান্য করার মতো কিছু নজরে এলে তা জানাতে চালু হয়েছে ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপ। রয়েছে এই সংক্রান্ত টোল ফ্রি টেলিফোন নম্বর। লিখিত আকারেও অভিযোগ জানানোর ব্যবস্থা রয়েছে। ওই ধরনের অভিযোগ জানাতে এ বার বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনও চালু করল বিশেষ অ্যাপ— ‘এমসিসি বাঁকুড়া’। তবে, তা সর্বসাধারণের জন্য নয়, শুধুমাত্র জেলা প্রশাসনের কর্তারাই ওই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন।
জানা গিয়েছে, প্রশাসনিক অফিসের দেওয়ালে অনেক সময় রাজনৈতিক দলের পোস্টার সাঁটানো হয়। থাকে নেতা-নেত্রীদের ছবিও। মূলত, সেই রকম কিছু নজরে এলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে তা নজরে আনতেই এই অ্যাপ। জেলা প্রশাসনের সমস্ত দফতরের এক জন আধিকারিককে ওই অ্যাপ ব্যবহারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সরকারি অফিস বা দেওয়াল রাজনৈতিক প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে কি না, তা নজরে এলেই দায়িত্বে থাকা ওই আধিকারিক ছবি তুলে অ্যাপে আপলোড করবেন। ওই অ্যাপের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন সমস্ত সেক্টর অফিসার ও ফ্লাইং স্কোয়াড টিম। ছবি আপলোড হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেক্টর অফিসার বা ফ্লাইং স্কোয়াড টিম তা সরিয়ে দেবে।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বাঁকুড়ার জেলাশাসক উমাশঙ্কর এস বলেন, “ওই অ্যাপ কেবল প্রশাসনের ব্যবহারের জন্যই। সরকারি জায়গাকে রাজনৈতিক প্রচারে যাতে ব্যবহার করা না হয়, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’
ঘটনা হল, লোকসভা নির্বাচন ঘোষণা হওয়ার পরেই প্রশাসনের সমস্ত দফতর থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের ছবি থাকা সরকারি বিজ্ঞাপন সরিয়ে দেওয়া এবং অফিস কাছারির দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক দলের প্রচারে দেওয়াল লিখন থাকলে তা মুছে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলাশাসক।
কিন্তু, ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেও সরকারি জায়গায় রাজনৈতিক নেতানেত্রীদের ছবি বা প্রচারের দেওয়াল লিখন দেখা যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠছে।
আদর্শ আচরণবিধি পর্যবেক্ষণকারীদের সূত্রে জানা যাচ্ছে, ‘সি-ভিজিল’ অ্যাপের মাধ্যমে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ১১৭টি অভিযোগ জমা পড়েছে, যার বেশির ভাগটাই সরকারি জায়গায় নেতানেত্রীর ছবি বা রাজনৈতিক দলের প্রচারের অভিযোগ সম্পর্কে। এ ছাড়া টোল ফ্রি নম্বর ১৯৫০ তে ফোন করে বা নির্বাচন কমিশনের আওতায় থাকা পোর্টালেও অনেকে এ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন।
বিরোধী রাজনৈতিক দলের তরফে এই সব ঘটনার জেরে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। প্রশাসনের অবশ্য দাবি, সরকারি জায়গাকে রাজনৈতিক প্রচারে কাজে লাগানো হচ্ছে এমন অভিযোগ পেলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদিও বারবার এমন অভিযোগ উঠতে থাকা প্রশাসনের অন্দরেই অস্বস্তি দানা বেঁধেছে বলে জানাচ্ছেন আধিকারিকদের একাংশ।
বাঁকুড়া জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি জায়গায় রাজনৈতিক প্রচার নজরে এলেও অনেক ক্ষেত্রে সমন্বয়ের অভাবে তা সরাতে দেরি হচ্ছিল। অ্যাপ চালু হওয়ায় এ বার সেই কাজে গতি আসবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy