বোলপুরে দলবদল। নিজস্ব চিত্র
অনুব্রত মণ্ডলের গড়েই দলবদল! সোমবার বোলপুর মহকুমার বেশ কয়েকটি পঞ্চায়েত থেকে হাজার দুয়েক তৃণমূল সমর্থক তাদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি করল বিজেপি। এ দিন তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বীরভূম জেলা বিজেপি-র সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়।
লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের পাশাপাশি বীরভূম জেলাতেও বিজেপি আগের চেয়ে ভাল ফল করেছে। জেলার দু’টি আসনে জয় না-পেলেও ভোটপ্রাপ্তি কয়েক গুণ বাড়িয়ে তারা তৃণমূলেরই ঠিক পরেই দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সেটাই এখন দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল শিবিরের। জেলায় তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িকও বেড়েছে। ইতিমধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে গিয়েছেন লাভপুরের বিধায়ক মনিরুল ইসলাম ও নানুরের প্রাক্তন বিধায়ক গদাধর হাজরা। ওই ঘটনায় অস্বস্তি অনেকটাই বেড়েছিল তৃণমূল শিবিরে। এখন দেখা যাচ্ছে, দলবদল সেখানেই শেষ নয়।
এ দিন বোলপুর একটি বেসরকারি অনুষ্ঠান ভবনের সামনের অংশে মঞ্চ বেঁধে আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপিতে যোগদান করেন বাহিরী-পাঁচশোয়া, আদিত্যপুর, কঙ্কালীতলা, আমোদপুর, নুরপুর , বেজরা, রাইপুর-সুপুর-সহ বেশ কিছু অঞ্চলের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। দলবদলের মঞ্চে রামকৃষ্ণ রায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল, সাধারণ সম্পাদক অষ্টম মণ্ডল, জেলা সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ প্রমুখ। এ দিন বাহিরী-পাঁচশোয়া অঞ্চলের তৃণমূল নেতা উত্তম দাসের নেতৃত্বে ৫০০ জন তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিজেপি-তে যোগদান করেন। একই ভাবে কসবা অঞ্চলের উদয় ঘোষের নেতৃত্বে, আমোদপুর অঞ্চল থেকে প্রদীপ মাহাতোর নেতৃত্বে এবং কঙ্কালীতলা অঞ্চল থেকেও বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিজেপি শিবিরে এসেছেন। তাঁদের উদ্দেসে জেলা বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, যারা তৃণমূল থেকে অত্যাচারিত হচ্ছে, সেই সমস্ত কর্মীকে দলে নেওয়া।’’ বিজেপি কর্মীদের প্রতি তাঁর নিদান, ‘‘আপনারা সব সময় লাঠি, বাঁশ ও পাথর সঙ্গে রাখুন। কেউ আক্রমণ করতে এলে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।’’
রবিবার সিউড়িতে প্রকাশ্যে তিনি ‘প্রতিশোধ’-এর ডাক দিয়েছেন। এ দিন আবার তাঁর মুখে শোনা গেল লাঠি ও বাঁশ রাখার কথা। এর ফলে কি জেলায় রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে না? এ প্রশ্নের উত্তরে রামকৃষ্ণবাবু দাবি করে ন, ‘‘তৃণমূল সর্বত্র আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর আক্রমণ করছে। তাই কাছে লাঠি, বাঁশ ও পাথর রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে দলীয় কর্মীদের।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, কাউকে আক্রমণ করতে নয়, কেউ আক্রমণ করলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই তিনি এই পরামর্শ দিয়েছেন।
এ দিনই ময়ূরেশ্বর ২ ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েত এলাকার প্রায় ১৭০০ তৃণমূল সমর্থক কোটাসুরের একটি সভায় আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁদের দলে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি বিজেপি নেতৃত্বের। বিজেপি-র ময়ূরেশ্বর-২ মণ্ডল কমিটির সভাপতি সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যোগদানকারীদের মধ্যে ৭০০ জনই ষাটপলশা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। অধিকাংশই তৃণমূলের কর্মী-সমর্থক ছিলেন।’’ লোকসভা ভোটের ফলের নিরিখে, ময়ূরেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। ষাটপলশা পঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা, ময়ূরেশ্বর-২ পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান সভাপতি জটিল মণ্ডল। তিনি অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি।
লোকসভার ফল ঘোষণার পর থেকেই তৃণমূল- বিজেপি সংঘর্ষে তেতে রয়েছে ওই এলাকা। বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, সন্ত্রাসের কারণেই তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের দলে যোগ দিচ্ছেন। সেই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি নারায়ণ প্রসাদ চন্দ্র বলেন, ‘‘কেউ তৃণমূল ছেড়ে যায়নি। রাজনৈতিক প্রচার পেতে বিজেপি নিজেদের কর্মীদেরই কুমিরছানার মতো দেখাচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy