নিজের ভগ্নপ্রায় ঘরের সামনে সরমা বাউরি। নিজস্ব চিত্র।
আবাস যোজনায় নাম থাকা সত্ত্বেও বিধবা প্রৌঢ়া বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। অভিযোগ, সে টাকা পেয়েছেন অন্য এক জন। পুরুলিয়ার কাশীপুর ব্লকের গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের তালাজুড়ি গ্রামের ঘটনা। আবার, ওই ব্লকেরই কালীদহ পঞ্চায়েতের লোহাট গ্রামের এক ব্যক্তির নামে আবাস যোজনায় দু’ধাপে দেড় লক্ষ টাকা তোলা হলেও ওই নামে গ্রামে কেউ নেই বলে অভিযোগ। জোড়া ঘটনায় তৃণমূল পরিচালিত দুই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বিরোধীরা। অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।
তালাজুড়ি গ্রামের বাসিন্দা সরমা বাউরির নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তালিকাভুক্ত হয়েছিল। তবে ব্লক প্রশাসনের কাছে অভিযোগে সরমাদেবী জানিয়েছেন, ২০১৯-তে আবাস যোজনায় নাম থাকা সত্ত্বেও টাকা না মেলায় পঞ্চায়েতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সে টাকা অন্য এক জনের নামে বরাদ্দ করা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনায় তৃণমূল পরিচালিত গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় সিপিএম নেতা শীতল সরকার। তাঁর দাবি, ‘‘এক ব্যক্তির নামে বরাদ্দ হওয়া অর্থ অন্য জনকে দেওয়ার ঘটনাতেই স্পষ্ট তৃণমূলের পঞ্চায়েত দুর্নীতিতে জড়িত।” তাঁর আরও অভিযোগ, যে ব্যক্তিকে বাড়ি তৈরির টাকা দেওয়া হয়েছে, তিনি আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার যোগ্যই নন। যদিও দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে গৌরাঙ্গডি পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের সনকা হেমব্রমের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের তরফে নয়, ভুল হয়েছে ব্যাঙ্কের তরফে। ঘটনাটি ব্লক প্রশাসনকে জানিয়েছি।” বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাশীপুরের যুগ্ম বিডিও প্রকাশ প্রামাণিক।
এ দিকে, কালীদহ পঞ্চায়েতের লোহাট গ্রামের বাসিন্দা তরুণ হেমব্রমের নামে ইন্দিরা আবাস যোজনায় ২০১৩-’১৪ ও ২০১৪-’১৫ আর্থিক বর্ষে দু’দফায় দেড় লক্ষ টাকা তোলা হলেও ওই নামে গ্রামে কোনও ব্যক্তিই নেই বলে বিজেপির স্থানীয় নেতা হরেন মাহাতো অভিযোগ তুলেছেন। নথি-সহ প্রশাসনের কাছে করা অভিযোগে হরেনবাবু দাবি করেছেন, সরকারি ওয়েবসাইটে পঞ্চায়েত দেখিয়েছে, তরুণ হেমব্রমের নামে আবাস যোজনায় বাড়ি বরাদ্দ হয়েছে। পরপর দু’টি আর্থিক বর্ষে টাকা তুলে ঘর তৈরিও হয়েছে। যদিও তাঁর দাবি, ‘‘লোহাট গ্রামে ওই নামে কোনও ব্যক্তিই নেই। তা ছাড়া, যে ‘বিপিএল’ নম্বর ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়েছে, সেটি আদৌও তরুণ হেমব্রমের নয়। ওই ব্যক্তির জন্মসাল হিসেবে ১২০ বছর আগের একটি সাল উল্লেখ করা হয়েছে। এ সব ঘটনায় স্পষ্ট, পঞ্চায়েত ভুয়ো তথ্য দিয়ে টাকা তছরুপ করেছে।”
যদিও কালীদহ পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান তৃণমূলের লক্ষ্মী সোরেন বলেন, ‘‘ঘটনার কথা জানা নেই।” প্রাক্তন প্রধান তৃণমূলেরই উত্তম মণ্ডলের দাবি, ‘‘আবাস যোজনায় কোনও দুর্নীতি হয়নি।” তাঁর পাল্টা প্রশ্ন,‘‘যদি তরুণ হেমব্রম নামের কোনও ব্যক্তিই না থাকেন, তা হলে তাঁর নামে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হল কী ভাবে?”
ব্লকের যুগ্ম বিডিওয়ের প্রতিক্রিয়া,‘‘লোহাট গ্রামের ওই অভিযোগ পাওয়ার পরে, বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু জেলা থেকে পরবর্তী নির্দেশ আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy