ক্রেতা কম। রবিবার বিষ্ণুপুরের চকবাজারে। নিজস্ব চিত্র।
টানা বৃষ্টিতে ফসল নষ্টের জেরে পুজোর আগে থেকেই চড়ছিল আনাজের দাম। এর মধ্যে ক্রমশ বাড়ছে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম। কালীপুজোর আগে আনাজের দাম তাই আরও চড়ছে বলে অভিযোগ ক্রেতা থেকে বিক্রেতা, অনেকেরই।
গত এক সপ্তাহে আনাজের দাম অনেকটাই বেড়েছে বলে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার নানা এলাকার ক্রেতাদের দাবি। বাঁকুড়া শহরের নানা বাজারে রবিবার প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ১৮-২০ টাকা। ঝিঙে, পটল পঞ্চাশ টাকা প্রতি কেজি। দক্ষিণ পুরুলিয়ায় আনাজের বড় বাজার মানবাজারের কিসান মান্ডি। রবিবার সেখানে খুচরো বাজারে বাঁধাকপি ৫০ টাকা, প্রতি কেজি টোম্যাটো ৮০ টাকা, বেগুন ৮০ টাকা, লঙ্কা ১০০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কুমড়ো ২০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলো ৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
বাঁকুড়া শহরের বাসিন্দা মিলন পালের দাবি, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যেই দাম প্রায় দ্বিগুণ!’’ শহরে আনাজ বিক্রি করতে আসা রবি ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বৃষ্টিতে আনাজ অনেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ডিজ়েলের দাম বাড়ায় বাইরে থেকে আসা আনাজের দামও বেড়েছে।’’ বিষ্ণুপুর শহরেও আনাজ, ফলের দাম অনেকটা বেড়েছে বলে জানান বাসিন্দারা। শহরের আনাজ বিক্রেতা শেখ আব্দুল মহিমের কথায়, ‘‘এক সপ্তাহের মধ্যে ঝিঙে-পটলের প্রতি কেজি দাম ৩০ টাকা থেকে ৫০ টাকা হয়েছে। আলু এক সপ্তাহ আগে ১৪ টাকা ছিল। রবিবার তা দাঁড়িয়েছে ২০ টাকায়। ডিজ়েলের দাম বাড়ায় বাইরে থেকে আসা আনাজের দামও লাফিয়ে বাড়ছে।’’ বিষ্ণুপুরের এক ফল বিক্রেতা কানাই দত্তও দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে একই দাবি করেন। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘কালীপুজো, ছটপুজোর সময়ে ফল বিক্রি করে প্রতি বার যে লাভ হত, এ বার তা হবে না।’’
মানবাজারের মান্ডির আনাজ ব্যবসায়ী দীনবন্ধু গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘বৃষ্টিতে ক্ষতির জেরে স্থানীয় চাষিদের থেকে আনাজের জোগান কমেছে। ফড়ে ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের হাত ঘুরে আসা আনাজের দাম তো চড়বেই।’’ পাইকারি আনাজ ব্যবসায়ী টিঙ্কু দত্ত বলেন, ‘‘বাঁকুড়া, দুর্গাপুর, আসানসোল থেকে আমাদের এখানে আনাজ আসে। আগে প্রতিদিন আসত। জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় এক-দু’দিন অন্তর নিয়ে আসছি এখন। কোনওক্রমে খদ্দের টিকিয়ে রাখছি।’’ আদ্রার খুচরো আনাজ ব্যবসায়ী বিনয় পাল দাবি করেন, লক্ষ্মীপুজোর পরে আনাজের দাম কিছুটা কমেছিল। ফের দাম চড়ছে।’’ বাঁকুড়া ১ ব্লকের সেগুনসরার একটি ইটভাটার মালিক তুষার চট্টোপাধ্যায় থেকে ইঁদপুরের বাংলা বাজারের আনাজ বিক্রেতা লক্ষ্মীকান্ত কর, সকলেরই দাবি, ডিজ়েলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহণ খরচ বাড়ছে। তাই সব জিনিসেরই দাম বাড়ছে।
বিষ্ণুপুর শহরের গোপেশ্বরপল্লির বাসিন্দা জয়িতা মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘গ্যাসের দাম বাড়ায় রান্নাঘরে আগুন আগেই লেগেছিল। এ বার আনাজের দাম যা বেড়েছে, তাতে খরচ বেড়েই চলেছে।’’ শহরের অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী চন্দ্র রায়ের বক্তব্য, ‘‘আমরা নির্দিষ্ট পেনশন পাই। এ ভাবে জিনিসের দাম বাড়লে সংসার চালানো মুশকিল হবে।’’ পুরুলিয়ার মানবাজারের দাসপাড়ার বাসিন্দা, প্রাক্তন শিক্ষক নারায়ণ মাহিন্দার বলেন, ‘‘ক’দিন পরেই হয়তো বেগুনের দাম সেঞ্চুরি ছোঁবে!’’
বাঁকুড়ার কৃষি বিপণন দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর মহম্মদ আকবর আলি বলেন, ‘‘আনাজের দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, বৃষ্টিতে আনাজ নষ্ট। তবে ডিজ়েলের দাম বৃদ্ধিরও প্রভাব রয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শীতকালীন আনাজ বাজারে এলে দাম কমবে আশা করা যায়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy