দালালের খপ্পরে পড়ে নিজের চিকিৎসা সংক্রান্ত সমস্ত নথি খোয়ালেন এক মহিলা।
সোমবার পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতালের ওই ঘটনা ফের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, সরকারি হাসপাতালে দালালরাজ এখনও কতটা সক্রিয়। দ্বারস্থ হলেও কোনও নথিই অসহায় ওই মহিলাকে দিতে পারেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। উল্টে, তাঁকে পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েই দায় সেরেছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় পুলিশ এক ব্যক্তিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। যদিও রোগীর পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোথাও কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, এ দিন বলরামপুরের দঁড়দা গ্রাম থেকে সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন মমতা পরামাণিক নামে ওই মহিলা। স্ত্রীরোগ বিভাগে দেখানোর পরে চিকিৎসক যখন মহিলার হাতে কাগজপত্র দিচ্ছিলেন, তখনই অচেনা এক ব্যক্তি সেই নথি ছিনিয়ে হাওয়া হয়ে যায় বলে অভিযোগ। ডাক্তারের ঘর থেকে বেরিয়ে ওই ব্যক্তির দেখা না পেয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এখানে গত জানুয়ারি মাস থেকেই দেখাচ্ছি। চিকিৎসক আমাকে অস্ত্রোপচার করতে হবে বলেও জানিয়েছিলেন। তার আগে কিছু পরীক্ষা করাতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ দিন সেই পরীক্ষার রিপোর্টই চিকিৎসককে দেখাতে গিয়েছিলাম।’’ মমতার স্বামী সহদেবের দাবি, কিছু বুঝে ওঠার আগেই এক ব্যক্তি তাঁদের সঙ্গে থাকা নথিগুলি ছিনিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায়। মমতা বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম, উনি হাসপাতালেরই কেউ। ডাক্তারবাবু কী বললেন, তা বিশদে বুঝিয়ে দেবেন। কিন্তু বাইরে বেরিয়ে আর লোকটাকে খুঁজে পাইনি।’’
সর্বত্র খোঁজ করেও ওই ব্যক্তিকে না পেয়ে মহিলা নিজের নথির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মমতার দাবি, প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে আচমকা সেই ব্যক্তিকে হাসপাতাল চত্বরেই দেখতে পান। তাঁকে চেপে ধরলেও কোনও কাগজপত্র পাওয়া যায়নি। লোকটিকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন মমতারা। পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।
এর পরে নথির খোঁজে হাসপাতালের সুপারের দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। সুপার শিবাশিস দাস পরে বলেন, ‘‘বহির্বিভাগের কোনও নথি তো আমাদের কাছে থাকে না। আমরা তাই মহিলাকে পুলিশের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিই।’’ হাসপাতালে দালাল ঠেকাতে তাঁরা যথেষ্ট তৎপর বলেও দাবি সুপারের। তাঁর কথায়, ‘‘হাসপাতালের সর্বত্র বিজ্ঞাপন দিয়েছি। কিন্তু কেউ যদি দালালের হাতে কাগজ দেন, কী করতে পারি?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy