অযোধ্যা পাহাড়ে অভিযান। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ে ভাঙা হল নির্মাবন দফতরের জমিতে পর্যটক আবাস নির্মাণের অভিযোগ উঠেছিল পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ে। মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে সেই আবাসের সীমানায় বসানো কংক্রিটের স্ল্যাব ও একটি ঘর ভেঙে দিল জেলা প্রশাসনের টাস্ক ফোর্স। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুপ্রিয় দাসের নেতৃত্বে অভিযান হয়।
জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানান, অযোধ্যা পাহাড়ের একটি পর্যটক আবাস নিয়ে অভিযোগ এসেছিল। প্রশাসন, বন দফতর ও পুলিশকে নিয়ে যে টাস্ক ফোর্স গড়া হয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখে তারা পদক্ষেপ করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অযোধ্যা পাহাড়ের অযোধ্যা মৌজায় পুনিয়াশাসন ও উসুলডুংরির মাঝামাঝি এলাকায় একটি পর্যটক আবাসের নির্মাণ নিয়ে সরব হন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। ওই নির্মাণের জন্য বেশ কিছু গাছ কাটার অভিযোগও ওঠে। বন দফতরের জমি দখল করে আবাস গড়া হচ্ছে কি না, তা তদন্তের দাবি ওঠে। পুজোর আগে নানা দাবিতে জেলার প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে জনজাতিদের একাধিক সংগঠন। সেখানে অযোধ্যা পাহাড়ে আদিবাসীদের জমি বেহাত হয়ে যাচ্ছে, ঘুরপথে বন দফতরের জমি দখল হচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
এমন অভিযোগ উঠতে শুরু করায় টাস্ক ফোর্স গড়ে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক জানিয়েছিলেন, এ ধরনের অভিযোগ মিললে টাস্ক ফোর্সই তার তদন্ত করবে। পাহাড়ের এই পর্যটক আবাস কোন জমির উপরে তৈরি হচ্ছে, মানচিত্র নিয়ে তা খতিয়ে দেখা শুরু করে বন দফতরও। এ দিন সকালে অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার), ডিএফও দেবাশিস শর্মা, এসডিপিও (ঝালদা) সুব্রত দেব, বাঘমুণ্ডির বিডিও দেবরাজ ঘোষ এবং পুরুলিয়া বন বিভাগের একাধিক রেঞ্জ অফিসার, পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আধিকারিকেরা সেখানে গিয়ে জানিয়ে দেন, বন ও ভূমি দফতরের যৌথ পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট পর্যটক আবাসের যে অংশের বন দফতরের বলে চিহ্ণিত হয়েছে, তা দখলমুক্ত করা হবে। এর পরেই যন্ত্র দিয়ে পর্যটক আবাসের কংক্রিটের সীমানার অংশ ও একটি ছোট ঘর ভেঙে ফেলা হয়।
ডিএফও বলেন, ‘‘ভূমি ও বন দফতরের যৌথ পর্যবেক্ষণে দেখা গিয়েছিল, ওই পর্যটক আবাসের একাংশ বন দফতরের জমিতে পড়ছে। জমি খালি করে দেওয়ার জন্য আবাস নির্মাতাদের নোটিস দেওয়া হয়েছিল। সময়ের মধ্যে খালি না করায় জমি দখলমুক্ত করা হয়েছে। জমি চিহ্ণিত করে দেওয়ার জন্য খাল কেটে দেওয়া হয়েছে।’’ ওই জমিতে গাছ লাগানো হবে বলে জানান তিনি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুপ্রিয় দাস বলেন, ‘‘সরকারি জমি দখলের অভিযোগ খতিয়ে দেখে টাস্ক ফোর্স তা দখলমুক্ত করেছে।’’
ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের জেলা পারগানা রতনলাল হাঁসদা বলেন, ‘‘আমরা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। প্রশাসন পদক্ষেপ করেছে, সে জন্য ধন্যবাদ।’’ পাহাড়ের বাসিন্দা শ্যামসুন্দর মান্ডি বলেন, ‘‘আমরা এ দিন ঘটনাস্থলে হাজির ছিলাম। যে ভাবে অযোধ্যা পাহাড়ের জমি দখল হয়ে যাচ্ছে, আমরা তার প্রতিবাদে সরব হয়েছিলাম। আমরা চাই, উন্নয়ন হোক। তবে তা বিধি মেনে হোক।’’
ওই আবাস নির্মাতাদের তরফে জয়ন্ত ঘোষের দাবি, অতিথি আবাসটি সম্পূর্ণ ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির উপরেই গড়ে উঠেছে। যাতায়াতের রাস্তা ও লাগোয়া জমির একাংশে সিমেন্টের ছোট-ছোট স্ল্যাব বসানো হয়েছিল। তাঁর বক্তব্য, ‘‘তা দখলমুক্ত করা হয়েছে, ঠিক আছে। কিন্তু রাস্তা কেন কেটে দেওয়া হল জানি না!’’ প্রশাসনের কর্তাদের দাবি, ঘটনাস্থলে বন দফতরের জমি লাগোয়া ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থাকায় চিহ্ণিতকরণের সুবিধার্থে মাঝে খাল কেটে দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy