Advertisement
০১ নভেম্বর ২০২৪

সাত কিমি ধাওয়া করে গাড়ি আটক, উদ্ধার বিস্ফোরক

টহল দিয়ে ফেরার পথে সামনের একটি গাড়িকে পাঁই পাঁই ছুটতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল আরপিএফ কর্মীদের। সাত কিলোমিটার পিছু নিয়ে শেষমেশ সেই গাড়িটি আটকান আরপিএফ কর্মীরা। কিন্তু গাড়ির ভিতর বস্তায় ঠাসা মালপত্ত দেখে তাঁদের চক্ষুচড়ক গাছ হওয়ার অবস্থা! বস্তার ভিতরে মজুত প্রচুর জিলেটিন স্টিক এবং ডিটোনেটর। পরে গুনে গুনে তাঁরা দেখেন জিলেটিন স্টিকের সংখ্যা ৬০০ এবং ডিটোনেটর ৫০০টি।

আদ্রায় আরপিএফের দফতরে উদ্ধার হওয়া জিলেটিন স্ট্রিক ও ডিটোনেটর। —নিজস্ব চিত্র।

আদ্রায় আরপিএফের দফতরে উদ্ধার হওয়া জিলেটিন স্ট্রিক ও ডিটোনেটর। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আদ্রা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৪ ০১:০২
Share: Save:

টহল দিয়ে ফেরার পথে সামনের একটি গাড়িকে পাঁই পাঁই ছুটতে দেখেই সন্দেহ হয়েছিল আরপিএফ কর্মীদের। সাত কিলোমিটার পিছু নিয়ে শেষমেশ সেই গাড়িটি আটকান আরপিএফ কর্মীরা। কিন্তু গাড়ির ভিতর বস্তায় ঠাসা মালপত্ত দেখে তাঁদের চক্ষুচড়ক গাছ হওয়ার অবস্থা! বস্তার ভিতরে মজুত প্রচুর জিলেটিন স্টিক এবং ডিটোনেটর। পরে গুনে গুনে তাঁরা দেখেন জিলেটিন স্টিকের সংখ্যা ৬০০ এবং ডিটোনেটর ৫০০টি।

বুধবার ভোরে পাড়া থানার তেতুলহেটি গ্রামের কাছে গাড়ি থেকে ওই পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার করেছে আদ্রার আরপিএফ। গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। তাদের নাম সুবল মাহাতো ও জলধর দুয়ারি। সুবলের বাড়ি সাঁওতালডিহি থানার সিঁদুরপুর গ্রামে আর জলধর পাড়া থানার মাটানচটি গ্রামের বাসিন্দা। দুপুরে আরপিএফ বিস্ফোরক-সহ ধৃতদের পাড়া থানার হস্তান্তর করে।

আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার গভীর রাতে পাড়া থানার রুকনি রেল স্টেশনে টহলে গিয়েছিল আরপিএফের আদ্রা থানার একটি দল। নেতৃত্বে ছিলেন ওসি সঞ্জয় হাজরা। তিনি জানান, দুবড়া গ্রামের কাছে আমাদের গাড়ির সামনে ছিল একটি মারুতি ভ্যান। হঠাৎ আমাদের গাড়িটি দেখতে পেয়ে তারা গতি বাড়িয়ে দেয়। তাঁর কথায়, “অনেক সময় রেলের লোহা বা অন্য জিনিস চুরি করে গড়িতে চাপিয়ে দুষ্কৃতীরা পালায়। ওই গাড়িতে করে রেলের চোরাই মাল পাচার করা হচ্ছে মনে করে আমরা পিছু ধাওয়া করি। তেতুলহেটি গ্রামের কাছে গাড়িটি আটকে দেওয়া হয়। গাড়ির ভিতরে ওই বিস্ফোরক দেখে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি।” সকালে আদ্রায় সেই গাড়ি নিয়ে আসে আরপিএফ। সেখানে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করার পরে দুপুরের দিকে পাড়া থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়। কারণ ওই এলাকা রাজ্য পুলিশের গওয়ায় গাড়ি সমেত বিস্ফোরক রাজ্য পুলিশকে দেওয়ার নিয়ম।

বস্তুত এই ধরনের বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয় পাথর খাদানে। কিন্তু পাড়া থানা এলাকায় পাথর খাদান নেই বললেই চলে। তাই এই প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক কেন এই এলাকায় আনা হয়েছিল, সে ব্যাপারে জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে ধৃতেরা দাবি করেছে, “বাঁকুড়ার শালতোড়া থেকে এই বিস্ফোরক ২০ হাজার টাকায় কিনে তারা সাঁওতালডিহির পাহাড়িগোড়ায় পাহাড় ভাঙার জন্য নিয়ে এসেছিল। এর মধ্যে আড়শা থানার এক ব্যক্তি ওই বিস্ফোরক চাওয়ায় তাকে সে গুলি বিক্রি করতে ভোরে পুরুলিয়া মফস্সল থানার গোলকুণ্ডায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

আরপিএফ জানিয়েছে, বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ওই বিস্ফোরক কিনেছিল ধৃতেরা। অন্য দিকে, আড়শা থানা এলাকায় অতীতে একাধিক মাওবাদী নাশকতার ঘটনা ঘটায় কী কারণে এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সেখানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তা পুলিশকে ভাবাচ্ছে। তবে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি জেলা পুলিশের আধিকারিকরা। তবে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুরো বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

explosives adra
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE