অজয় নদ থেকে চলছে বেআইনি ভাবে বালি তোলা। ভীমগড় সেতুর কাছে ছবিটি তুলেছেন সব্যসাচী ইসলাম।
পঞ্চায়েত ভোটের শুরু থেকেই এই জেলায় তৃণমূলের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল পাড়ুই। যত দিন গড়িয়েছে জেলায় ততই দল গোছাতে শুরু করেছে বিজেপি। বিজেপির উত্থানকে ‘রুখতে’ গিয়ে একাধিক সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। এ বার রাজ্যে শাসক দলের সেই মাথা ব্যাথা বাড়িয়ে দিল সেই পাড়ুই। এই থানার এলাকার একটি স্কুল পরিচালন সমিতির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনে পরাজয়।
যে তৃণমূল এই এলাকার পঞ্চায়েত সমিতি এবং পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল, তারাই কি না এলাকার একটি স্কুল ভোটে প্রার্থীই দিতে পারল না? বিজেপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হল। সন্ত্রাসের অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের পাল্টা দাবি, তৃণমূলের সন্ত্রাস এবং অশান্তির জেরে তারা এলাকায় জনসমর্থন হারাছে। তাই বিজেপি’র বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।
প্রসঙ্গত, পাড়ুই থানা এলাকা রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে উতপ্ত। বিশেষ করে ওই থানার আওতায় থাকা ইলামবাজার ব্লকের মঙ্গলডিহি এবং বাতিকার পঞ্চায়েতের বেশ কিছু গ্রামে তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক অতীতে। তাতে প্রাণ গিয়েছে উভয় দলের কর্মী-সমর্থকদের। আর এলাকায় জন সমর্থন বাড়ছে দেখে বিজেপি উত্থানের জন্য পাখির চোখ করেছে পাড়ুইকে। বিজেপি নেতা উজ্জ্বল মজুমদার বলেন, “এতেই প্রমাণিত হল, মানুষ তৃণমূলকে চায় না। বিকল্প হিসেবে বিজেপিকে দেখছে। অন্য দিকে তৃণমূলের পাড়ুই থানা কমিটির চেয়ারম্যান মুস্তাক হোসেন বলেন, “বিজেপি শান্ত এলাকাকে অশান্ত করছে। সন্ত্রাস, বোমাবাজি করে এলাকায় ক্ষমতা জাহির করছে। জনগণ মেনে নেবে না।”
মঙ্গলডিহি জুনিয়র হাইস্কুলটি ইলামবাজার ব্লকের মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের মধ্যে পড়ে। স্কুল সূত্রের খবর, পরিচালন সমিতিতে স্থায়ী আজীবন সদস্য একজন, পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধি একজন, প্রধান শিক্ষক, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে দু’জন, স্কুল পরিদর্শক এক জন এবং তিন জন অভিভাবক প্রতিনিধি নিয়ে মোট নয় সদস্যের মঙ্গলডিহি জুনিয়ার হাইস্কুলের পরিচালন সমিতি। শুক্রবার ছিল নির্বাচন। নির্ধারিত সময় পর্যন্ত শুধুমাত্র বিজেপি তার তিন অভিভাবককে হাজির করেছে ওই বিদ্যালয়ে। এলাকাটি যেহেতু পাড়ুই থানা এবং ইলামবাজার ব্লক, তাই স্কুল নির্বাচনকে ঘিরে অশান্তির আশঙ্কায় কড়া পুলিশ ব্যবস্থা করেছিল প্রশাসন। মঙ্গলডিহি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রতিনিধি রণজিৎ মুখোপাধ্যায় কোনও প্রার্থী দিতে পারেননি। অন্য দিকে, ওই স্কুলের স্থায়ী সদস্য তথা বিজেপি নেতা উজ্জ্বল গঙ্গোপাধ্যায় তিন সদস্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। রণজিৎবাবুর অভিযোগ, “ওই এলাকায় বিজেপি’র সন্ত্রাসে কোনও অভিভাবক যেতে পারেননি।” উল্টো দিকে বিজেপি নেতা উজ্জ্বলবাবুর দাবি, “পায়ের তলার মাটি সরে যাওয়ায় ভিত্তিহীন অভিযোগ করছে।”
মঙ্গলডিহি জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক অরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “স্কুলে এক পক্ষ হাজির ছিল। তাঁরাই পরিচালন সমিতিতে অভিভাবক প্রতিনিধি হয়েছেন। আজ সোমবার সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা করে পরিচালন সমিতির বৈঠক নিয়ে দিন ধার্য করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy