Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
অভিযোগ অস্বীকার পুলিশ সুপারের

পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ মাখড়ার

গ্রামে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল বের করলেন মাখড়ার বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলি। বুধবার মাখড়া-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারির দাবিতেও সরব হল ওই মিছিল। পাশাপাশি মিছিলের প্ল্যাকার্ডে দেখা গেল নিহত বিজেপি কর্মী শেখ তৌসিফের খুনিদের গ্রেফতারির দাবি। একই সঙ্গে মাখড়ায় শান্তি ফেরানোর দাবিও ওই মিছিলে উঠল।

পাড়ুইয়ের মাখড়া গ্রামে বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলির বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: বিশ্বজিত্‌ রায়চৌধুরী।

পাড়ুইয়ের মাখড়া গ্রামে বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলির বিক্ষোভ মিছিল। ছবি: বিশ্বজিত্‌ রায়চৌধুরী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাড়ুই শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০০:১১
Share: Save:

গ্রামে পুলিশি নির্যাতনের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ মিছিল বের করলেন মাখড়ার বিজেপি সমর্থক পরিবারগুলি। বুধবার মাখড়া-কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-কর্মীদের গ্রেফতারির দাবিতেও সরব হল ওই মিছিল। পাশাপাশি মিছিলের প্ল্যাকার্ডে দেখা গেল নিহত বিজেপি কর্মী শেখ তৌসিফের খুনিদের গ্রেফতারির দাবি। একই সঙ্গে মাখড়ায় শান্তি ফেরানোর দাবিও ওই মিছিলে উঠল।

জেলা পুলিশের কর্তারা যদিও এ দিনের বিক্ষোভকারীদের সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার প্রতিক্রিয়া, “আগাগোড়াই ভিত্তিহীন অভিযোগ। কোনও গ্রামবাসীকেই হেনস্থা করা হচ্ছে না। মাখড়ায় সংঘর্ষের পরে একাধিক এফআইআর হয়েছিল। তাতে একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে। আমরা তো সবাইকে গ্রেফতার করিনি!” তাঁ দাবি, “তদন্তে পুলিশ কারও বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পেলে, তখনই কাউকে গ্রেফতার করা হচ্ছে।” কাউকেই হেনস্থা করা হয়নি বলে তিনি জোর গলায় দাবি করেছেন।

এ দিনের মিছিলে যোগদানকারী মাখড়াবাসীর অভিযোগ, শেখ তৌসিফ খুনে অভিযুক্তেরা অনেরেই প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা গ্রামে এসে ফের হামলা চালানোর হুমকিও দিয়ে চলেছে। বাসিন্দাদের দাবি, এই মর্মে পাড়ুই থানায় বার কয়েক জানানো সত্বেও পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে উল্টে পুলিশ নিরপরাধদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ। ঘটনায় সন্ত্রস্ত নিহত শেখ তৌসিফের পরিবারও। মিছিলে যোগ দিয়ে নিহতের বাবা শেখ শওকত আলি বলেন, “আমার ছেলেকে যারা খুন করল, তারাই মিথ্যা মামলায় আমার গোটা পরিবারকে জড়িয়েছে। পুলিশি গ্রেফতারির আশঙ্কায় ভয়ে ভয়ে দিন কাটাচ্ছি। অথচ ছেলের খুনিরা বুক চিতিয়ে ঘুরে বেরাচ্ছে!” তাঁর দাবি, অবিলম্বে তৌসিফের খুনিদের ধরে পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিক। পুলিশকে নিয়ে একই অভিযোগ রয়েছে দক্ষিণ পাড়ার শেখ আসগর আলি, বাখেরা বিবি, ময়না বিবি, আলিয়া বিবিদেরও। তাঁদের সুরেই বাউরিপাড়ার ঊর্মিলা বাউরি, মিনু বাউরি, অপর্ণা বাউরি, মিঠু বিবি, পারেখা বিবি, মরজিনা বিবিদের অভিযোগ, “কখনও গ্রামে পুলিশ না থাকার খবর পেয়ে দুষ্কৃতীরা ঢুকে বোমাবাজি করছে। আবার কখনও মিথ্যা মামলায় অপরাধীদের ধরার নামে পুলিশ মাঝরাতে বাড়িতে ঢুকে হেনস্থা করছে।” বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের সঙ্গে যোগসাজস করেই পুলিশ প্রকৃত অপরাধীদের না ধরে বিজেপি করা যাবে না বলে তাঁদের শাসানি দিচ্ছে।

পুলিশের মতোই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূলও। দলের পাড়ুই থানা কমিটির চেয়ারম্যান মুস্তাক হোসেনের দাবি, “পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছে। সে বিষয়ে আমাদের কোনও যোগসাজস নেই।” তাঁ পাল্টা অভিযোগ, “ওই গ্রামের বিজেপি আশ্রিত কিছু দুষ্কৃতীদের জন্য আমাদের দলের বহু কর্মী-সমর্থক আজও গ্রামে ঢুকতে পারছেন না।” বিজেপি যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বহু চেষ্টা করেও প্রতিক্রিয়া মেলেনি বিজেপি-র জেলা সভাপতি দুধকুমার মণ্ডলের। তবে, দলের বোলপুর ব্লক সভাপতি বলাই চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “ওই এলাকায় পুলিশ বেছে বেছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকদেরই গ্রেফতার করছে। আমাদেরই বহু কর্মী-সমর্থক গ্রামছাড়া। পুলিশ-তৃণমূলের যোগসাজসেই এটা হচ্ছে।” অন্য দিকে, এ দিনই মাখড়ার তৃণমূল কর্মী মোজাম্মেল হক খুনের ঘটনায় গ্রাম লাগোয়া বেলপাতা গ্রামে থেকে শেখ রকিম নামে এক বিজেপি সমর্থককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সিউড়ি সিজেএম ইন্দ্রনীল চট্টোপাধ্যায় ধৃতকে চার দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

অন্য বিষয়গুলি:

parui makhra police harassment tmc bjp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE