প্রয়োজনীয় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই চলছে বালি তোলা। তার উপর সেই বালি গ্রামবাসীদের জমির উপর দিয়ে ট্রাক্টরে করে পাচারও করা হচ্ছে। রামপুরহাট থানার খড়িডাঙা সংলগ্ন ব্রাহ্মণী নদীর উপর নারায়ণপুরের কলকলি ঘাটকে ঘিরে এলাকার দুই বালি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে এমনটাই অভিযোগ তুললেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই অবৈধ কার্যকলাপ বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে রামপুরহাট নিশ্চিন্তপুরে অবস্থিত সেচ দফতরের ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানালের রেভিনিউ অফিসারের কাছে ঝাড়খণ্ডের পাখুড়িয়া থানার নাগডুম, রাজবাড়ি এবং রামপুরহাট থানার রানিগ্রাম এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শুধু তাই-ই নয়, তাঁরা অভিযুক্ত দুই বালি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ-প্রশাসনের দ্বারস্থও হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, নারায়ণপুরের ওই কলকলি ঘাট থেকে প্রতি দিন ৫০টিরও বেশি ট্রাক্টরে করে বালি তোলা হচ্ছে। রাজবাড়ির বাসিন্দা দিলীপ মুর্মু, চুন্ডা মুর্মু, নাগডুম গ্রামের বাসিন্দা নির্মলচন্দ্র হাঁসদা, রানিগ্রামের শিবধন হেমব্রমদের অভিযোগ, এই গোটা প্রক্রিয়াটাই হচ্ছে সরকারি কর ফাঁকি দিয়ে। নদী থেকে বালি চুরি করে রানিগ্রাম সংলগ্ন জমির উপর বেআইনি ভাবে রীতিমতো রাস্তা এবং একটি ছোট ঘর তৈরি করে তা পাচার করা হচ্ছে বলে তাঁদের দাবি। স্থানীয় খড়িডাঙা গ্রামের বাসিন্দা তপন মাহাতো এবং নারায়ণপুরের কার্তিক মণ্ডল নামে দুই ব্যবসায়ীর নেতৃত্বেই গোটা অবৈধ প্রক্রিয়াটি চলছে বলে ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ। এ দিকে, সম্প্রতিই রামপুরহাট পুরসভা এলাকার বাসিন্দা প্রহ্লাদ হালদার-সহ তাঁর পরিবারের আরও অনেকে রামপুরহাটের মহকুমাশাসক, জেলাশাসক এবং সেচ দফতরের আধিকারিকদের কাছে কার্তিকবাবুর বিরুদ্ধে চাষজমি ধ্বংস করে অবৈধ ভাবে বালি তোলার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগই অস্বীকার করেছেন ওই দুই ব্যবসায়ী। তপনবাবুর বক্তব্য, “সরকারি অনুমোদন নিয়ে বৈধ ভাবে বালিঘাট থেকে বালি তুলছি। সেই বালি নিজের কেনা জমির উপর দিয়ে রাস্তা তৈরি করে ট্রাক্টরে করে বালি নিয়ে যাচ্ছি।” তাঁর এমনও দাবি, পুলিশ-প্রশাসনের কাছে এ ব্যাপারে তিনি সমস্ত কাগজপত্র জমা করেছেন। উল্টে তাঁর অভিযোগ, “বিশেষ ফাওদা লোটার জন্যই একাংশের বাসিন্দা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।” অন্য দিকে, তিনি বর্তমানে কোনও বালি তোলার কাজে যুক্ত নন বলে দাবি করেছেন কার্তিকবাবু। তবে, তাঁর দাবি, “যে রাস্তা নিয়ে অভিযোগ করা হয়েছে, তা আমার বাপ-ঠাকুরদার জমির উপর তৈরি করা হয়েছে। ওই রাস্তা কে ব্যবহার করবেন, তা ঠিক করার অধিকার একমাত্র আমারই রয়েছে।”
এ দিকে, গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছেন সেচ দফতরের আধিকারিকেরা। এ নিয়ে যোগাযোগ করা হলে দফতরের ময়ূরাক্ষী উত্তর ক্যানালের রেভেনিউ অফিসার সৌমাভ ভট্টাচার্য বলেন, “এ ব্যাপারে আমার বলার কোনও এক্তিয়ার নেই। যা বলার দফতরের নির্বাহী আধিকারিক বলবেন।” যদিও সেই নির্বাহী আধিকারিক সুজিত কোনারের বক্তব্য, “এ ব্যাপারে আমি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy