বুধবার ১০টা বাজার আগেই গেটের পুলিশকে সরকারি পরিচয়পত্র দেখিয়ে নবান্নে ঢুকেছিলেন সকলে, আর পাঁচটা দিনের মতোই। সকলের কাঁধে ঝোলা ব্যাগ। কিন্তু সেই ব্যাগে যে ধর্মঘটের সমর্থনে পোস্টার নিয়ে অফিসে ঢুকেছেন কো-অর্ডিনেশনের কর্মী-সমর্থকেরা, ঘুণাক্ষরে তা টের পায়নি পুলিশ। বুঝতে পারল বেলা দেড়টা নাগাদ, টিফিনের সময়, যখন ব্যাগ থেকে পোস্টার বার করে স্লোগান দিতে দিতে নবান্ন চত্বরে ঘুরলেন জনা চল্লিশেক পুরুষ-মহিলা। এর পরেই শুরু হয় পুলিশের দৌড়োদৌড়ি। হাঁকডাক শুরু করেন পুলিশকর্তারা। ১০ মিনিট পরে আন্দোলনকারীদের ধাক্কা দিতে দিতে নবান্নের বাইরে বার করে গেট বন্ধ করে দেয় পুলিশ।
কিন্তু যে ভবন সিসিটিভি ও পুলিশ দিয়ে মোড়া, করিডরে অচেনা কাউকে ঘুরতে দেখলেই কন্ট্রোল রুম থেকে সতর্কবার্তা আসে কর্তব্যরত সাদা পোশাকের পুলিশের কাছে, সেখানে কী ভাবে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে নবান্নে বিক্ষোভ দেখাল কো-অর্ডিনেশন, সেই প্রশ্ন উঠেছে। কার্যত, মহাকরণ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস নবান্নে আসার পরে কর্মী বিক্ষোভের আঁচই পড়েনি ওই ভবনে। কোনও বিক্ষোভ যাতে দানা না বাঁধে তার জন্য নবান্নের চারদিকে দু’কিলোমিটার এলাকা ১৪৪ ধারার আওতায় আনে পুলিশ। শুধু তাই নয়, মহাকরণে থাকাকালীন সমস্ত ইউনিয়ন অফিস ভেঙে দিয়েছিল প্রশাসন। আর নবান্নে তাদের ঘরই দেওয়া হয়নি। তা সত্ত্বেও যে ভাবে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে নবান্নের ভিতরে বিক্ষোভ দেখাল কো-অর্ডিনেশন, তা নিয়ে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের মধ্যে চাপান-উতোর শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্য পুলিশের একাংশের বক্তব্য, নবান্নের ভিতরের নিরাপত্তা দেখে কলকাতা পুলিশ। বিক্ষোভের দায় তাদেরই। আর কলকাতা পুলিশের একাংশ বলছে, নবান্নের বাইরের নিরাপত্তা দেখে রাজ্য পুলিশ। তারাই তো বিক্ষোভকারীদের আটকাতে পারেনি।
পুলিশ জেনেছে, অন্য সরকারি অফিসে যাঁরা চাকরি করেন, কো-অর্ডিনেশন কমিটির এমন কিছু সদস্যও সরকারি পরিচয়পত্র দেখিয়ে নবান্নে ঢোকেন। ১টা থেকে একতলায় জড়ো হন। দেড়টা বাজতেই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মনোজকান্তি গুহের নেতৃত্বে বেশ কিছু মহিলা ও পুরুষ গলায় পোস্টার ঝুলিয়ে ধর্মঘটের সমর্থনে স্লোগান দিতে থাকেন। পুলিশ তাঁদের ঘিরে ফেলে। শুরু হয় ধ্বস্তাধ্বস্তি। এসি-ওসিরা ওয়াকি-টকিতে বাড়তি মহিলা পুলিশ চাইতে থাকেন। এর পরে বিক্ষোভকারীদের বাইরে নিয়ে যায় পুলিশ। মনোজবাবুরা ফুটপাতের ধারে বসে পড়েন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy