Advertisement
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
RG kar Incident

এ বার অন্য পুলিশের অন্য দৌড়! শিলিগুড়িতে মমতার ছবি পোড়ানোর চেষ্টা বিজেপির, ছিনিয়ে নিয়ে ছুট!

সিজিও কমপ্লেক্সে কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্তের দৌড়ে পালানোর দৃশ্য শোরগোল ফেলেছিল মঙ্গলবার। প্রেক্ষিত খানিক ভিন্ন হলেও বুধবার আর এক পুলিশকর্মীর রুদ্ধশ্বাস দৌড় দেখল শিলিগুড়িও।

(বাঁ দিকে) শিলিগুড়ির পুলিশকর্মীর দৌড়। আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্ত (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শিলিগুড়ির পুলিশকর্মীর দৌড়। আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্ত (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৪ ১৮:০৩
Share: Save:

সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে কলকাতা পুলিশের এএসআই অনুপ দত্তের দৌড়ে পালানোর দৃশ্য শোরগোল ফেলেছিল মঙ্গলবার। প্রেক্ষিত খানিক ভিন্ন হলেও বুধবার আর এক পুলিশকর্মীর রুদ্ধশ্বাস দৌড় দেখল শিলিগুড়ি।

আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ-মিছিলে বিজেপির ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র সদস্যেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি পোড়ানোর চেষ্টা করায় তাঁদের হাত থেকে ওই ছবি ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দিলেন সেই পুলিশকর্মী! ওই ঘটনায় আরও উত্তেজনা ছড়াল মিছিল ঘিরে। এবিভিপির অভিযোগ, পুলিশ যে পুরোপুরি শাসকদল তৃণমূলের ‘দাস’ হয়ে গিয়েছে, এই ঘটনাই তার প্রমাণ। ঘটনাচক্রে, মমতাই এখন রাজ্যের পুলিশমন্ত্রী।

আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার শিলিগুড়ির কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়াম থেকে মহকুমাশাসকের দফতর পর্যন্ত মিছিলের ডাক দিয়েছিল এবিভিপি। সেই মতো দুপুরে মিছিল শুরু হয়। সফদর হাসমি চক, হিলকার্ড রোড হয়ে মহানন্দা সেতু পেরিয়ে মহকুমাশাসকের দফতর পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবেই মিছিল হয়। এর পর রাস্তায় অবস্থান-বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন এবিভিপি-র সমর্থকেরা। পুলিশের অনুমতিতে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপিও জমা দেয়। তার পরেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায়। ব্যারিকেড ভেঙে এবিভিপির সমর্থকেরা এগোনোর চেষ্টা করলে ধস্তাধস্তি বাধে পুলিশের সঙ্গে।

এর মাঝে রাস্তা অবরোধ করে সভাও করে এবিভিপি। সেই সভা চলাকালীনই মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতার একটি ছবিতে আগুন দিতে যান কয়েক জন। তখনই সাধারণ পোশাকের এক পুলিশকর্মী ভিড়ের মধ্যে থেকে আচমকা বেরিয়ে এসে মুখ্যমন্ত্রীর ছবিটি বিক্ষোভকারীদের হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দৌড় দেন! তাঁর পিছু পিছু দৌড়ন এবিভিপি-র সমর্থকেরা। কিন্তু তার আগেই সেই পুলিশকর্মী ছুটে গিয়ে ব্যারিকেডের ও পারে থাকা অন্য পুলিশকর্মীদের হাতে মমতার দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া ছবিটি তুলে দেন। এতে পরিস্থিতি আরও উত্তাল হয়। কয়েক জন মহিলা এবিভিপি সমর্থক আবার ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ফেরত চাইতে থাকেন তাঁরা। এক জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘ছবিটা ছিনিয়ে নিলেন কেন? ওটা ফেরত দিন এখনই!’’

এবিভিপির সাধারণ সম্পাদক শিবাঙ্গী খারবেল বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে পারব না? যখন আরজি করে প্রমাণ লোপাট হচ্ছিল, তখন পুলিশ কোথায় ছিল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাস্তায় নেমে নাটক করছেন। কাদের কাছ থেকে বিচার আর নিরাপত্তা চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী? এ বার মানুষ রাস্তায় নামছে। আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করে আসছিলাম। পুলিশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ফিরিয়ে দিক আমাদের। আমরা সেটা জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে চলে যাব।’’

পুলিশ অবশ্য শেষ পর্যন্ত সেই ছবি বিক্ষোভকারীদের ফিরিয়ে দেয়নি। পরে মুখ্যমন্ত্রীর অন্য একটি ছবি পোড়ান এবিভিপি সমর্থকেরা। মমতার কুশপুতুলও পোড়ানো হয়। শিবাঙ্গী বলেন, ‘‘মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর আমলেই মহিলারা সুরক্ষিত নন। ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। রাষ্ট্রপতি শাসনের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’

পাল্টা দার্জিলিং জেলা তৃণমূল মুখপাত্র বেদব্রত দত্ত বলেন, ‘‘দেশের বিভিন্ন রাজ্যেই মহিলাদের উপর নৃশংস ঘটনা ঘটতে দেখেছি। যা ঘটেছে, তা ন্যক্কারজনক। আমরাও বিচার চাই। কিন্তু বিরোধীদের আন্দোলন এখন বিচারের বদলে মুখ্যমন্ত্রী-বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এটা বাংলার মাটি বলেই সম্ভব। ভারতের অন্য কোনও রাজ্যে এটা সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE