প্রতীকী ছবি।
সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা। রাস্তায় পুলিশের নজরদারিও কম নেই। কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরও অতি মাত্রায় সজাগ। তবুও খামতি মেটে না।
ফি বছর গড়ে উত্তর পূর্ব ভারতে কেন্দ্র ও রাজ্যের পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার অভিযানে অন্তত ৫০০ কেজি সোনা উদ্ধার হয়। অথচ, নানা তদন্তকারী সংস্থার অফিসার-কর্মীদের একাংশের একান্ত আলাপচারিতায় কান পাতলে শোনা যায়, যে পরিমাণ সোনার চোরাকারবার হচ্ছে, তার ২৫ শতাংশের বেশি ধরা যাচ্ছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আইনি ভাবে সোনার কারবার যাঁরা করেন, তাঁদের অনেকেও মনে করেন, যে পরিমাণ সোনা উদ্ধার হচ্ছে তা মোট পাচারের বড়জোর ২৫ শতাংশ হতে পারে।
যেমন, কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগের শিলিগুড়ি শাখাই চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে এখনও অবধি প্রায় ১০০ কেজি সোনা উদ্ধার করেছে। ধরাও পড়েছে অন্তত ১৬ জন। তাতে কি! গোয়েন্দাদের কয়েকজন জানান, চোরাকারবারিদের নেটওয়ার্ক এতটাই শক্তিশালী যে, তাতে অনেক সময়ে দুঁদে অফিসারেরও মাথা গলানোর উপায় থাকে না।
সেই ‘নেটওয়ার্ক’-এর আওতায় পুলিশ-প্রশাসন-রাজনীতিকদের রাখার চেষ্টা চলে। কোথাও নানা স্তরে বখরা ভাগাভাগির সুবাদে পাচারকারীরা দিনের পর দিন বহাল তবিয়তে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কোথাও সেই ‘নেটওয়ার্ক’ সামান্য নড়বড়ে হলেই বমাল ধরা পড়ছেন চোরাকারবারিরা।
কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা বিভাগ সূত্রেই জানা গিয়েছে, যে হেতু চিন সহ কয়েকটি দেশে সোনার আমদানি শুল্ক কম, তাই সেখান থেকে সোনা চোরাপথে আনা হয় ভারতে। অপেক্ষাকৃত ভাবে ভারতীয়দের একাংশের মধ্যে সোনার প্রতি আকর্ষণ বেশি। বিদেশে থেকে চোরাপথ আনা খাঁটি সোনার সঙ্গে খাদ মিশিয়ে লাভের অঙ্কও বাড়ে বলে ব্যবসায়ীরাও কয়েকজন জানিয়েছেন। গোয়েন্দা সূত্রেই জানা গিয়েছে, পাচারকারীরা যে পথে সোনা নিয়ে গন্তব্যে যাবে, সেখানকার সব থানা, ‘নাকা চেকিং’, সেনা গোয়েন্দারা কোন এলাকায় বেশি সক্রিয় সেই সব খবর আগাম সংগ্রহ করে। প্রাথমিক ভাবে নজরদারি কখন ঢিলেঢালা থাকে, সে সময়ে পাচারের হিসেব কষা হয়।
গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি, সেই সঙ্গে স্থানীয় দুষ্কৃতীদের একাংশের যোগসাজশে দুর্নীতিতে অভিযুক্ত অফিসার-কর্মীদের তালিকা তৈরি করে তাঁরা। সেই তালিকা ধরে আমদানি-রফতানিকারকের লাইসেন্স জোগাড় করে আলাপ জমায় চোরাকারবারিদের ‘এজেন্ট’। এর পরেই মাসিক বন্দোবস্ত পাকা হলে কবে, কোন পথে তা নিয়ে যাওয়া হবে সেই ‘নীল-নকশা’ তৈরি হয়ে যায়। এমন অন্তত ৮টি আন্তর্জাতিক সোনা পাচার চক্রের জাল উত্তরবঙ্গের সীমান্ত এলাকায় ছড়িয়ে রয়েছে বলে গোয়েন্দাদের আশঙ্কা। তার বাইরেও নতুন পাচারকারী দল মাথাচাড়া দিচ্ছে বলেও গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন। এঁদের জাল ছড়িয়ে রয়েছে মায়াম্মার, চিন, ভুটান বাংলাদেশ, দুবাই, ব্যাঙ্ককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy