প্রতিমা: নবদ্বীপের একটি পুজোয়। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
দুর্গা, কালী বা জগদ্ধাত্রী পুজোর মতো রাসেও ভিড় রুখতে কড়া পদক্ষেপ করল প্রশাসন। রাজকীয় প্রশ্রয়ে বেড়ে ওঠা প্রাচীন রাসোৎসবের এক ‘দামাল’ উদ্যাপনে অভ্যস্ত নবদ্বীপের মানুষ। তবে অতিমারির কালে এ বারে, উদ্দাম রাসের পায়ে পায়ে এ বার প্রশাসনের ‘বেড়ি’। করোনা আবহে রাসের চেনা ছবি অনেকটাই ফিকে। আদালতের নির্দেশে দুর্গা, কালী বা জগদ্ধাত্রী পুজোর মতো প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে এ বছর রাস পালিত হচ্ছে নবদ্বীপে।
গবেষকদের মতে, রাস পূর্ণিমায় মাটির মূর্তি গড়ে বিচিত্র দেবদেবী পুজো নদিয়ারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের পৃষ্ঠপোষকতায় ১৭৫২-৫৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী কোনও সময় নবদ্বীপে এই রাসের শুরু হয়। সেই হিসাবে নবদ্বীপের রাস তিনটি শতক ছুঁয়ে ফেলেছে। নবদ্বীপের রাস উৎসব ঘিরে তৈরি হয়েছে নানা প্রথা-প্রকরণ, রীতিনীতি। তবে করোনা কালে ভিড় এড়াতে তাতে লাগাম টানছে পুলিশ-প্রশাসন।
পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বার রাসে নবদ্বীপে কমবেশি ৩৬৮টি প্রতিমা পুজো হচ্ছে। এর মধ্যে নবদ্বীপ পুর এলাকায় হচ্ছে ২৯৪টি পুজো। অনুমোদিত পুজোর সংখ্যা ২১৬টি। নবদ্বীপ শহর সংলগ্ন বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় ৭৪টি রাসের প্রতিমা পুজো হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পুজো বাবলারিতে। সেখানে প্রতিমার সংখ্যা ৩০টি। মাজদিয়া-পানশিলা পঞ্চায়েতে ১৯টি, মহিশুরা পঞ্চায়েতে ১২টি, চরমাজদিয়া-চরব্রহ্মনগর পঞ্চায়েতে ৯টি, স্বরূপগঞ্জ পঞ্চায়েতে ৪টি পুজো হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের নির্দেশ মতো রাস বারোয়ারিগুলির জন্য জারি হয়েছে একাধিক নির্দেশিকা। নবদ্বীপের রাসের বেশ কিছু প্রচলিত প্রথাও এ বছরের জন্য স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল হয়েছে রাসের নবমীর শোভাযাত্রা, আড়ংয়ের শোভাযাত্রা। স্থগিত থাকছে পুরসভা পরিচালিত রাসের কার্নিভালও। তবে রাসে বাজনা নিয়ে কিছুটা ছাড় দিয়েছে প্রশাসন। আগে বলা হয়েছিল সর্বোচ্চ ছ’টি পর্যন্ত ঢাক এক একটি বারোয়ারি ব্যবহার করতে পারবে। পরিবর্তিত নিয়মে জানানো হয়েছে রাসে ঢোল-সানাই বা ডগরের ব্যবহার চলতে পারে। বাজনাদারের সংখ্যা হবে সর্বোচ্চ ছয়। ক্যাসিও-ব্যাঞ্জো-তাসা এবং ডিজে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। মণ্ডপ থেকে দূরে ব্যারিকেড করে তার মধ্যে বাজনা বাজাতে হবে। বাজনা নিয়ে রাস্তায় ঘোরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পুলিশ ও রাস বারোয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার থেকে নবদ্বীপ শহরে যানবাহনের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত হবে। শহরের পাঁচটি প্রবেশপথ ‘নো এন্ট্রি’ করা হয়েছে। নবদ্বীপ পুরপ্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন বিমানকৃষ্ণ সাহা বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে সব রকম সতর্কতা নিতে বলা হয়েছে রাসের উদ্যোক্তাদের। অনুমান লোক সমাগম এ বার কম হবে। পুরসভার পক্ষ থেকে চারটি অস্থায়ী যাত্রী শিবির এবং কয়েকটি স্বাস্থ্য শিবির করা হয়েছে।”
নবদ্বাপের আইসি কল্লোলকুমার ঘোষ বলেন, “প্রায় এক মাস ধরে রাস নিয়ে দফায় দফায় আলোচনা হয়েছে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে। কিছু ছাড়ও দেওয়া হয়েছে। এর পর যদি কেউ নিয়মভাঙার চেষ্টা করেন, তা হলে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেবে। করোনা কালে কোনও ভাবেই আদালতের নির্দেশের বাইরে যাওয়া যাবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy