— প্রতীকী ছবি।
পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে নতুন জনস্বার্থ মামলা। প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তর ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হয়। জনস্বার্থ মামলা দু’টি করেন উজ্জ্বল ত্রিবেদী এবং ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ নামে একটি সংগঠন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বুধবার।
মামলাকারীদের আবেদন— যাঁরা মনোনয়ন দিতে পারেননি, তাঁদের পুনরায় মনোনয়ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এত কম সময়ে কী করে ৭৬ হাজার মনোনয়ন দাখিল হল তা নিয়ে তদন্ত করা হোক। এর পাশাপাশি, মিথ্যা মামলা থেকে বিরোধী প্রার্থীদের মুক্তি। এবং নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মৃত্যুর ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের হস্তক্ষেপে তদন্ত হোক।
জনস্বার্থ মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং শামিম আহমেদের সওয়াল, রাজ্যের নানা জায়গায় মনোনয়ন জমা দেওয়ায় বাধা দেওয়া হয়েছে। দাসপুরে পুলিশ এক মহিলাকে মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে বাধ্য করেছে। হাই কোর্টের নির্দেশে এসকর্ট করে নিয়ে গিয়েও সময়ে মনোনয়ন জমা দেওয়া যায়নি বলে অভিযোগ মামলাকারীদের। একটি মামলায় প্রার্থীর নথিবিকৃতির অভিযোগ রয়েছে। আইজীবীদের সওয়াল, পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, এই ভোটে রাজ্য প্রশাসনের হাতে অনেক ক্ষমতা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকা যথাযথ নয়। যাঁরা দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না, তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হোক। ওই সব এলাকায় নতুন করে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করা হোক। আবার সুযোগ দেওয়া হোক যাঁরা মনোনয়ন জমা দিতে পারেননি, তাঁদের। আট ঘণ্টায় ৭৬ হাজার মনোনয়ন দাখিল করা নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, তৃণমূল রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে এমন কাজ করেছে। এই প্রসঙ্গে দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলায় কমিশনের আইনজীবীর সওয়াল, ‘‘এই মামলায় বলা হয়েছে, শেষ দিনে বিশাল সংখ্যক মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই বিষয়গুলি সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা। পুরো মামলাটি করা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের খবরের উপর ভিত্তি করে।’’ পাশাপাশি আইনজীবীর সংযোজন, ‘‘শাসকদল যদি স্বল্প সময়ে বেশি মনোনয়ন জমা দেয় সেখানে কমিশনের কী করার আছে? এই বিষয়টি কমিশনের বোধগম্য নয়। এখানে কী ভাবে নির্বাচন বাতিলের প্রসঙ্গ উঠতে পারে!’’
প্রধান বিচারপতি জানান, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ২০১৮ সালের থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহারের হার ৯.১ শতাংশ কম। তার পরেই আইনজীবী বিকাশরঞ্জনের সওয়াল, কেন ১০ শতাংশ আসনেও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হবে একটি দল? কেন ১০০ শতাংশ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আশা করা যাবে না? বিদেশ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এটাও কি ঠিক আছে? প্রধান বিচারপতি জানতে চান, কোথায় এটা হয়েছে? বিকাশ জবাব দেন, ‘‘মিনাখাঁ।’’
এর পরেই বলতে ওঠেন কমিশনের আইনজীবী জিষ্ণু সাহা। তিনি জানান, কিছু পরিস্থিতি বা ঘটনার জন্য আদালত কমিশনকে ভর্ৎসনা করেছে। কমিশন অনেকাংশে ওই পরিস্থিতির প্রতিকার করেছে। মনোনয়নের শেষ দিনে আদালতের হস্তক্ষেপের জন্য অনেককে সময় দেওয়া হয়েছে। চোপড়ার বিষয় নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাটি মনোনয়ন কেন্দ্র থেকে খানিকটা দূরে হয়েছে। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এমন কোনও ঘটনা নেই যেখানে কমিশন জেনেও চুপ করে রয়েছে।’’
এর পাশাপাশি কমিশনের আইনজীবী জানান, মামলায় বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনার দায়িত্ব নিয়েই তড়িঘড়ি ভোট ঘোষণা করেছেন। এটি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করেই করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ২৫ অগস্টের মধ্যে নির্বাচন করা দরকার ছিল। সামগ্রিক ভাবে সমস্ত অভিযোগ নিয়ে কমিশনের আইনজীবী জানান, যা যা অভিযোগ করা হয়েছে সবই পুরনো। নতুন বোতলে পুরনো মদ। খুনের অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছেন। নির্দিষ্ট করে কোনও ঘটনা খুঁজে পাওয়া যায়নি যে মনোনয়ন দাখিল করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। কে, কারা, কোথায়, কেন বাধা দিয়েছে সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে চলেছি। অশান্তির কারণে তৃণমূলের সদস্যকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। এর পরেও কোর্ট যদি তদন্তের নির্দেশ দেয়, আপত্তি নেই। আগামী বুধবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy